ছবি: প্রতীকী
নব্যেন্দু হাজরা: হলুদ-কালো থেকে হলুদ-সবুজ। এবার নীল-সাদা। ফের বদলে যাচ্ছে শহরের অটোর রং। শহরের সঙ্গে জেলার অটোকে আলাদা করতেই বিভাজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য।
অনেক সময়ই জেলার অটো কলকাতায় বা কলকাতার অটো জেলায় ঢুকে পারে। তেমনটা যাতে না হয়, সেই কারণেই খোলনলচে বদলে যাচ্ছে শহরের অটোর। কলকাতা, বিধাননগর, হাওড়া এবং বারাকপুর কমিশনারেটকে আনা হচ্ছে একটি আরটিএ-র আওতায়। সেখানকার অটোর রং হবে একরকম। বাকি জেলার অটোর রং একই থাকবে বলে খবর। শোনা যাচ্ছে, প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে কলকাতা আরটিএ-র মধ্যে থাকা অটোর রং হবে নীল-সাদা। শহরের রংয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতেই এই ভাবনা। আগামী সপ্তাহেই নয়া রংয়ের নির্দেশিকার ঘোষণা করা হবে।
অভিযোগ উঠছিল অনেকদিন ধরেই। জেলার অটো নাকি ঢুকে পড়ছে শহরে। যেমন বারাসতের অটো উল্টোডাঙায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন রুটের অটো কলকাতায়। আর তাতেই বাধছিল গন্ডগোল। চালকরা যে যেমন খুশি ভাড়া হাঁকছিলেন। যাত্রীরাও পড়ছিলেন সমস্যায়। যা নিয়ে প্রায়ই বাঁধত অশান্তি। আর তাই এবার জেলার সঙ্গে শহর-শহরতলির অটোর রংকে আলাদা করার ভাবনা। পাশাপাশি ২০১৫ সালের পর যে সমস্ত অটো রাস্তায় নেমেছে, সেগুলি বেআইনি বলেই চিহ্নিত হবে। তার আগের যে অটো রয়েছে, কিন্তু রেজিস্ট্রেশন নেই, তাদেরকে নিয়ম মেনে বৈধ করতে হবে। পরিবহণ দপ্তরে তাদের সেই সুযোগ দেবে।
নবান্ন সূত্রে খবর, পরিবহণ দপ্তরের কাছে যে তালিকা রয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে কলকাতা-হাওড়া, বারাকপুর, বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় ৩৫ হাজার অটো রয়েছে। তাদেরকেই নয়া নীতিতে বাধা হবে। শুধু নীতিতে বাধাই নয়। এবার যাত্রীদের থেকে অভিযোগ পেলে তৎক্ষণাৎ সেই অটোচালকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি কাটা রুট বন্ধ করা হবে। সেক্ষেত্রে রুটের সংখ্যা বাড়তে পারে। সূত্রের খবর, নয়া পলিসিতে পরিষ্কার বলে দেওয়া হচ্ছে, কোনওভাবেই যেখানে সেখানে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া যাবে না। কলকাতার অটোয় চারজনের বেশি যাত্রী তোলা যাবে না। সাউন্ড বক্স বসানো যাবে না। এলইডি লাগানো যাবে না। এছাড়াও হাই সিকিউরিটি প্লেট বসানো হবে অটোয়। তবে রং বদলের প্রক্রিয়াটা ধীরে ধীরে হবে। যদিও রাজ্য রংয়ের খরচ দেবে না জানিয়ে দিয়েছে। তবে কম খরচে যাতে রং করানো যায়, তার ব্যবস্থা করানো হবে।
যাত্রীদের কথায়, শহরের রংয়ের সাজে যদি অটো সাজে তবে মন্দ কী! কিন্তু আসল তো পরিষেবা। যেমন খুশি ভাড়া নেওয়ার বদ-অভ্যেস চালকরা বদলালেই হয়। আর কোনও অনুষ্ঠান-উৎসব-প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে তো কথাই নেই। এক ধাক্কায় ভাড়া অনেকটাই বেড়ে যায়। সেটা দেখলে ভাল হয়। দপ্তরের এক কর্তা জানান, এবার ভাড়ার গন্ডগোল হচ্ছে কি না তা দেখতে বিভিন্ন রুটে নজরদারি চালানো হবে। কোন কোন রুট নিয়ে বেশি অভিযোগ তার একটি তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। সেখানে পুলিশ এবং পরিবহণ দপ্তরের কর্তারা হানা দেবেন মাঝেমধ্যেই। যাত্রীদের থেকে অভিযোগও শুনবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.