কৃষ্ণকুমার দাস: মুখে মাস্ক না থাকলে পুজোর বাজারে (Puja Marketing) কেনা-বেচা, দুই-ই নিষিদ্ধ। মহানগরেরর সমস্ত জোনে যে হকার বা দোকানদার মাস্কহীন ক্রেতাকে সামগ্রী বিক্রি করবেন তাঁর বিরুদ্ধে অতিমারী আইনেই (Pandemic Law) ব্যবস্থা নেবে কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। শুধু তাই নয়, শহরের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি বাসে মাস্কহীন যাত্রীদের উঠতে দেবেন না কন্ডাক্টররা। পুলিশ ও বণিকসভার সঙ্গে বৈঠক শেষে করোনার তৃতীয় ঢেউ (Corona Third Wave) রুখতে শুক্রবার এমনই নিষেধাজ্ঞা জারির কথা জানান পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ও পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)।
রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রীর কথায়, “সমস্ত বাসের গেটে ও বাজার বা দোকানের প্রবেশ পথে ‘নো এন্ট্রি উইদাউট মাস্ক’ লেখা স্টিকার দেওয়া হচ্ছে। আর যে সমস্ত হকাররা নিজেরা মাস্ক পরবেন না বা মাস্কহীনদের মালপত্র বিক্রি করবেন তাঁদের রাস্তা থেকেই তুলে দেবে পুলিশ।” বাসের দরজায় স্টিকার চালু নিয়ে এদিনই নিজের দপ্তরের শীর্ষকর্তাদের নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
কোভিডের (COVID-19) তৃতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ শুরুর আশঙ্কায় কলকাতাবাসী। বিশেষ করে পুজোর (Durga Puja 2021) বাজারের ভিড় থেকে যাতে করোনা (Coronavirus) নতুন করে ছড়িয়ে না পড়ে তা রুখতেই এখন পুলিশ ও পুরসভা (KMC) মরিয়া হয়ে রাস্তায় নেমেছে।
এদিন পুলিশ, বণিকসভা, বাজার সমিতি ও পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ অফিসারদের নিয়ে তৃতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ সামাল দিতে প্রস্তুতি বৈঠক করেন মুখ্যপ্রশাসক। বৈঠকে নিউমার্কেট (New Market Kolkata), হাতিবাগান, গড়িয়াহাটের মতো কেনাকাটার মার্কেট ছাড়া নামী শপিং মলে পুলিশ ও পুরসভা মাস্ক পরার পাশাপাশি স্যানিটাইজেশন নিয়ে বিশেষ নজরদারি চালাবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। পরে ফিরহাদ বলেন, “প্রতিটি বাজার ও দোকান খোলা এবং বন্ধের সময় প্রতিদিন স্যানিটাইজ বাধ্যতামূলক হচ্ছে। পুরবাজারে পুরসভা এবং শপিং মল বা বেসরকারি বাজারে কর্তৃপক্ষ ও সমিতিকেই স্যানিটাইজ করতে হবে।”
তবে প্রথমে অতিমারী আইন মেনে কড়া ব্যবস্থা নিতে অর্থাৎ জরিমানা বা গ্রেপ্তারের বিরোধী মুখ্যপ্রশাসক। তিনি বলেন, “প্রথমে ক্রেতা ও বিক্রেতাকে সতর্ক করা হবে, সচেতনতার কর্মসূচি নেবে পুলিশ এবং পুরসভা। কয়েকদিন পরে যদি হকার বা ক্রেতারা সংক্রমণের বিপদ জেনেও উদাসীন থাকে তবে পুলিশ অতিমারী আইনে কড়া ব্যবস্থা নেবে।”
তৃতীয় ঢেউ সামাল দেওয়া নিয়ে পুরভবনে এদিন বৈঠকে শিশু ও প্রবীণদের সুরক্ষা নিয়ে বিশেষভাবে আলোচনা হয়। শিশুদের জন্য ইতিমধ্যে পুরচিকিৎসকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আক্রান্ত শিশুদের মায়ের সঙ্গে থাকার জন্য সেফ হোম ও অন্যান্য প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। বৈঠক শেষ হতেই দেখা যায়, নিউমার্কেটে থানার ওসি মাইক নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাকে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক জানিয়ে আবেদন রাখছেন। পুলিশ আসতে তড়িঘড়ি অধিকাংশ হকার এবং ক্রেতারা পকেট অথবা ব্যাগ থেকে মাস্ক বের করে পরতে শুরু করেন। নিউমার্কেটে শপিং করতে আসা সম্পন্ন ও সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্যদেরও মাস্কহীন হয়ে ঘুরতে দেখে হতাশ হয়েছেন পুলিশকর্তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.