Advertisement
Advertisement

Breaking News

NRS

অর্ধেক জিনের দৌলতে বোন ম্যারো প্রতিস্থাপন এনআরএসে, সুস্থ লিউকোমিয়া রোগী

একের পর এক কেমোথেরাপি, কড়া ওষুধ-ইঞ্জেকশন কিছুই কাজ করছিল না।

NRS makes critical bone marrow transplant to cure leukemia patient | Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:January 23, 2023 2:44 pm
  • Updated:January 23, 2023 3:30 pm

ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: প্রবাদ আছে বাপ কা বেটা! বাবার প্রায় সব অভ্যাস, দোষ-গুণ ছেলের মধ্যে সঞ্চারিত হয়। পিছনে আছে জিন। সে-ই কলকাঠি নাড়ে। কিন্তু সেই জিনই যদি না মেলে? এমন জীবন-মরণ সমস্যায় পড়েছিলেন বছর ছাব্বিশের পিন্টু মহন্ত। মারণ লিউকোমিয়ায় তাঁর জীবনী শক্তি শুষে নিয়েছিল। ভিন রাজ্যের তাবড় হাসপাতাল হাত তুলে নিয়েছিল। একের পর এক কেমোথেরাপি, কড়া ওষুধ-ইঞ্জেকশন কিছুই কাজ করছিল না।

বিধ্বস্ত হতদরিদ্র পিন্টু এনআরএস হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগে আসেন বাবা-ভাইয়ের সঙ্গে। কিন্তু ২৬ বছরের ছেলেটাকে দেখে চমকে যান বিশেষজ্ঞরা। ডা. সন্দীপ সাহা স্বগতোক্তির মতো বলে ফেলেন,‘‘ইমপসিবল!’’ তবে সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে সামলে নেন। বলেন, ‘‘একবার শেষ চেষ্টা করছি। বাকিটা…।’’

Advertisement

[আরও পড়ুন: ইস্যু আন্দামানে দ্বীপের নামকরণ: ‘নেতাজিই নাম দিয়েছিলেন’, মোদিকে মনে করালেন মমতা]

রবিবার ৪০ দিনের মাথায় দিব্য সুস্থ। হাসপাতালের দূষণমুক্ত হেপাফিল্টার রুমে দুপুরে খেয়ে ভাতঘুম দিয়েছে। রাতেও খাওয়া-দাওয়া করেছে। কয়েকদিন পর বাড়ি ফিরবে। আর এই কাজটা সম্ভব হয়েছে অর্ধেক জিনের দৌলতে। তাও আবার ভাইয়ের থেকে নেওয়া। মোদ্দা কথা, হাফ ম্যাচ বা অর্ধেক জিন মিলে যাওয়াতে মৃত্যুর মুখে তুড়ি দিয়ে নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে এই যুবক। ঘটনা এখানে শেষ নয়। রক্তের ক্যানসারে হ্যাপ্লয়েড জিন থেরাপির এই সাফল্য সাড়া ফেলেছে দেশের তাবড় রক্ত বিশেষজ্ঞদের মহলে।

Advertisement

এনআরএসের এই সাফল্যকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডাঃ তুফান দলুইয়ের কথায়, ‘‘দেশের কোনও সরকারি হাসপাতালে এমন পদ্ধতিতে সাফল্য এই প্রথম।’’ এনআরএস হাসপাতালের কর্তাদের বক্তব্য, লিউকোমিয়া নিরাময়ে এই পদ্ধতিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন দেশের রক্তরোগ বিশেষজ্ঞরা। আর ডাঃ সন্দীপ সাহা এবং শুভ্রনীল বাউলের কথায়, ‘‘দেশের কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল চেষ্টা করছে এই থেরাপিতে রোগমুক্ত করতে। কিন্তু খরচ ৪০-৫০ লক্ষ টাকা। তাই অনেক পরিবার পিছিয়ে আসে। চোখের সামনে রোগী শেষ হয়ে যায়। এবার আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেকটা বেড়ে গেল।’’

[আরও পড়ুন: প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো নিয়ে সিংহভাগের মত কী? প্রকাশ্যে ভোটাভুটির ফল]

তিনমাস আগে পিন্টু এনআরএস হাসপাতালে ভরতি হওয়ার পর কয়েকদিন অন্তর কয়েকটা কড়া ডোজের কেমো দেওয়া হয়। ডা. সন্দীপ সাহার কথায়, ‘‘পিন্টুর শরীরে যত বিষ ছিল সব ধুয়ে সাফ-সুতরো করে ফেলা হয়। এরপর ওর বাবার জিন পরীক্ষা করে দেখি, কোনও মিল নেই। আরও বড় দুশ্চিন্তা। লিউকোমিয়াকে তাড়াতে ওর ভাইয়ের জিন পরীক্ষা করি। দেখলাম অর্ধেক মিল।’’ সন্দীপের কথায়, ‘‘শুধুমাত্র ওই অস্ত্র নিয়ে দিনরাত এক করে শুরু হল এক নতুন লড়াই।’’ এখানে মনে রাখতে হবে, অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন তখনই সম্ভব যদি গ্রহীতা ও দাতার জিন মিলে যায়। কিন্তু এই গল্পের নায়ক পিন্টুর সঙ্গে তার ভাইয়ের জিন অর্ধেক মিলেছিল। ঘটনা হল, অর্ধেক জিনকে হাতিয়ার করে ভাইয়ের অস্থিমজ্জা বা বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ