অভিরূপ দাস: হাসপাতালের শীতাতপ যন্ত্রের তাপমাত্রা ছিল অত্যন্ত কম। সেই কারণেই নিউমোনিয়া (Pneumonia)। আর সেই চিকিৎসা করতে গিয়েই অশীতিপর রোগীর রক্তনালী আঘাতপ্রাপ্ত হল। শেষমেশ নিউমোনিয়াতেই মৃত্যু হল সুবোধকুমার মণ্ডলের।
ঘটনায় হুগলির মণ্ডল পরিবারের অভিযোগ মল্লিক বাজারের (Mullick Bazar) বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে ওই রোগীর পরিবারকে মেডিক্যাল কাউন্সিলে যেতে বলা হলেও, সমস্ত ঘটনা শুনে আপাতত এক লক্ষ টাকা অন্তবর্তী ক্ষতিপূরণ হিসেবে জমা রাখতে বলা হয়েছে মল্লিক বাজারের ওই বেসরকারি হাসপাতালকে। স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রোগীর পরিবার এবং হাসপাতাল, দু’পক্ষকেই হলফনামা জমা দিতে বলা হয়েছে।
গত ১৩ জানুয়ারি স্নায়ুর সমস্যা নিয়ে নিউ গড়িয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি হন সুবোধকুমার মণ্ডল। সেখান থেকে তাঁকে রেফার করা হয় মল্লিক বাজারের বেসরকারি স্নায়ুরোগের হাসপাতালে। পরিবারের অভিযোগ, জরুরি বিভাগে যখন সুবোধবাবুকে আনা হয়, তখন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের তাপমাত্রা অত্যন্ত কম ছিল।
ফলে ঠকঠক করে কাঁপতে থাকেন বৃদ্ধ। তবু পাতলা চাদরের বেশি কিছু জোটেনি। শেষ পর্যন্ত ওই বৃদ্ধের নিউমোনিয়া হয়। তাঁকে দেওয়া হয় ভেন্টিলেশনে। পরে সেখান থেকে বের করার সময়েই আঘাতপ্রাপ্ত হয় তাঁর রক্তনালী। এর জন্য চিকিৎসকের অপটু হাতকেই দায়ী করেছেন বৃদ্ধের পরিবার। অভিযোগ, শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেলেও হাসপাতালে সেসময় একজনও ফুসফুস রোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন না।
স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যানের কথায়, “সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে একজন পালমোনোলজিস্ট থাকা বাধ্যতামূ্লক। কেন তা ছিল না সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে।” ১৩ থেকে ২০ জানুয়ারি ৭ দিন ওই হাসপাতালে ভরতি ছিলেন বৃদ্ধ। ভরসা রাখতে না পেরে পরিবারের লোক তাঁকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। হুগলিতে বাড়ির কাছেই একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করানো হয়। সেখানেই মারা যান সুবোধবাবু।
সমস্ত অভিযোগ শুনে স্বাস্থ্য কমিশনের প্রাথমিক বক্তব্য, “টানা ৬ ঘণ্টা জরুরি বিভাগে রাখা হয়েছিল বৃদ্ধকে। ঠান্ডায় তাঁকে একটা কম্বলের ব্যবস্থা করে দেওয়া উচিত ছিল। কেন তা দেওয়া হল না সে বিষয়ে হাসপাতালের বক্তব্যও জানতে চাওয়া হয়েছে। অবিলম্বে অর্ন্তবর্তী ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১ লক্ষ টাকা জমা রাখতে বলা হয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.