ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: এবার কলকাতায় মিলল ‘ওমিক্রন’ (Omicron) আক্রান্তের খোঁজ। কলকাতার মেডিক্যাল কলেজের এক ইন্টার্নের শরীরে মিলেছে করোনা ভাইরাসের নয়া স্ট্রেন। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয়, আক্রান্ত বিদেশেও যাননি কখনও। তা সত্ত্বেও ‘ওমিক্রন’ সংক্রমিত হওয়ার খবরে স্বাস্থ্যদপ্তরের আধিকারিকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ আরও চওড়া হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি কলকাতাতেও ডালপালা বিস্তার করছে করোনার নয়া স্ট্রেন? উত্তর এখনও অধরা।
জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকদিন আগে কলকাতার এক মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্নের জ্বর, সর্দি, কাশির মতো নানা উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। সেই সময় কোভিড টেস্ট করা হয় তাঁর। রিপোর্ট আসার পর জানা যায়, কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা ওই ইন্টার্ন করোনা আক্রান্ত। এরপর তাঁর নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠানো হয়। এদিকে, সংক্রমণের কথা জানামাত্রই কলকাতা থেকে কৃষ্ণনগরে চলে যান তিনি। শুক্রবার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের রিপোর্ট আসে। তাতেই জানা যায়, তাঁর শরীরে থাবা বসিয়েছে করোনার নয়া স্ট্রেন ‘ওমিক্রন’। এক মুহূর্ত সময় না নষ্ট করে তাঁকে কৃষ্ণনগর থেকে কলকাতায় আনা হয়। বর্তমানে ওই ইন্টার্ন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভরতি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।
এর আগেও ভিনদেশ থেকে আসা বেশ কয়েকজন করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তাঁদের নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়েও পাঠানো হয়। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর, শুক্রবার মোট ২৩ জনের রিপোর্ট আসে। তাতে জানা যায়, ৫ জনের শরীরে থাবা বসিয়েছে করোনার নয়া স্ট্রেন। তাঁরা প্রত্যেকেরই বিদেশ যাত্রার ইতিহাস রয়েছে। তাই মনে করা হয়েছিল, অন্যান্য দেশে থাকাকালীন সংক্রমিত হয়েছেন তাঁরা। তবে বিদেশে না যাওয়া সত্ত্বেও শহরের এক মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্ন কীভাবে ‘ওমিক্রন’ সংক্রমিত হলেন, স্বাভাবিকভাবেই তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী দীপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “টিকাকরণের পরেও বেশ কিছু মানুষের শরীরে কোভিডের লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছে। গত ২-৩ সপ্তাহে তার হার বেড়েছে বেশ খানিকটা। ওমিক্রনের সম্ভাবনাও রয়েছে। তবে জিনোম সিকোয়েন্সিং না হওয়ার ফলে হয়তো বোঝা যাচ্ছে না। তবে এখনই মনে করার কোনও প্রয়োজন নেই যে ওমিক্রন ছড়াচ্ছে। আমাদের এখন দরকার যুদ্ধকালীন তৎপরতায় আরটি পিসিআর করানো।” ‘ওমিক্রন’ সংক্রমিতের সংস্পর্শে কারা এসেছিলেন তা চিহ্নিত করে কোভিড টেস্টের বন্দোবস্ত করা প্রয়োজন। কারও রিপোর্ট পজিটিভ এলে, তাঁর নমুনা অবশ্যই জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে পাঠানো প্রয়োজন। ‘ওমিক্রন’ সংক্রমিত ইন্টার্ন নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে স্বাস্থ্যদপ্তর। তবে উৎসবের মরশুমে অবাধ ঘোরাফেরা বড়সড় বিপদ ডেকে আনবে না তো, আশঙ্কায় বিশেষজ্ঞরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.