নিরুফা খাতুন: তিনদিন ধরে জল সরবরাহ ঠিকমতো হচ্ছে না। সময়মতো জল পাচ্ছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। এই অভিযোগে ক্ষোভ বাড়ছিলই উত্তর কলকাতার (North Kolkata) জোড়াবাগান এলাকায়। আর শনিবার, ছটপুজোর (Chhat Puja) দিন সেই ক্ষোভের আগুনে যেন ঘি পড়ল। পুজোর দিনও জলসংকট হওয়ায় রাস্তায় নেমে অবরোধ শুরু করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সকাল ৯টা থেকে এই অবরোধে শামিল হলেন কলকাতা পুরসভার (KMC) ২১ থেকে ২৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। জল ঠিকমতো না পেলে অবরোধ তুলবেন না, এমনই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তাঁরা। তবে এত বড় বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী শশী পাঁজা। তিনি আশ্বাস দিয়ে অবরোধ তুলে দিয়েছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরে বন্ধ কলকাতা পুরসভার পানীয় জল এবং গঙ্গার জলের সরবরাহ। শুধু তাইই নয়, বিশ্বকর্মা পুজোর (Biswakarma Puja) পর থেকে এখানে জল সরবরাহ নিয়ে সমস্যা চলছিল। দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ জানিয়েও কাজ হয়নি। এরপর ছটপুজোর দিনও এমন পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী পথে নেমে এসেছেন। সকাল ৯ টা থেকে দীর্ঘক্ষণ জোড়াবাগান-নিমতলা ঘাট স্ট্রিট এলাকার ক্রসিংয়ে ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা আটকানো ছিল (Road Block)। পানীয় জল না পাওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে বলে দাবি ছিল তাঁদের।
পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠলে ঘটনাস্থলে পৌঁছন স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী শশী পাঁজা (Shashi Panja), ২১ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মীরা হাজরা। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। ২১ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মীরা হাজরার দাবি, ”এখানকার বাসিন্দারা তিনদিন ধরে জল পাচ্ছে না, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। সকালে ২ ঘণ্টা জল দেওয়া হয়েছে। তবে জলের গতি একটু কম। গঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জনের পর কাঠামো ভেসে আসছে। যে কারণে জোড়াবাগান-মল্লিকঘাটে যে জল শোধনাগার আছে, সেখানে জল তোলার মুখে পাইপে বাধা পাচ্ছে। পুরসভার কর্মীরা কাঠামো তুলে ফেলছে। জলের গতি কম থাকায় ওয়ার্ডে জলের গাড়ি দেওয়া হচ্ছে। ছটের জন্য বাড়তি জলের গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোনওরকম অসুবিধা হবে না।” শ্যামপুকুরের বিধায়ক শশী পাঁজা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের বোঝান। ঠিকমতো জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দেন। তাঁর আশ্বাস পেয়ে অবরোধ ওঠে।
এনিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ”বিসর্জনের পর গঙ্গায় প্রতিমার খড়, কাঠামো ভেসে এসে জোড়াবাগানে জলশোধনাগারে ইনটেক পাইপে মুখ আটকে দেয়। জোয়ারের সময় তাই জল উত্তোলন কাজ বন্ধ রাখা হয়। পরে পাইপ পরিষ্কার করে ওই অঞ্চলে পুনরায় জল সরসবরাহ স্বাভাবিক করা হয়।”
দূষণ ঠেকাতে কলকাতায় ঘাটে বিসর্জনের পরই প্রতিমার কাঠামো ক্রেন দিয়ে তুলে নেওয়া হয়। অন্যত্রে এই পরিকাঠামো নেই। পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে কাঠামো ভেসে এসে গঙ্গায় দূষণ ছাড়াচ্ছে। সেইসঙ্গে জলশোধনাগারে পাইপগুলি ক্ষতি করছে। যা নিয়ে চিন্তিত পুরকর্তৃপক্ষ। পরিবেশবিদ স্বাতী নন্দী চক্রবর্তীর কথায়, ”জলে বিসর্জন বন্ধ করলেই তো আর এই ধরনের সমস্যা থাকবে না। দূষণও ছড়াবে না। এক্ষেত্রে একটি পলিসি তৈরি করতে হবে প্রশাসনকে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.