স্টাফ রিপোর্টার: ব্যাঙ্কের পর এবার এটিএম৷ এক তৃতীয়াংশ এটিএমের ঝাঁপ দুপুর দুটো অবধি খোলেইনি৷ বাকিগুলির সামনে দীর্ঘলাইন৷ তারপর দেখা যাচ্ছে কোথাও লিঙ্ক নেই৷ কোথাও টাকা শেষ৷ অথচ কথা ছিল শুক্রবার সকাল থেকেই খুলে যাবে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএমগুলি৷ টাকা মিলবে৷ কিন্তু সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র রাজ্যজুড়ে৷ কলকাতা ও শহরতলিতে ভোগান্তি চরমে৷ হাতে গোনা কিছু এটিএম খোলা থাকলেও তাতে এখনও টাকা এসে পৌঁছয়নি৷ ঝুলছে নো-ক্যাশ বোর্ড৷ টাকা তোলা যাচ্ছে না৷ জেলার এটিএমগুলির অবস্থা আরও শোচনীয়৷ খোলেনি একাধিক এটিএমই৷ বাধ্য হয়ে ব্যাঙ্কমুখী হচ্ছেন টাকা তুলতে আসা গ্রাহকরা৷
এসবিআইয়ের তরফে এদিন জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে অন্তত দশ দিন সময় লাগবে৷ ইউবিআয়ের তরফে বলা হয়েছে, জেলার এটিএমগুলিতে টাকা পৌঁছতে বেশ খানিকটা সময় লাগবে৷ যদিও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির দাবি, বিকেলের পর থেকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবে৷ আরও নতুন টাকা ততক্ষণে ব্যাঙ্কে এসে যাবে৷ গ্রাহকদেরও বিলি করা হবে৷ তবে এখনই এটিএম থেকে মিলবে না ২০০০ টাকার নতুন নোট৷ ১০০ টাকার নোটই পাওয়া যাবে এটিএম থেকে৷
বৃহস্পতিবার টাকা বদলাতে এসে ব্যাঙ্কগুলিতে চরম হয়রানির শিকার হয়েছেন গ্রাহকরা৷ অনেকে ব্যাঙ্কের ঝঞ্ঝাট এড়াতে অপেক্ষা করে ছিলেন শুক্রবারের জন্য৷ এটিএম খুললে টাকা তুলবেন৷ তাই প্রায় ভোর থেকে এটিএমের সামনে ভিড় জমিয়েছিলেন গ্রাহকরা৷ কিন্তু বেলা পর্যন্ত খুলল না এসবিআই, ইউবিআই-সহ একাধিক বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএম৷ এছাড়াও রয়েছে অন্য এক সমস্যা৷ সাধারণ নিয়মে যে কোনও এটিএমে যে কোনও ব্যাঙ্কের এটিএম কার্ড গ্রাহ্য৷ কিন্তু এদিন তেমনটা হচ্ছে না বলে অভিযোগ৷ পার্ক সার্কাস, ঢাকুরিয়া-সহ শহরের একাধিক জায়গায় এসবিআই ই-কাউন্টারের সামনে ভিড় জমানো গ্রাহকদের অভিযোগ, অন্য ব্যাঙ্কের এটিএম কার্ডে টাকা তোলা যাচ্ছে না৷ এসবিআইয়ের এটিএম কার্ড থাকলে তবেই এসবিআইয়ের এটিএম থেকে টাকা তোলা যাচ্ছে৷ অন্য ব্যাঙ্কের কার্ড গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না৷ এমনটাই অভিযোগ করছেন গ্রাহকরা৷ বলছেন, “সকাল সাতটা থেকে এটিএমে লাইন দিয়েছিলেন৷ ভেবেছিলাম এটিএম খুললে টাকা তোলা যাবে৷ ৯ টা নাগাদ এটিএম খোলে৷ তখন আমার সামনে প্রায় পঞ্চাশ জনের লাইন৷
অবশেষে যখন এটিএমে ঢুকতে পারলাম গিয়ে দেখলাম অন্য ব্যাঙ্কের কার্ড ‘নট অ্যাকসেপটেড’ দেখিয়ে দিল৷ কী করব বুঝতে পারছি না৷ এখন ব্যাঙ্কে যাচ্ছি৷” সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ একই চিত্র ধরা পড়েছে৷ কাঁকুড়গাছি, শোভাবাজার, শ্যামবাজার, গিরিশ পার্ক, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, ধর্মতলা থেকে শুরু করে বালিগঞ্জ, ঢাকুরিয়া, টালিগঞ্জ, পাটুলি, যাদবপুর, সন্তোষপুরের একই ছবি৷ এটিএমে টাকা তুলতে এসে চূড়ান্ত হয়রানির শিকার সাধারণ মানুষ৷ এটিএম বন্ধ দেখে ফের ব্যাঙ্কমুখী হচ্ছেন গ্রাহক৷ কারণ টাকা চাই৷ বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও এমনিতেই চাপ ব্যাঙ্কগুলিতে৷ তারপর এটিএমে টাকা তুলতে না পারা মানুষ জড়ো হওয়ায় ব্যাঙ্কগুলির চাপ আরও বাড়ছে৷ বেলা গড়াতেই লম্বা লাইন সরকারি ব্যাঙ্কগুলির সামনে৷ একই চিত্র জেলাগুলিতেও৷ বারাকপুর শিল্পাঞ্চলে এটিএমগুলির সামনে সকাল থেকেই লম্বা লাইন৷ খোলেনি একাধিক এটিএম৷ হন্যে হয়ে চালু এটিএমের খোঁজে সকাল থেকে এপ্রান্ত ওপ্রান্ত করে বেড়াচ্ছেন গ্রাহকরা৷ ভাটপাড়া, নৈহাটিতেও একটি অবস্থা৷ বারাসত, মধ্যমগ্রামেও ব্যাঙ্ক-এটিএমগুলির সামনে ব্যাপক লাইন৷ বাগুইআঁটি চত্বরে কাজ করছে না কোনও এটিএম৷ দুর্বিসহ অবস্থা তথ্যপ্রযুক্তি নগরীর৷ সল্টলেকে কোনও এটিএম কাজ করছে না৷ টাকা তুলতে সকাল থেকে ভিড় জমিয়েছেন সাধারণ মানুষ৷ তবে একাধিক এটিএমে এখনও টাকাই এসে পৌঁছয়নি৷ একই অবস্থা দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর, বারুইপুরেও৷ সকাল থেকে টাকা তুলতে লম্বা লাইন এটিএমের সামনে৷ নদিয়ার কল্যাণী শিল্পাঞ্চলেও দুর্ভোগ চরমে৷ হয়রানির স্বীকার ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ৷ হুগলির ছবিটাও কমবেশি এক রকম৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.