ফাইল ফোটো
রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বাংলায় বিধানসভা উপনির্বাচনে ঘাসফুলের দাপট। বিজেপির ভরাডুবি। খোদ রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের খাসতালুক খড়গপুর ও উত্তরবঙ্গের কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা প্রথমবার ছিনিয়ে নিল তৃণমূল। শোচনীয় পরাজয় থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথা বলছেন বিজেপি নেতারা। কিন্তু এদিনের হারের জন্য এনআরসি ইস্যুই ফ্যাক্টর হয়েছে বলে মনে করছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। বিশেষ করে কালিয়াগঞ্জ ও করিমপুর আসনে। আর খড়গপুরে প্রার্থী বাছাই ঠিক হয়নি। এমনটা মত, রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের বড় অংশেরই।
এবারের উপনির্বাচনে তিন বিধানসভা কেন্দ্রে এনআরসি ইস্যুকেই ঘুরিয়ে দায়ী করছে পদ্মশিবির। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এনআরসি আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে। জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ ছিল পড়শি রাজ্য অসম। প্রায় ১৯ লক্ষ হিন্দুর নাম বাদ গিয়েছে চূড়ান্ত তালিকা থেকে। সেই নিয়ে এ রাজ্যে সর্বত্র এনআরসি বিরোধী আন্দোলন জোরদার করেছিল শাসকদল তৃণমূল। বিজেপির দাবি, গ্রামের মানুষদের মধ্যে এনআরসি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে শাসক শিবির। আর সেই এনআরসি আতঙ্কের লাভের গুড় খেয়েছে ঘাসফুল শিবির। এনআরসি নিয়ে মানুষের বিভ্রান্তি দূর করতে ব্যর্থ হয়েছে নেতৃত্ব, মানছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা।
অন্যদিকে, লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে কালিয়াগঞ্জে এগিয়ে থাকলেও উপনির্বাচনে সেই ফায়দা তুলতে ব্যর্থ নেতৃত্ব। রণকৌশলে কোনও গলদ রয়ে গিয়েছিল বলে মনে করছেন নেতা-কর্মীরা। তবে এই কেন্দ্রে খুব কম ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী তপনদেব সিনহা। তিনি ২৩০৪ ভোটে জয়ী হয়েছেন। এই ফল দেখেই বিজেপি নেতৃত্ব নিশ্চিত কোথাও স্ট্র্যাটেজির জন্য এত কম ব্যবধানে দলীয় প্রার্থী কমলচন্দ্র সরকারকে হারতে হয়েছে। মুসলিম অধ্যুষিত করিমপুরেও এনআরসি ইস্যু ফ্যাক্টর হয়েছে বলে মত নেতৃত্বের।
শোচনীয় অবস্থা খড়গপুর সদর কেন্দ্রের। এখানে প্রার্থী বাছাইয়ে গলদ ছিল বলে মনে করছে বঙ্গ বিজেপি। বেশ কিছু মামলায় অভিযুক্ত বিজেপি প্রার্থী প্রেমচাঁদ ঝা। দিলীপ ঘনিষ্ঠ বলেই প্রেমচাঁদ টিকিট পেয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন বিজেপি নেতা প্রদীপ পট্টনায়েক। নির্দল প্রার্থী হিসাবে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। এই কেন্দ্রে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও ফ্যাক্টর হয়েছিল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। মুখ পুড়েছে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের। তবে ভাঙলেও মচকাতে রাজি নন মেদিনীপুরের সাংসদ। শাসকদলের সন্ত্রাসেই খড়গপুর-সহ তিন কেন্দ্রে হার বলে দাবি দিলীপ ঘোষের।
বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘আমরা হার থেকে শিক্ষা নেব। এই ফলে আমরা অবশ্যই চিন্তিত। পর্যালোচনা হবে। তবে ২০২১ এর লড়াইয়ে কোনও ভাবে খামতি হবে না। আগামী বিধানসভা ভোটে। এই সব আসনেই আমরা জিতব।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.