সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশজুড়ে অসহিষ্ণুতার বাতাবরণ। জয় শ্রীরাম ধ্বনি তুলে হামলা হচ্ছে সংখ্যালঘুদের উপর। দেশের কোণায় কোণায় যখন মহামারির আকার নিয়েছে গণপিটুনি, ক্রমবর্ধমান এই অসহিষ্ণুতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে খোলা চিঠি পাঠিয়েছেন সাহিত্য, সিনেমা, সংগীত জগতের ৪৯ জন ব্যক্তিত্ব। দেশের বিদ্বজ্জনদের সেই তালিকায় নাম রয়েছে খ্যাতনামা চিত্রপরিচালক অপর্ণা সেন, মণিরত্নম, শ্যাম বেনেগাল, কেতন মেটা, অনুরাগ কাশ্যপ, আদুর গোপাল কৃষ্ণন, কৌশিক সেন, সুমন ঘোষ, অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, ঋদ্ধি সেন, সংগীত শিল্পী শুভা মুদগল, অনুপম রায়, রূপম ইসলামের মতো ব্যক্তিত্বদের। জয় শ্রীরাম থেকে গণপিটুনি, যাবতীয় অসহিষ্ণুতামূলক বিষয়ের উল্লেখ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো সেই চিঠিতে। বৃহস্পতিবার বিশিষ্টজনদের মতামতকে সমর্থন করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই বিদ্বজ্জনদের পাশে দাঁড়ালেন বসিরহাটের নবনির্বাচিত তৃণমূল সাংসদ নুসরত। সংখ্যালঘুদের উপর অযাচিত অত্যাচার, অসহিষ্ণুতা, ধর্মের নামে হানাহানি নিয়ে মুখ খুললেন নুসরত জাহান জৈন।
“গরুর নামে, ভগবানের নামে কারও দাড়ির উপর তো কারও টুপির উপর আক্রমণ বন্ধ করুন। কেননা, আমাদের ধর্ম আমাদের শেখায়নি নিজেদের মধ্যে একতা নষ্ট করা… এই মাটি, এই হিন্দুস্তান আমাদের।”
“ভারতীয় নাগরিকদের সিংহভাগ যখন দেশের সড়কপথ, আলো, বিমান পরিষেবা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন, তখন আমাদের সভ্য সমাজের ক’জন ব্যক্তি যে মানব ধর্মের সংকটাপন্ন অবস্থা নিয়ে সরব হয়েছেন, ভেবেও ভাল লাগছে”, বুধবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনটাই লিখেছেন বসিরহাটের তারকা সাংসদ নুসরত। পরোক্ষভাবে মোদি সরকারকে ঠুকে তিনি ওই পোস্টে লিখেছেন, “২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল, বিগত ৫ বছরে দেশে সবথেকে বেশি আক্রমণ হয়েছে মুসলিম এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর। তথাকথিত ‘গোমাতা-ভক্ত’রা একাধিকবার হামলা হেনেছেন নিষ্পাপ মানুষদের উপর। তবরেজ আনসারি, মহম্মদ আখলাকদের মতো মানুষদের নাম রয়েছে সেই নিপীড়িত-অত্যাচারিতদের তালিকায়। রামনামকে জল্লাদের চিৎকারে পরিণত করেছে হিংসায় উন্মত্ত জনতা। যাবতীয় ইস্যু নিয়ে আগাগোড়াই কেন নীরব থেকেছে কেন্দ্রীয় সরকার? প্রশ্ন তুলেছেন নুসরত।
[আরও পড়ুন: কারগিল বিজয় দিবস উপলক্ষে ফের প্রেক্ষাগৃহে আসছে ‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ ]
“গতবছর তো দেশের শীষ কোর্টের আইনপ্রণেতারা উন্মত্ত জনতাদের এই কর্মকাণ্ড রোধের জন্য নয়া আইনও প্রণয়ন করেছেন। কিন্তু তারপরও সরকার চুপ! কেন?” সোশ্যাল মিডিয়ায় দৃঢ় ভঙ্গিতে প্রশ্ন ছুঁড়েছেন বসিরহাটের সাংসদ। “ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের একজন নয়া সাংসদ হিসেবে আমি সরকার এবং সমস্ত আইনপ্রণেতাদের কাছে গণতন্ত্রের উপর গণপিটুনি দেওয়া কঠোর হস্তে দমনের অনুরোধ করছি।” এরপর ইকবালের কবিতার অংশ তুলে নুসরত লিখেছেন, “গরুর নামে, ভগবানের নামে কারও দাড়ির উপর তো কারও টুপির উপর আক্রমণ বন্ধ করুন। কেননা, আমাদের ধর্ম আমাদের শেখায়নি নিজেদের মধ্যে একতা নষ্ট করা… এই মাটি, এই হিন্দুস্তান আমাদের।”
[আরও পড়ুন: কেউ মনে রাখেনি, নিরাপত্তারক্ষীর জীবনই এখন রোজনামচা প্রবীণ পরিচালকের ]
Lets keep fighting for humanity #InclusiveIndia pic.twitter.com/B3Drb9QfSO
— Nusrat (@nusratchirps) July 24, 2019
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.