ছবি: প্রতীকী
স্টাফ রিপোর্টার, বারাসত: এতদিন ট্রেনে বাসেই দেখা যেত ভুয়ো চাকরির পোস্টার। লোক ঠকানোর এই কারবার এবার আরও আধুনিক ধাঁচে ময়দানে নেমেছে। অন্য সব কিছুর মতো এই প্রতারণা ব্যবসাও পা দিয়েছে ডিজিটাল দুনিয়ায়। ওএলএক্সে মেট্রো রেল, ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স-সহ নানা প্রলোভনের চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পেতে কয়েক শো যুবক-যুবতীর লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে এক ভুঁইফোড় সংস্থা। তবে আটঘাট বেঁধে ময়দানে নামলেও পুলিশের নজর এড়াতে পারেনি তারা। পুলিশের জালে ধরা পড়েছে এই প্রতারণা চক্রের মূল পান্ডা-সহ বাকি চক্রীরা।
[প্রতিযোগিতার মাঝেই চুরি গেল গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়ার ল্যাপটপ, তদন্তে পুলিশ]
মধ্যমগ্রামের রবীন্দ্রপল্লিতে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে এই প্রতারণার ব্যবসা ‘অফিস’ খুলেছিল চক্রটি। যার নাম জব পয়েন্ট। পুলিশের নজরে না আসার জন্য আঁটোসাঁটো ব্যবস্থাও ছিল। ‘অফিস’ এর বাইরে কোনও সাইনবোর্ড বা ব্যানার ছিল না। গোটা ব্যবসাটি তারা চালাতো অনলাইন আর ফোনের মাধ্যমে। ওএলএক্সে বিজ্ঞাপন দিয়ে চাকরি প্রার্থীদের জোগাড় করত এই সংস্থা। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, মেট্রো রেল, ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স, সিইএসই-র মতো সংস্থায় চাকরি দেওয়ার বিজ্ঞাপন দিয়েছিল তারা। যা দেখে কয়েক শো যুবক-যুবতী তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। চাকরি দেওয়ার নামে প্রথমে তাঁদের থেকে ৩০০ টাকা করে রেজিস্ট্রেশন ফি নিত এই প্রতারকরা। বলা হত, এক সপ্তাহ পর চাকরির জন্য ফোন করা হবে তাঁদের। এক সপ্তাহ পর ফোন করা হত ঠিকই, তবে আরও টাকা দেওয়ার জন্য। শনিবার রাতে ওই ‘অফিস’-এ হানা দিয়ে জব পয়েন্টের মূল পান্ডা রাজু দাস-সহ তার তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের জেরা করে জানা যায়, দ্বিতীয়বার ফোন করে চাকরি প্রার্থীদের ডেকে তিন থেকে পনেরো হাজার টাকা নিত তারা। ওই ‘অফিস’-এর থেকে পুলিশ যে নথি উদ্ধার করেছে তাতে, প্রায় দু’শো যুবক-যুবতীর নাম পাওয়া গিয়েছে। প্রত্যেকের থেকে কয়েক হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে এই চক্র।
[ফের এটিএম জালিয়াতি, গড়ফায় মহিলার অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও ৪ লক্ষ টাকা]
পুলিশ সূত্রে খবর, খুব সতর্কভাবে গোটা অপারেশনটি চালাত এই চক্রটি। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেখে চাকরি প্রার্থীরা ফোন করলে প্রথমে তাঁদের ‘অফিস’-এর ঠিকানা দেওয়া হত না। বলা হত মধ্যমগ্রাম স্টেশনে অপেক্ষা করতে। এই চক্রের কোনও কর্মী সেখানে গিয়ে দূর থেকে আগে তাঁদের পর্যবেক্ষণ করত। নিরাপদ বুঝলে তাঁদের ‘অফিস’-এ নিয়ে যেত তারা।
সম্প্রতি এক তরুণী একটি নামজাদা গয়নার শো-রুমে চাকরির জন্য কয়েক হাজার টাকা দিয়েছিলেন জব পয়েন্টকে। দীর্ঘদিন পার হওয়ার পর চাকরি না পেয়ে বুঝতে পারেন যে তিনি প্রতারিত হয়েছেন। এরপরই পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি। রাজু দাস-সহ চার প্রতারককে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করে রানাঘাটের এক যুবকের নাম পায় পুলিশ। রবিবার অতনু বন্দ্যোপাধ্যায় নামে ওই যুবককেও রানাঘাট থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
[সিনেমার কায়দায় গঙ্গায় স্টান্টবাজি, মর্মান্তিক পরিণতি যুবকের]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.