সুব্রত বিশ্বাস: আগামী সোমবার থেকে হাওড়া (Howrah) ডিভিশনের ট্রেনে আর হকারি নয়। শনিবার হাওড়ার আরপিএফের (RPF) সিনিয়র কমান্ড্যান্ট প্রতিটি পোস্টের ইন্সপেক্টরদের এই মর্মে লিখিত নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এবার চলন্ত ট্রেনে হকার উঠলেই সংশ্লিষ্ট পোস্টের ইন্সপেক্টরকে দায়ী করে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ধরে নেওয়া হবে, হকারিতে তাঁদের সহযোগিতা রয়েছে। আধিকারিকের এমন নির্দেশে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে আরপিএফ বিভাগে। বিভাগীয় কর্মীদের আশঙ্কা, এই ধরনের অতি সক্রিয়তায় রেল চত্বরে বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে।
আইএনটিটিইউসির (INTTUC) রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কিল মারার গোঁসাই আরপিএফের এই নীতির বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন গড়ে তুলবে। এর জন্য হকার নেতাদের সঙ্গে বসে নীতি নির্ধারণ করে আন্দোলনকে গণ-আন্দোলনের রূপ দেওয়া হবে। হাজার হাজার হকার লকডাউনের (Lockdown) কোপে পড়ে এমনিতেই অসহায় পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। তার উপর এই ‘ফতোয়া’ কখনওই মেনে নেওয়া যাবে না।’’
গত ১৭ আগস্ট ব্যান্ডেল থেকে আরপিএফের এক বিশেষ টিম ট্রেনে হকারদের ধরপাকড় শুরু করে। এরপর বৈঁচিগ্রামে পরিস্থতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। হকাররা আরপিএফকে মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে। আরপিএফের এই অভিযোগের ভিত্তিতে সাত হকারকে গ্রেপ্তার করা হলেও তাঁরা আদালত থেকে জামিন পান। পরিস্থিতি অনুধাবন করে এরপর অ্যান্টি হকিং স্কোয়াডের কর্মী সংখ্যা ১২ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়েছে। যদিও সেই স্কোয়াড মাঠে নামার আগে পোস্ট ইন্সপেক্টরদের দায়িত্বে মেপে নিতে চাইছেন আরপিএফ আধিকারিকরা।
এ বিষয়ে হাওড়ার সিনিয়র ডিএসসি অজয়প্রকাশ দুবে বলেন, ”রেল বোর্ডের নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। রেল চত্বরে হকারি বেআইনি। হকারদের ‘অত্যাচার’ নিয়ে ইদানিং রেলের কাছে যাত্রীদের অভিযোগ আসছে। ফলে হকারদের সরানো অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। পোস্ট ইন্সপেক্টরদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ট্রেনে হকারি বন্ধ করার জন্য। এই নির্দেশ না মানা হলে বিশেষ বাহিনীকে তখন নামানো হবে।” আইএনটিটিইউসির হাওড়ার (শহর) সভাপতি প্রাণকৃষ্ণ মজুমদার রেলের নীতির সমালোচনা করে বলেন, ”এই অত্যাচার বর্বরোচিত। খেতে না পাওয়া মানুষগুলোকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা এসব। যা আমরা রুখবই। রেল অবরোধ করে এর জবাব দেওয়া হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.