রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: চিনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কড়া বার্তা দিলেন কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শংকর (S Jaisankar)। তাঁর সাফ কথা, কোনও দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক একতরফাভাবে হয় না। হাত মেলাতে গেলে দুজনকেই হাত বাড়াতে হয়। ১৯৯৩ ও ১৯৯৬ সালে চুক্তি লঙ্ঘন করে স্থিতিশীলতা নষ্ট করেছে চিন (China)। একইসঙ্গে আত্মনির্ভর ভারতের হয়ে সওয়াল করে জয়শংকর বলেন, ‘‘অন্য দেশ আমাদের নির্দেশ দেবে না, কোন দেশের সঙ্গে আমাদের কী সম্পর্ক থাকবে, আমরাই সেটা ঠিক করব।’’
একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘খোলা হাওয়া’ আয়োজিত শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা উপলক্ষে শুক্রবার কলকাতায় এসেছিলেন বিদেশমন্ত্রী। এই উপলক্ষে কলকাতায় আইসিসিআর (ICCR) অডিটোরিয়ামে ‘নতুন ভারত ও বিশ্ব’- এই সম্পর্কিত একটি আলোচনাসভায় অংশ নেন তিনি। এই আলোচনাসভায় ছিলেন ‘খোলা হাওয়া’ সংগঠনের সভাপতি প্রাক্তন সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত ও সম্পাদক শিশির বাজোরিয়া, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইনস্টিটিউট অফ এশিয়ান স্টাডিজের ডিরেক্টর স্বরূপ প্রসাদ ঘোষ। এদিন শ্রোতার আসনে ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ি। নিজেকে তিনি কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রীর গুণমুগ্ধ বলে পরিচয় দেন।
প্রশ্নোত্তর পর্বে রাশিয়ার (Russia) সঙ্গে ভারতের এতদিনের সুসম্পর্ক সত্বেও এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারত সম্পর্ক তৈরিতে কেন উদ্যোগী? জয়শংকরের কাছে এই প্রশ্ন রাখেন নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ি। উত্তরে বিদেশমন্ত্রী বলেন, ”রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক সবচেয়ে স্থিতিশীল। ভারত-রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের সঙ্গেই সম্পর্ক তৈরিতে আগ্রহী।” সেই সঙ্গে চিনের সঙ্গে কাজের সম্পর্ক তৈরি করা যায় কিনা সেই প্রশ্নে বিদেশমন্ত্রীর জবাব, হাত মেলাতে গেলে দু’জনকেই হাত বাড়াতে হয়। তাঁর কথায়, ‘‘শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ছিলেন সত্যিকারের জাতীয়তাবাদী। শ্যামাপ্রসাদ বারবার বলেছিলেন, পাকিস্তান সম্পর্কে আমাদের আচরণ অত্যন্ত দুর্বল। যা সমগ্র ভারতবাসী ২৬/১১ হামলার পর বুঝতে পারে।’’
একইসঙ্গে বিদেশমন্ত্রী যোগ করেন, ‘‘ক্রস বর্ডার টেকনিক নিয়ে আমাদের নীতি মোটেই তেমন জোরদার ছিল না। আমরা মোটেই চোখে চোখ রেখে লড়তাম না। ভারত এই মনোভাবে পরিবর্তন এনেছে। উরি বা বালাকোট দেখিয়ে দিয়েছে যে, চিন্তাভাবনায় বদল এসেছে।’’ কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কৃতিত্ব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী। বলেন, ‘‘শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় কখনোই চাননি এক দেশ, দুই নিশান, দুই প্রধান, দুই বিধান। ৩৭০ ধারা অবলুপ্তি শ্যামাপ্রসাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। ২০১৯ সালের ৫ আগস্টের আগে কেউ এই সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি।’’
জয়শংকরের আরও বক্তব্য, তিনি রাজীব গান্ধী ও মনমোহন সিংয়ের সঙ্গেও মার্কিন সফরে গিয়েছিলেন। কিন্তু এবার নরেন্দ্র মোদির সফর একেবারেই ভিন্নমাত্রার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সম্পর্ক এখন অনেক পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও মর্যাদার উপর দাঁড়িয়ে। বিদেশনীতির নানা বিষয় আলোচনার পাশাপাশি তিস্তার (Tista) জলবণ্টন প্রসঙ্গ এদি রাজ্যের উপরই ছেড়ে দিয়েছেন মোদি সরকারের ক্যাবিনেটের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.