সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাহুল গান্ধীর পদত্যাগের পর একাধিক রাজ্যের প্রদেশ নেতৃত্বের মধ্যে দেখা গিয়েছে পদ ছাড়ার হিড়িক। লোকসভার হারের দায় নিয়ে কংগ্রেসের অন্তত শ’দুয়েক নেতা এখনও পর্যন্ত পদত্যাগ করেছেন। অথচ, হেলদোল নেই এরাজ্যের নেতাদের। লোকসভায় রাজ্যে ৪ আসন থেকে ২ আসনে নেমে এসেছে কংগ্রেস। তথাকথিত কংগ্রেসি গড় মুর্শিদাবাদেও দুটি আসন জিতেছে তৃণমূল। হাতছাড়া হয়েছে মালদহ উত্তর আসনটিও। ভোটের হারও নেমে এসেছে ৫ শতাংশে। অথচ, এ হেন ব্যর্থতা সত্ত্বেও দায় নেওয়ার প্রবৃত্তি দেখাননি প্রদেশ নেতারা। ভোটের ফলাফল নিয়ে এতদিন প্রদেশ নেতৃত্ব মুখে কুলুপ আটার পক্ষেই ছিলেন। অবশেষে নীরবতা ভেঙে বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন, রাজ্য কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা, তথা অধীর-পন্থী হিসেবে পরিচিত ওমপ্রকাশ মিশ্র। বুধবার ফেসবুকে তিনি ঘোষণা করেন প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতির পদ ছাড়ছেন। সেইমতো বৃহস্পতিবারই পদত্যাগপত্র সোমেন মিত্রর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
ওমপ্রকাশবাবু, নির্বাচনে বামেদের সঙ্গে জোটের পক্ষে ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে অধীরপন্থী হিসেবেও পরিচিত তিনি। ২০১৬ বিধানসভায় বাংলায় বাম-কংগ্রেসের যে নির্বাচনী সমঝোতা হয়েছিল, তারও অন্যতম কাণ্ডারী ছিলেন ওমপ্রকাশ। লোকসভাতেও তিনি চাইছিলেন বামেদের সঙ্গে জোট হোক। কিন্তু, শেষপর্যন্ত তা হয়ে ওঠেনি। রায়গঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদ, এই দুটি আসনের জন্যই তৈরি হয় যত গোলযোগ। যার জেরে শেষপর্যন্ত ভেস্তে যায় জোটপ্রক্রিয়াই। ওমপ্রকাশবাবু মনে করছেন, জোট ভেস্তে যাওয়ার ফলেই সুবিধা পেয়েছে বিজেপি। এর পিছনে কংগ্রেস এবং বামেদের শীর্ষ নেতৃত্বের ইন্ধন ছিল বলেও সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি।
রাজ্য কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতার মত, রাজ্যে কংগ্রেসের বেহাল ফলাফলের দায় সকলের। এআইসিসি পর্যবেক্ষক গৌরব গগৈ থেকে শুরু করে তিন কার্যনির্বাহী সভাপতি দীপা দাশমুন্সি, নেপাল মাহাতো এবং শংকর মালাকার পর্যন্ত। সোমেন মিত্র, প্রদীপ ভট্টাচার্যরাও সম্পূর্ণ ব্যর্থ। দায় এড়াতে পারেন না অধীরও। অথচ, কেউই পদত্যাগ করেননি এখনও। ওমপ্রকাশ বাবুর দাবি, প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী সমিতির বৈঠকে, তিনি সকল পদাধিকারীদের পদত্যাগের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। যা নিয়ে কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি। অবশেষে বীতশ্রদ্ধ হয়ে নিজেই পদ ছাড়লেন ওমপ্রকাশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.