ছবি: প্রতীকী
রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: নিচুস্তরে সংগঠন ভেঙে পড়েছে। বহু নেতা, কর্মী নিষ্ক্রিয়। ফলে আন্দোলনে থাকছে না দল। বড়সড় কর্মসূচি নিতেও দশবার ভাবতে হচ্ছে বিজেপির (BJP) রাজ্য নেতাদের। এবার দলের সাংগঠনিক বৈঠকে এই বিষয়ে সরব হলেন কয়েকজন বিধায়ক। শনিবার ন্যাশনাল লাইব্রেরি অডিটোরিয়ামে রাজ্য পদাধিকারী, দলের জেলা সভাপতি, জেলা ও জোন ইনচার্জদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। দলীয় সূত্রে খবর, সেই বৈঠকে উত্তরবঙ্গের (North Bengal) এক বিধায়ক-সহ আরও দু’জন দলের সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়ে বলেন।
মঞ্চে তখন উপস্থিত সদ্য সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সতীশ ধন্দ, সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদাররা। ওই বিধায়করা বলেন, বিভিন্ন কারণে সংগঠনের দুর্বলতা রয়েছে। রাস্তায় নেমে আন্দোলন হচ্ছে না। আরও বেশি করে পথে নেমে আন্দোলন কর্মসূচি নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি মণ্ডল কমিটিও যে এখনও গড়ে তোলা যায়নি সেই বিষয়টিও বৈঠকে ওঠে। দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে তমলুক সাংগঠনিক জেলায় চারটি মণ্ডলের সভাপতির নাম ঘোষণা করা যায়নি। সুকান্ত-অমিতাভরা চারটি মণ্ডলের সভাপতির নাম ঘোষণা করে দেন। পরে শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) মত না থাকায় তা স্থগিত করে দেওয়া হয়। ওই জেলার শুভেন্দুর টিমের দুই বিধায়ক আপত্তি তুলেছিলেন রাজ্য পার্টির ঘোষিত মণ্ডল সভাপতিদের নাম নিয়ে।
এদিন তমলুকে (Tamluk) চারটি মণ্ডল সভাপতির নাম ঘোষণা করা যাচ্ছে না বলে বৈঠকের মধ্যেই বিষয়টি উল্লেখ করেন সংশ্লিষ্ট জেলার সভাপতি। সংগঠনের অবস্থা তলানিতে। কিন্তু এই সত্যটা চেপে গিয়ে বিজেপির বঙ্গ শাখার তরফে কেন্দ্রীয় নেতাদের বারবার ভুল রিপোর্ট দিয়ে ‘মিসগাইড’ করা হয়েছে। দলের ক্ষমতাসীন শিবিরের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধরা এমনও অভিযোগ তুলে আসছে। আর সেই অভিযোগ যে সত্য, সেটা কার্যত এদিন স্বীকার করে নিল রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
সূত্রের খবর, এদিন দলের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী জেলা সভাপতিদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সাংগঠনিক রিপোর্টে জল মেশাবেন না। মনিটরিং চলছে। এদিন বৈঠকে সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় ছিলেন না। দলের রাজ্য সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলেই খবর। অন্যত্র দলীয় কাজে ব্যস্ত থাকায় বৈঠকে ছিলেন না শুভেন্দু অধিকারীও। দলে অবশ্য প্রশ্ন, সংগঠনের দায়িত্ব পেয়ে সতীশ ধন্দের প্রথম বৈঠকে কেন থাকলেন না শুভেন্দু?
এদিন রাজ্য নেতৃত্ব অনুরোধ করা সত্ত্বেও সতীশ ধন্দ (Satish Dhond) কোনও বক্তব্য রাখতে চাননি। রাজ্য নেতাদের কিছুটা ধন্দেই রেখে দিলেন তিনি। এদিকে, দলের প্রবাস কর্মসূচিতে দমদম লোকসভার দায়িত্ব পাওয়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া কলকাতায় এসেছেন। বাগুইআটিতে দমদম লোকসভার নেতা, কর্মী ও আরএসএসের কর্মীদের নিয়ে একটি বৈঠকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, দলে মিলেমিশে কাজ করতে হবে।
অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানও এন্টালিতে এক দলীয় কর্মীর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজে গিয়েছিলেন। এদিন রাজ্য বিজেপির বৈঠকে একাধিক কর্মসূচি ঠিক হয়েছে। সংসদের অধিবেশন শেষ হলে আগস্ট মাসে ফের রাজ্যে আসতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) । উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে দু’টি আলাদা জনসভা করতে পারেন তিনি। সাংগঠনিক বৈঠকও করবেন। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাংলায় তেরঙ্গা যাত্রার কর্মসূচি নিয়েছে গেরুয়া শিবির।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.