সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি আছে। আছে যুদ্ধজয়ের দৃঢ় অঙ্গীকার। তবে দলে কোনও সেনাপতি নেই। বাড়তি ফোকাস দেওয়া হচ্ছে না কোনও বিশেষ ব্যক্তিকে। তাই উনিশের লড়াই প্রধানমন্ত্রী পদে আরেকজনকে আনা নয়। লক্ষ্য – বর্তমান সরকারের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া। লক্ষ্য – মোদি, শাহ জুটিকে পরাস্ত করা। লক্ষ্য – দেশে ‘গণতন্ত্রের’ পুনঃপ্রতিষ্ঠা। শনিবার, ব্রিগেডে তৃণমূলের মহাসভায় আঞ্চলিক নেতাদের বক্তব্যে একাধিকবার সেই বার্তাই উঠে এল।
তৃণমূল সুপ্রিমো তথা এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এক মঞ্চে সব বিরোধীদের সমবেত করার কাজ শুরু হতেই উঠেছিল মোক্ষম একটি প্রশ্ন। এতগুলি দল একত্রিত, প্রতিটি দলের সুপ্রিমোই নিজের নিজের জায়গায় অত্যন্ত ক্ষমতাশালী। সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে কাকে তুলে ধরা হবে? উত্তর মেলেনি তখনও। আজ ব্রিগেডে বিরোধীদের এত বড় সভা থেকেই মিলল না উত্তর। সকলেই বিষয়টি এড়িয়ে প্রায় এক সুরে জানালেন – এখনই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঠিক করার সময় আসেনি। আপাতত লক্ষ্য – কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন সরকারকে পরাস্ত করে নতুন সরকার গঠন।
[বিজেপি বিরোধী ভোট বিভাজন রুখতে হবে, মমতার মঞ্চে বার্তা কংগ্রেস নেতার]
আজ এনিয়ে সর্বপ্রথম মুখ খোলেন এনসি নেতা তথা জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা। ব্রিগেডের মঞ্চে ভাষণ দিতে গিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তা পরে ঠিক করা যাবে। এখন আমাদের সবাইকে একজোট হয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে গদিচ্যূত করতে হবে।’ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্য, ‘২০১৯এর ভোট প্রধানমন্ত্রী পাওয়ার জন্য নয়। মোদি, শাহকে তাড়ানোর জন্য নির্বাচন। আমরা একজোট হয়ে সেই কাজ করার লক্ষ্যে এগোচ্ছি।’ সহমত পোষণ করেন অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী, টিডিপি সুপ্রিমো চন্দ্রবাবু নাইডু। তাঁর বক্তব্য, ‘কোনও প্রধানমন্ত্রীকে বাছতে নয়। ২০১৯এ মোদি, শাহদের দিল্লি থেকে সরাতে ভোটে অংশগ্রহণ করুন। ওঁদের কোনওভাবেই ফিরিয়ে আনবেন না।’ আর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবেগৌড়া স্থির করে দিলেন লড়াইয়ের মূল মন্ত্র। তাঁর কথায়, ‘আমি নিজে যৌথ সরকারে কাজ করেছি। এবারও আমাদের লক্ষ্য একটি স্থায়ী সরকার গঠন। যৌথ সরকার মানেই অস্থায়ী নয়। ভোটের পর সকলে মিলে বসে প্রধানমন্ত্রী ঠিক করা যাবে। এই সরকারই সবচেয়ে মজবুত হবে।’
নেতারা যে যাই বার্তা দিন, প্রধানমন্ত্রী পদ প্রাপ্তির জন্য প্রতিযোগিতা এদেশের রাজনীতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে। দিন কয়েক আগে চন্দ্রবাবু নাইডু নিজেই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। আবার তৃণমূল সুপ্রিমোকে ভাবী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরার ব্যক্তিও কম নেই। এ প্রসঙ্গ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও বহুবার এড়ানোর চেষ্টা করেছেন। তবে ভাসিয়েও দিয়েছেন দু, একটি নাম। দেবেগৌড়া, ফারুক আবদুল্লার নাম শোনা গিয়েছে তাঁর গলায়। সত্যিই যদি বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে তৃণমূল সুপ্রিমোর উদ্যোগ সফল হয়, এনডিএ-কে ক্ষমতাচ্যুত করে একজোটে কেন্দ্রে সরকার তৈরির পথে হাঁটেন বিরোধীরা, তাহলে প্রধানমন্ত্রী বেছে নেওয়ার রাস্তা যে খুব মসৃণ হবে না – জাতীয় এবং আঞ্চলিক রাজনীতির অল্পবিস্তর খোঁজখবর রাখা মানুষমাত্রই বুঝবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.