সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইঙ্গিত মিলেছিল ১৯ তারিখ হাওড়ার প্রশাসনিক বৈঠকেই। অর্থ দপ্তরের অুমতি না নিয়ে, শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর মৌখিক অনুমোদনের ভিত্তিতে হাওড়া পুরসভায় একের পর এক অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের ঘটনায় বিদায়ী চেয়ারম্যান রথীন চক্রবর্তীকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেবারই কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, এমনটা বরদাস্ত হবে না। সোমবার নবান্ন থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হল, অর্থ দপ্তরের অনুমতি ছাড়া কোনও পুরসভাতেই কোনও অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা যাবে না। আর তা করা হলে, তাঁদের বেতনের ভার নেবে না রাজ্য সরকার।
১৯ আগস্ট, হাওড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে কাজের পর্যালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই পুর পরিষেবার বেহাল দশার কারণ জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন, প্রথমদিকে অর্থ দপ্তরের অনুমতি ছাড়া প্রকল্পের কাজে হাত দেওয়ায় তা থমকে গিয়েছিল। একথা শুনে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ আরও বাড়তে থাকে। পুরসভায় কাজের নাম করে কেন অর্থদপ্তরের অনুমতি ছাড়াই চুক্তির ভিত্তিতে কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে, তারও জবাবদিহি চান মুখ্যমন্ত্রী। পাশে বসে থাকা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে কার্যত তিরস্কারের সুরেই তিনি এদিকটায় নজর দেওয়ার নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি পুরসভায় অডিট হওয়া উচিত। অর্থদপ্তরের অনুমতি না নিয়ে কাজ করলে এবার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। প্রয়োজনে ফৌজদারি মামলাও দায়ের করা হবে। এপ্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আমি নিজে কখনও অর্থদপ্তর থেকে ফাইল পাশ না করিয়ে কোনও কাজে হাত দিই না। কারণ, সেটাই নিয়ম। আর আপনারা কেন অনুমতি ছাড়াই কাজে হাত দিচ্ছেন? যাদের নিয়োগ করছেন, তাঁরা তো আমাদের দায়িত্বের মধ্যে এসে পড়ছেন। জানেন কি, এঁদের নিয়োগটাই বেআইনি? সরকারের টাকা এভাবে
নিজেদের মতো করে ব্যবহার করতে পারেন না আপনারা।’ তিনি এই হুঁশিয়ারিও দেন, যাতে কেউ বেআইনি কোনও ফাইলে সই না করেন।পুর পরিষেবা দেওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মুখের কথা’য় অস্থায়ী কর্মীদের নিয়োগ করা হয়েছিল, বিদায়ী মেয়র রথীন চক্রবর্তীর কাছে একথা শুনে মেজাজ কার্যত হারিয়ে ফেলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘এসব বলবেন না। সরকারি কাজ কখনও শুধু কথার উপর ভিত্তি করে হতে পারে না। ডোন্ট ইউজ মাই নেম।’
এই বৈঠকের পর সপ্তাহখানেকও কাটেনি। সোমবারই নবান্নের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়, অর্থ দপ্তরের অনুমতি ছাড়া কোথাও কোনও অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা যাবে না। যে কোনও স্তরে কাজের জন্য কর্মী নিয়োগ করতে হলেও অর্থ দপ্তরের অনুমোদন লাগবে। অন্যথায় কোনও কর্মীর বেতনের দায়িত্ব নেবেন না পুর দপ্তর। আগামী বছর রাজ্যের পুরসভা নির্বাচন। তার আগে বিভিন্ন পুরসভায় বেআইনি কর্মী নিয়োগ রুখতে নবান্নের এমন কড়া দাওয়াইয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মত, নিজেদের ইমেজ বাঁচাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সিদ্ধান্ত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.