ছবি: প্রতীকী
অর্ণব আইচ: দমদম সেভেন ট্যাঙ্কের ঘটনার পর এবার কলকাতায় ম্যানহোলগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিল লালবাজার (Lalbazar)। শহরে ক’টি খোলা ম্যানহোল রয়েছে, তা শনাক্ত করার ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) শীর্ষকর্তার নির্দেশ এসে পৌঁছেছে প্রত্যেকটি থানা ও ট্রাফিক গার্ডের হাতে। সেই নির্দেশ অনুযায়ী খোলা ম্যানহোল খুঁজে থানা ও ট্রাফিক গার্ডগুলি রিপোর্ট পাঠানো হবে লালবাজারে। ম্যানহোলের ঢাকনা তুলে ফেলা বা চুরি রুখতে এবার ম্যানহোলগুলির আশপাশে সিসিটিভি বসানোর ব্যাপারেও পুলিশ ভাবনাচিন্তা করছে বলে সূত্রের খবর।
উত্তর কলকাতার চিৎপুরের দমদম সেভেন ট্যাঙ্কসের কাছে খোলা ম্যানহোলে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় এক প্রৌঢ়ের। প্রাথমিকভাবে পুলিশ জেনেছে, সিমেন্টের ঢাকনাটি খুলে ফেলেছিলেন এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা। এভাবে উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতার বহু জায়গায় ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে নেওয়ার ফলে খোলা ম্যানহোলে বাড়ছে বিপদ। ফের যাতে কোনও ধরনের অঘটন না ঘটে, সেই কারণে এবার তৎপর হয়েছেন লালবাজারের পুলিশকর্তারা।
এক পুলিশ আধিকারিক জানান, কলকাতার কিছু ম্যানহোলে সিমেন্ট, আর বাকিগুলিতে লোহার ঢাকনা রয়েছে। কিন্তু কার্যত দেখা গিয়েছে, সিমেন্টের ঢাকনাগুলি তাড়াতাড়ি ভেঙে যায়। বিশেষ করে সেগুলির উপর দিয়ে গাড়ি চলাচল করলে এমনটা হয়। ভাঙা ঢাকনাগুলি খুলে নেওয়া হলেও সেভাবে থেকে যায়। আবার কিছু ক্ষেত্রে চুরি যায় ম্যানহোলের লোহার ঢাকনা। সেগুলি চোরেরা লোহার দামেই বিক্রি করে। কয়েক মাস আগে এরকম বেশ কিছু লোহার ঢাকনা কলকাতা পুলিশ উদ্ধার করেছিল।
নির্দেশিকা পাওয়ার পর প্রত্যেকটি থানা ও ট্রাফিক গার্ডের আধিকারিকরা নিজেদের এলাকায় টহল দেন। সোমবারও টহল দিয়ে তাঁরা নিজেদের এলাকায় কয়েকটি করে খোলা ম্যানহোল শনাক্ত করেছেন। আবার উত্তর কলকাতা বা দক্ষিণ শহরতলিতে কয়েকটি নালা বা নর্দমাও এমনভাবে খোলা রয়েছে যে, তাতে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। প্রাথমিকভাবে সেই খোলা ম্যানহোলগুলিতে লাল পতাকা রেখে সতর্কীকরণ করা হচ্ছে, যাতে তার আশপাশ দিয়ে কেউ না হাঁটেন।
খোলা ম্যানহোলগুলির তালিকা তৈরি করে থানাগুলির পক্ষে সেগুলি পাঠানো হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ডিভিশনের ডিসিদের। তাঁরা ওই রিপোর্ট পাঠাচ্ছেন লালবাজারে। আবার ট্রাফিক গার্ডগুলির পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে ট্রাফিকের যুগ্ম পুলিশ কমিশনারের কাছে। একইসঙ্গে কলকাতা পুরসভাকেও (KMC) থানাগুলির পক্ষ থেকে খোলা ম্যানহোলের তথ্য জানানো হচ্ছে। এদিকে, ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে নেওয়া বা চুরি বন্ধ করতে প্রত্যেকটি এলাকায় অতিরিক্ত সংখ্যক সিসিটিভি বসানোর ব্যাপারে আলোচনা চলছে।
যে ম্যানহোলগুলি ইতিমধ্যেই সিসিটিভির আওতায় রয়েছে, সেগুলি শনাক্ত করা হয়েছে। কিন্তু যেগুলি আওতায় নেই, সেগুলির দৃশ্য যাতে ধরা পড়ে, তার জন্য নতুন সিসিটিভি কীভাবে বসানো যায়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.