স্টাফ রিপোর্টার : সবজি-আনাজের বাজার আগুন ঝরাচ্ছিলই। আর এখন তার সঙ্গী হয়েছে মাছ-মাংস। মুরগির মাংস ২৪০-২৫০ টাকা প্রতি কেজি। আর মাছ! কাতলা কোথাও কোথাও ৪০০-র গণ্ডি ছাড়িয়েছে। দেশি ট্যাংরা ৮০০ টাকা কেজি। চিংড়ি থেকে পাবদা, ৫০০ টাকার কমে কোনও মাছ নেই বাজারে। জ্যান্ত পোনা-চারাপোনা থেকে তেলাপিয়ার দেখা মেলাই ভার। মানিকতলা থেকে মুকুন্দপুর। মঙ্গলবার সকালে মাছবাজারের চিত্রটা একই। যেখানে অন্যান্য দিন অন্তত জনা চল্লিশ ব্যবসায়ী মাছ নিয়ে বসেন, সেখানে এদিন মুকুন্দপুর বাজারে দেখা গিয়েছে সেই সংখ্যা অর্ধেকেরও কম।
গত কয়েকদিন ধরেই আগুনে দাম আনাজপাতির। বাজার গিয়ে পকেট ফাঁকা হলেও ব্যাগ ভরছে না আম গেরস্তের। বাধ্য হয়েই তাই সবজি খাওয়া কমাতে বাধ্য হচ্ছেন নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্তরা। সবকিছুর দামই সেঞ্চুরির কাছাকাছি। তুলনায় মঙ্গলবার পটল, ঢেঁড়শ, বরবটি, উচ্ছে, শসা– অনেক সবজির দাম এদিন সামান্য কমেছে। তবে বেগুনের দাম এদিনও ছিল ১২০-১৩০ টাকা প্রতি কেজিতে। কাঁচালঙ্কার দাম বেশিরভাগ বাজারেই তিনশোর কাছাকাছি। টম্যাটোও দুশোর আশপাশে। অথচ এই অবস্থায় সাধারণ মানুষ সবজি কেনা ছেড়ে যে মাছ-মাংস কিনবেন, তারও উপায় নেই।
মাছ ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, হোলসেল মার্কেটেই মাছ আসছে না। ইদের ছুটিতে বেশিরভাগ দেশের বাড়ি গিয়েছে। তাঁরা ফিরবে ভোট পার করে। ফলে বাজারে মাছের টানাটানি। আর জোগান কম হাতেই দাম হু হু করে বেড়েছে। নাগাড়ে বৃষ্টি না হওয়ায় খাল-বিল শুকিয়ে গিয়েছে। ফলে জ্যান্ত মাছে যে বাজার ভরা থাকে, তাও পাওয়া যাচ্ছে না। এই সময় যেখানে ইলিশের গন্ধ ম ম করে বাজার এবার তারও খুব একটা দেখা নেই। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, মাছ আসছে না। অন্যবার যে সংখ্যক ট্রলার যায় সমুদ্রে যায়, এবার তার অর্ধেকও যায়নি। তারই প্রভাব পড়েছে বাজারে। মুরগির মাংসও সুযোগ বুঝে দাম চড়িয়েছে।
এদিকে সবজি বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে মঙ্গলবার একাধিক বাজারে যায় টাস্ক ফোর্স (Task Force) এবং এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের (Enforcement Branch) আধিকারিকরা। এদিন সকালে শিয়ালদহ কোলে মার্কেটে যান তাঁরা। কথা বলেন ব্যবসায়ী এবং ক্রেতাদের সামনে। দেখা যায়, পাইকারি বাজারের সঙ্গে খুচরো বাজারের দামের বিস্তর ফারাক। সোমবারের তুলনায় অবশ্য এদিন বেশিরভাগ সবজিরই কেজিতে ১০-১৫ টাকা দাম কমেছে। এই দাম আরও কমবে বলেই জানিয়েছেন টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে। তিনি বলেন, ‘‘লঙ্কা থেকে পটল, সবকিছুর দামই কিছুটা কমেছে। আরও কমবে। দিন দশেকের মধ্যে আশা করা যায়, দাম অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.