অভিরূপ দাস: রোগীর পরিবারের হাতে লাঞ্ছিত ইন্টার্ন। অভিযোগ রোগীর পরিবারকে মদত দিয়েছেন হাসপাতালেরই রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি ডা. নির্মল মাজি। এ ঘটনার প্রতিবাদে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের (Calcutta Medical College) অধ্যক্ষ মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি দিয়েছেন হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। চিঠি দেওয়া হয়েছে বিভাগীয় প্রধানকেও।
ঘটনাটি গত ২৪ জুলাইয়ের। আচমকাই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের এমসিএইচ বিল্ডিংয়ের অ্যাকিউট মেডিসিন ওয়ার্ডে ঢুকে পড়েন এক রোগীর পরিবারের কিছু আত্মীয়। রাত তখন ১ টা। ওয়ার্ডে কতর্ব্যরত ইন্টার্ন এভাবে আচমকা প্রবেশ করার কারণ জানতে চান। ওয়ার্ডে ঢুকে পরা রোগীর পরিবারের লোকেরা জানায়, তাঁদের পেশেন্ট লিভারের অসুখে আক্রান্ত। এখনই ভরতি নিতে হবে। কর্তব্যরত ওই ইন্টার্ন সোজা সাপটা বলেন, সিস্টারের কাছ থেকে বেড নম্বর জেনে আসতে হবে। তবেই তো ভরতি নেওয়া সম্ভব। এই কথায় ক্ষেপে ওঠেন রোগীর পরিবারের লোকেরা। ইন্টার্ন চিকিৎসকের অভিযোগ, “হঠাৎই ওরা বলতে শুরু করে আপনি জানেন না আমরা কে! সঙ্গে সঙ্গেই মোবাইল থেকে একটা ফোন করে সেটি আমার হাতে ধরিয়ে দেয়।” সেই ফোনেরই অপর প্রান্তে ছিলেন ডা. নির্মল মাজি। সম্প্রতি যিনি ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি হয়েছেন।
অভিযোগ, ফোনের মধ্যেই ইন্টার্নকে হুমকি দেন নির্মলবাবু। বলেন, এখনই রোগীকে অ্যাকিউট মেডিসিন ওয়ার্ডে ভরতি করুন নয়তো আপনার রোজিস্ট্রেশন বাতিল করে দিতে পারি। এই ঘটনার পরেই ক্ষুব্ধ ইন্টার্নরা চিঠি দিয়েছেন হাসপাতালের অধ্যক্ষকে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সুপার মানব নন্দী জানিয়েছেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা বিষয়টি দেখছি।” ঘটনার প্রসঙ্গে হাসপাতালের ইন্টার্নরা জানিয়েছেন, “আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এভাবে যদি রাত বিরেতে আচমকাই কেউ ফোন করে হুমকি দেয় তাহলে আমাদের পক্ষে কাজ করা মুশকিল।”
এদিকে, এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিধায়ক নির্মল মাঝি জানান, “আমি রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার হুমকি দিইনি। কারণ ইন্টার্নের কোনও রেজিস্ট্রেশন নম্বরই থাকে না। কিছু নকশালপন্থী ছাত্র-ছাত্রী অশান্তি পাকানোর অছিলায় মিথ্যে অভিযোগ করছে।” যদি তিনি যে ফোনে কথা বলেছেন, সেকথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, “হ্যাঁ, আমি ফোনে কথা বলেছি। আমি বলেছি ওই ব্যক্তি মৃতপ্রায়, তাঁকে বাঁচাতে হবে। কলেজের প্রাক্তনী হয়ে এই চাওয়াটা কী অন্যায়!” এদিকে, একাধিক চিকিৎসকের দাবি, মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রী-ছাত্রীদের প্ররোচনা দিচ্ছেন এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক। তাঁর মদতেই এই ঘটনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.