Advertisement
Advertisement

টানটান গোয়েন্দা গল্পকেও হার মানাবে কলকাতা পুলিশের ‘রহস্য রবিবার’

গোরস্থানে সাবধান!

Now suspense series on Kolkata Police Facebook wall
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:August 7, 2017 8:37 am
  • Updated:August 7, 2017 8:52 am  

অর্ণব আইচ: গোরস্থানে সাবধান! ক্ষতবিক্ষত দেহটি মিলেছিল পার্ক স্ট্রিটের সেই কবরস্থানেই। একটি সমাধির পাশে। মৃত যুবককে শনাক্তও করা গিয়েছিল। কিন্তু কে বা কারা তাঁকে খুন করে ওখানে ফেলে গেল! তার কোনও সূত্র পাওয়া যায়নি। শেষমেশ আঁধারে আলো দেখা গেল ময়নাতদন্তের সময়। মৃতের প্যান্টের চোরা পকেটে মিলল একটি রুমাল, যাতে এমব্রয়ডরি করে লেখা ‘রেশমা’। আর সেই সূত্র ধরেই ফাঁস হল ‘এক নারী চার তরবারি’র রহস্য।

[রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার বৃদ্ধের মৃতদেহ, খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য নিউ আলিপুরে]

Advertisement

এক সময় বাঙালি আমগেরস্তের রবিবারের দুপুর জুড়ে থাকত রেডিওর বহুচর্চিত অনুষ্ঠান ‘রবিবারের বারবেলা’। গা ছমছমে রহস্য রোমাঞ্চে বুঁদ হয়ে যেত আট থেকে আশি। এখন রেডিওর দিন গিয়েছে। তার জায়গায় টিভি, ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপের রমরমা। কিন্তু রহস্যকাহিনির টান একই রকম। তাই এবার বাঙালিকে ছুটির দুপুরে ফের ভরপুর রোমাঞ্চের স্বাদ দেওয়ার সুযোগ করে দিল কলকাতা পুলিশ। নিজেদের ফেসবুক পেজ মারফত। ‘ইতিহাসের আয়না’য় অতীত ফিরে দেখানোর পাশাপাশি লালবাজারের ফেসবুক ওয়ালে শুরু হয়েছে নতুন সিরিজ ‘রহস্য রবিবার’। কলকাতার বুকে ঘটে যাওয়া সাড়া জাগানো বিভিন্ন অপরাধমূলক রহস্য কাহিনি গল্পের আকারে প্রকাশিত হচ্ছে ফেসবুক পেজে, ফি রবিবার।

পেজটিতে ফলোয়ারের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। এই মুহূর্তে প্রায় ৩৫ হাজার। এবং ‘অনুসরণকারীরা’ই জানতে চাইছেন, এই অভিনব ও আকর্ষণীয় উদ্যাগের নেপথ্যে কারা রয়েছেন? লালবাজারের খবর, সম্প্রতি পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের নির্দেশে ঢেলে সাজানো হয়েছে কলকাতা পুলিশের সোশ্যাল মিডিয়া সেল। বাড়ানো হয়েছে কম্পিউটার জানা কর্মীদের সংখ্যা। পোস্টগুলি যে ঝরঝরে বাংলা ও ইংরেজিতে লেখা হচ্ছে, সেটিই ‘ফলোয়ার’দের অধিকাংশের কাছে আকর্ষণ ও কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু। বিশেষত ‘রহস্য রবিবার’ শুরু হওয়ার পর অনেকেই জানতে চাইছেন লেখকের পরিচয়। কয়েকজন অনুরাগী দাবি করেছেন, বইয়ের আকারে প্রকাশিত হোক এই কাহিনি। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, বাংলা ও ইংরেজি, দু’টি ভাষাতেই লিখছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (৩) সুপ্রতিম সরকার। এই বিষয়ে সুপ্রতিমবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে উত্তরও দিলেন রহস্যের মোড়কে, “পেজটা প্রতিষ্ঠানের। সেখানে ব্যক্তি গৌণ। যে-ই লিখুক, আমি বা অন্য কেউ, কী এসে যায়?”

[কবিগুরুর কলম চুরি, সমন গেল জোড়াসাঁকোয়!]

রবিবারের ‘রহস্য রবিবার’-এ তুলে ধরা হয়েছে ১৯৯৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারির ঘটনা। মল্লিকবাজারের গোরস্থানের ভিতরে উদ্ধার হয় এক যুবকের দেহ। খুন করে একটি গর্তের পাশে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছিল। কিছুদূরে পাওয়া যায় তাঁর জুতো। পরের দিন জানা যায়, যুবকের নাম গোপাল রায়, যিনি এক ক্যুরিয়র সার্ভিসের কর্মী। পাঁচদিন আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি। ময়নাতদন্তের সময় তাঁর জিন্সের একটি গোপন পকেট থেকে উদ্ধার হয় ‘রেশমা’ লেখা রুমাল। গোপালের এক সহকর্মীর সূত্র ধরে পূর্ব কলকাতায় রেশমার বাড়িতে পৌঁছন গোয়েন্দারা। রুমালটি দেখিয়ে তাঁকে জেরা শুরু করতেই সত্যিটা বেরিয়ে আসে। অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে যুবতী বলেন, গোপালের সঙ্গে তাঁর প্রেম হয়েছিল। কিন্তু তা মেনে নেয়নি গোপালের তিন বন্ধু জাননগরের নাদির ও রাজ এবং তপসিয়ার আজাদ। তারাও ছিল রেশমার প্রণয়প্রার্থী। সঙ্গে সঙ্গে তিনজনের খোঁজ শুরু হয়। সাতদিন পর ধরা পড়ে নাদির। পরে অন্যরা। জানা যায়, মিটমাট করার নাম করেই কবরস্থানে নিয়ে গিয়ে গোপালকে ‘খুন’ করে তিন বন্ধু। রাজ ও আজাদ তাঁকে চিৎ করে ফেলে দেয়। নাদির তাঁর বুকের উপর বসে গলা কাটে। কবরস্থানের এক প্রান্ত থেকে উদ্ধার হয় অস্ত্র। নাদির ও আজাদ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত। রাজ বিচারাধীন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement