নব্যেন্দু হাজরা: সময় ফেরে যেমন খুশি আর ভাড়া নেওয়া যাবে না। এবার বাইক ট্যাক্সির (Bike Taxi) ভাড়াও বেঁধে দেবে রাজ্য সরকার। নূন্যতম ভাড়া নির্ধারণের পাশাপাশি কিলোমিটার পিছু ভাড়ার তালিকা করে দেওয়া হবে। আর এই ভাড়া নির্ধারণে তৈরি হয়েছে চার সদস্যের একটি কমিটি। তারা ইতিমধ্যেই একটি খসড়া ভাড়ার তালিকা তৈরিও করে ফেলেছে। নবান্নের সিলমোহর পড়লেই সেই ভাড়া অনুযায়ী নিয়ম মেনে ছোটাতে হবে বাইককে। একইসঙ্গে বাণিজ্যিক লাইসেন্স বা হলুদ নাম্বার প্লেট ছাড়া বাইক ট্যাক্সি চালানোর উপরও বিধি আরোপ করা হবে। সে সংক্রান্ত নতুন গাইডলাইনও বের করবে পরিবহণ দপ্তর (Department of Transport)। ইতিমধ্যেই বাইক ট্যাক্সি নামানোর জন্য সার্ভিস প্রোভাইডার বা এগ্রিগেটরদের আবেদন করতে বলা হয়েছে।
শহরজুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে হাজার হাজার বাইক ট্যাক্সি। কম খরচে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছতে যাত্রীদের ভরসার জায়গাও হয়ে উঠছে। কিন্তু সেই গাড়ির অধিকাংশই বৈধ নয়। অর্থাৎ বাণিজ্যিক গাড়ির যে হলুদ নাম্বার প্লেট লাগে, তা কোনও বাইকেই লাগানো নেই। শহর এবং শহরতলিতে প্রায় হাজার দশেকের বেশি বাইক ট্যাক্সি চলে। পার্ট টাইমেও অনেকে এই কাজ করেন। র্যাপিডো (Rapido), ওলা (Ola), উবেরের (Uber) মতো সার্ভিস প্রোভাইডার সংস্থার অ্যাপ ডাউনলোড করলে নিজের গাড়ির নম্বর তাতে এন্ট্রি করিয়ে নেন। ফলে বুকিং পান। কিন্তু এই পুরো প্রক্রিয়াটাই বেআইনি। কারণ, এতে না আছে সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ, না যাত্রী কোনও সমস্যায় পড়লে তার দায় এগ্রিগেটর নেয়। তাই গোটা প্রক্রিয়াকে আইনি করতেই এবার উদ্যোগী হয়েছে পরিবহণ দপ্তর। আর তার প্রথম কাজই হচ্ছে একটা ভাড়ার তালিকা ঠিক করা।
এখন শহরে চলা এই ধরনের বাইকের বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের কোনও রেজিস্ট্রেশন যেমন নেই, তেমনই বহু চালক আবার বেনামে অ্যাকাউন্ট খুলে অ্যাপ-নির্ভর এই বাইক-ট্যাক্সিগুলি চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ পুলিশের। বহু চালক নিজের লাইসেন্সও দেখাতে পারেন না বলে দাবি ট্র্যাফিক আধিকারিকদের। তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাইক ট্যাক্সির ভাড়ার পরিমাণ অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে অ্যাপ সংস্থাগুলো। যাত্রীরাও পড়ছেন সমস্যায়। বাইক আরোহীদের দাবি, একেকজন চালকের দিনে পাঁচ থেকে ছ’শো টাকা রোজগার। তেলের দাম বাড়ায় তা আরও কমেছে। নিয়ম অনুযায়ী একটি ট্রিপের ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ টাকা অ্যাপ সংস্থাকে দিতে হয়। আর বাকি টাকা পায় চালক। কিন্তু তেলের দাম বাড়ায় সেই রোজগারও কমেছে।
রাজ্য পরিবহণ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার থেকে অ্যাপ-ক্যাবের মতোই কয়েকটি বিধিনিষেধ ঠিক করে দেওয়া হবে বাইক-ট্যাক্সির জন্য। তাতে বলা হবে, বাইক-ট্যাক্সিতে আলাদা হলুদ নম্বর প্লেট লাগাতে হবে। প্রতিটি বাইকে যাত্রীদের জন্য অবশ্যই রাখতে হবে প্যানিক বাটন, থাকবে হেলমেট ইত্যাদি। কলকাতা সাবার্বান বাইক ট্যাক্সি অপারেটর্স ইউনিয়ন সভাপতি (এআইইউটিইউসি) শান্তি ঘোষ বলেন, “বাইক ট্যাক্সিকে নিয়ন্ত্রণে বাঁধতে গেলে আগে তার ভাড়া নির্ধারণ করতে হবে। সেই তালিকাই আগে ঠিক করুক সরকার। সার্ভিস প্রোভাইডার বা এগ্রিগেটর তাতে রাজি হলে তবেই প্রক্রিয়া এগোবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.