ছবি: প্রতীকী
অভিরূপ দাস: ঘর আলো করে এসছে ফুটফুটে কন্যা সন্তান। তারই নাক ফুটো করে সোনার নাকছাবি পরানোর জন্য ঘরোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই ঘটে গেল বিপত্তি। আচমকা সে রিং হাত ফসকে পড়ে যায় ২৮ দিনের শিশুর মুখে। কিছু না বুঝেই গিলে ফেলে সে। কিছুক্ষণ পর থেকেই শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। সেই খুদের প্রাণ বাঁচাল এসএসকেএম হাসপাতাল।
মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) বাসিন্দা জাহিদা বিবি সঙ্গে সঙ্গে সন্তানকে নিয়ে যায় স্থানীয় হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে জানানো হয় এই ধরণের অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা নেই। দ্রুত শিশুটিকে নিয়ে আসা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। বয়স এখনও একমাসও হয়নি। মায়ের দুধ ছাড়া অন্য কিছু খেতে পারে না। শ্বাসনালীতে নাকছাবি আটকে থাকায় বেচারি দুধও টানতে পারছিল না। সেই অবস্থাতেই তাকে কোলে নিয়ে ২০০ কিলোমিটার পাড়ি। শুক্রবার এসএসকেএম-এই ইসোফেগাস এন্ডস্কোপির মাধ্যমে শিশুর প্রাণ বাঁচালেন চিকিৎসকরা। নবজাতকদের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক দীপঙ্কর রায়ের তত্ত্বাবধানেই হয় অস্ত্রোপচার। ডা. রায় জানিয়েছেন, অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল এই অস্ত্রোপচার। ২৮ দিনের বাচ্চা, ওজন মাত্র আড়াই কেজি। দম নিতে পারছিল না স্বাভাবিক ভাবে। নেতিয়ে পড়েছিল একরত্তি শরীরটা। চিকিৎসকরা এক্স-রে করে দেখেন পাতলা নাকছাবিটা গলার নীচের অংশের ইসোফেগাসের দেওয়ালে আটকে ঝুলছে। এন্ডোস্কোপ দিয়ে দেখে তা বের করা হয়। বাচ্চাটি আপাতত আইসিইউতে রয়েছে।
ডা. রায় জানিয়েছেন, একটি সরু নল ঢুকিয়ে দেওয়া হয় গলা দিয়ে। তার সামনে থাকে ক্যামেরার লেন্স। শিশুর গলার ভিতরের ছবি ফুটে ওঠে একটি স্ক্রিনে। তা দেখেই অত্যন্ত ধীর পদক্ষেপে রিংটি বের করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, শিশুটি আপাতত স্থিতিশীল। এই অস্ত্রোপচারের অন্য দুই কান্ডারি হলেন ডা. সুমন দাস এবং ডা. শুভঙ্কর চক্রবর্তী। দুই চিকিৎসক জানিয়েছেন, আপাতত আগামী ৭২ ঘন্টা গভীর পর্যবেক্ষণে রাখা হবে শিশুটিকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.