ছবি:প্রতীকী
নব্যেন্দু হাজরা: অটোরুটেও (Auto Route) কর্পোরেট কালচার। কর্পোরেট কর্মীদের মতো অটোচালকদেরও সপ্তাহে দু’দিন ডে-অফ, যেমনটা হয় আইটি ফার্ম বা বহুজাতিক সংস্থায়।
হ্যাঁ, কলকাতার কিছু অটো রুটে এই নতুন কর্মসংস্কৃতি চালু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে। যাকে অনুসরণ করছে অন্যরাও। যার উদ্দেশ্য, অটোর সংখ্যায় লাগাম দিয়ে রাস্তায় ভিড় কমানো। পাশাপাশি সাওয়ারি না পেয়ে কোনও অটো যাতে লোকসানের মুখে না পড়ে, তা নিশ্চিত করা। বস্তুত গত কয়েকমাসে বিভিন্ন রুটে অটোর যাত্রীসংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ফলে যে রুটে একটি অটো আগে ১৫ ট্রিপ করত, সেই এখন সাত-আট ট্রিপ করতে পারছে। আর এই যাত্রীবহনে সমতা রেখে সুরাহার পথ খুঁজতে গিয়েই এই নতুন দাওয়াই।
রুট কমিটি ঠিক করে দিচ্ছে কোন অটো কোন দু’দিন বন্ধ থাকবে। সেই দু’দিনের নাম লেখা থাকছে অটোর গায়ে। যাতে কোনওভাবেই চোখ এড়িয়ে ছুটির দিনে সেই অটো নামাতে না পারেন চালক। সব রুটে নয়া নিয়ম চালু না হলেও কলকাতার একাধিক রুট এই নিয়মে হাঁটছে। অটোচালকরা বলছেন, লকডাউনের পর যাত্রী অনেকটাই কমেছে। তাই সপ্তাহে এই সাতদিনের বদলে পাঁচদিন অটো নামছে বহু রুটে, যাতে সব অটোচালকই যাত্রী পান।
ধরা যাক, মেছুয়া-ফুলবাগান রুট। মেছুয়া-কাদাপাড়া রুটকে ভেঙে এই এই রুট তৈরি হয়েছে। যেখানে প্রায় আড়াইশো মতো অটো চলে। কিন্তু এই বিপূল সংখ্যক অটোর স্ট্যান্ডে দাঁড়ানোরও জায়গা নেই। তাই দু’দিন করে সব অটোকেই বন্ধ রাখা হচ্ছে। কোনও অটোর সামনে লেখা মঙ্গল-বৃহস্পতি, কোনওটার সোম-শুক্র। চালকদের দাবি, আসলে সবাইকে রোজগারের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্যই এই নয়া নিয়ম একেকটি রুটকমিটি চালু করেছে। বেশিরভাগ চালকই মালিকের থেকে অটো ভাড়া নিয়ে চালান। দিনে কোনও রুটে চারশো কোনও রুটে সাড়ে তিনশো টাকা ভাড়া। ফলে যাত্রী কমায় রুটে বেশি অটো হয়ে গেলে রোজগারও অনেকটাই কমে যাচ্ছে চালকদের। তা এড়াতেই নয়া এই নিয়ম।
তবে যাত্রীদের বক্তব্য, অটোচালকদের স্বার্থের কথা ভেবে নিয়ম করা হয়েছে। কিন্তু বাড়তি ভাড়া নেওয়া যে করোনাকালে চালু হয়েছিল তা তো এখনও কমেনি। সেই সময় অটোপিছু তিনজন যাত্রী নেওয়া হত, তাই ভাড়া বেড়েছিল। কিন্তু এখন তো চার-পাঁচজন নেওয়া হয়। রাতের দিকে শহরতলিতে ছ’জনও। কিন্তু ভাড়া তো একই রয়ে গেল। রাতে নিউ গড়িয়া থেকে সোনারপুর রুটের অটোতে উঠলেই চালক নিচ্ছেন ২০ টাকা। একটা স্টপেজ গেলেও একই ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। গাঙ্গুলিবাগান থেকে সুলেখা ভাড়া ছিল ১০ টাকা, যা বেড়ে হয়ে গেছে ১৫। এরকম অধিকাংশ রুটেই বাড়তি ভাড়া হয়ে গিয়েছে। সরকারের এবিষয়ে নিয়ন্ত্রণই নেই।
আইএনটিটিইউসি-র (INTTUC) অটো সংগঠনের অন্যতম সদস্য মদনমোহন ঘোষ বলেন, “লকডাউনের পর যাত্রী সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে অটোতে। সে কারণেই বহু রুটে সপ্তাহে দু’দিন করে অটো বসানো হচ্ছে। যাতে সকলের অটোতেই যাত্রী পান।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.