ছবি: প্রতীকী
অর্ণব আইচ: কাজুবাদামের আড়ালে বিদেশ থেকে বেআইনিভাবে সুপারি পাচার। দুটি কন্টেনার থেকে প্রায় পৌনে তিন কোটি টাকার সুপারি উদ্ধার করল কেন্দ্রীয় সংস্থা ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই)। এই ব্যাপারে অমিত সিং নামে পাচারচক্রের এক মাথাকে ডিআরআই গ্রেপ্তার করেছে। এই সংস্থার গোয়েন্দাদের দাবি, আরও অন্তত ৬টি কন্টেনার ভর্তি প্রায় সাত কোটি টাকা দামের সুপারি দেশে পাচার হওয়ার পথে রয়েছে। সাধারণত বিদেশ থেকে সুপারি আমদানি করতে গেলে সরকারকে ১১০ শতাংশ কর দিতে হয়। এই কর ফাঁকি দিয়ে বেআইনিভাবে সুপারি পাচারের জন্য কলকাতা-সহ বিভিন্ন রাজ্যে একাধিক সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে বলে দাবি ডিআরআইয়ের। অমিত সিংয়ের সিন্ডিকেট রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ ও কলকাতায় যথেষ্ট সক্রিয় বলে দাবি ডিআরআইয়ের গোয়েন্দাদের।
ডিআরআই সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ‘কাজুবাদাম’ নিয়ে বিদেশ থেকে দুটি কন্টেনার কলকাতায় আসে। কন্টেনার দুটি পরীক্ষা করতে গিয়েই ডিআরআইয়ের গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, কাজুবাদামের বদলে তাতে রয়েছে সুপারি, যার দাম ২ কোটি ৬৯ লাখ ৭০ হাজার ৬০৭ টাকা। এই চক্রের মূল পান্ডা রাজস্থানের বাসিন্দা। মালয়েশিয়া থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে প্রায় ১০ কোটি টাকার সুপারি বেআইনি ও নতুন পদ্ধতিতে কলকাতায় পাচার করার ছক কষে সিন্ডিকেটের ওই পান্ডা। তাই ওই ব্যক্তি তারই সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড অমিত সিংকে কলকাতায় পাঠায়। অমিত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে উত্তরপ্রদেশের এক ব্যবসায়ী জাভেদের সঙ্গে যৌথভাবে একটি ভুয়ো সংস্থা তৈরি করে।
ওই সংস্থার মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানির কোড জোগাড় করে তারা। এর পরই প্রথম দফায় সিঙ্গাপুর হয়ে দুটি সুপারি বোঝাই কন্টেনার নিয়ে আসা হয়। যদিও কাগজেকলমে দেখানো হয়, কাজুবাদাম আমদানি করা হচ্ছে। রপ্তানির মূল এজেন্ট হিসাবে দেখানো হয় রাজস্থানের একটি সংস্থাকে, যার মাথায় রয়েছে এই চক্রেরই সেই পান্ডা। কিন্তু কন্টেনার খুলতেই যেই ধরা পড়ে সুপারি, তখন অমিত সিং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, এমনকী, ডিআরআইকে ভুয়া সংস্থার মেল পাঠিয়ে জানিয়ে দেয় যে, কোনও কারণে যারা রপ্তানি করছে, তারা কাজুর বদলে সুপারি পাঠিয়েছে। তাই তারা এই সুপারি গ্রহণ করবে না।
তার বদলে তারা রপ্তানি সংস্থার ভারতীয় এজেন্টকে ওই সুপারি পাঠিয়ে দিতে চায়। এই পদ্ধতিতে তারা রাজস্থানে সুপারি পাঠানোর প্রস্তুতিও নেয়। কিন্তু এতেই সন্দেহ হয় ডিআরআই আধিকারিকদের। তাঁদের তদন্তে অমিত সিংয়ের নাম সামনে আসে। গত শুক্রবার তাকে ডিআরআই অফিসে তলব করা সত্ত্বেও সে আসেনি। শনিবার রফতানির এজেন্টকে সুপারি ফেরত দেওয়া সংক্রান্ত একটি চিঠি জমা দিতে ডিআরআইয়ের অফিসে হাজির হয় অমিত। তখনই তাকে জেরা করার পর সে সুপারি পাচারের বিষয়টি স্বীকার করে। তাকে জেরা করে রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশে অন্য দুই পান্ডার সন্ধানে তল্লাশি চালানো হবে বলে জানিয়েছে ডিআরআই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.