সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গে লকডাউনের (Lockdown) আয়ুকাল বৃদ্ধির ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কয়েকদিন ধরেই পশ্চিমবঙ্গেও লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি হতে পারে এই কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল। আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর বিকেলের রুটিন বৈঠকে সেই সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হল লকডাউনের আয়ুকাল। ভারতে ক্লাস্টার সংক্রমণের পর্যায়ে পৌঁছনোর ফলে সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউনকেই একমাত্র দাওয়াই হিসেবে তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
১৪ এপ্রিলের পরে কী উঠবে লকডাউন? এই প্রশ্ন লোকের মুখে মুখে ফিরলেও উত্তরটা সকলেই আন্দাজ করতে পারছিলেন। শুধু অপেক্ষা ছিল সময়ের ও মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার। আজ বিকেলে রুটিন বৈঠকে বসে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের পক্ষে সহমত পোষণ করে রাজ্যেও ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে রাজ্য সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি বিষয়ে আলোকপাত করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্য়মন্ত্রী জানান,” সংক্রমণ রুখতে আন্তর্জাতিক বিমান চালানো যাবে না। কারণ বাংলা বিপদে পড়লে বাংলার সংস্পর্ষে থাকা সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিও সমস্যায় পড়বে। রাজ্যের কয়েকটি স্থানকে বিশেষভাবে চিহ্নিত করে সেখানে লকডাউনের মধ্যেই আরও কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করতে হবে।” তবে এই বিশেষস্থানগুলিতে সাধারণের বাজার-হাট করতে কোনও সমস্যা হবে না বলেই আশ্বাস দেন তিনি। তিনি জানান, “খোলা থাকবে মুদি দোকান। ৩টি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। তাদের মাধ্যমেই এইস্থানগুলিতে নজরদারি চালানো হবে। শুধুমাত্র জমায়েত এড়াতে ও সংক্রমণকে ঠেকাতেই এই স্থানগুলিকে চিহ্নিত করা হবে। ” ‘তবে রাজ্য়ের এই সংক্রমণের স্থানগুলিকে ‘হটস্পট’ বলে নয় এই স্থানগুলিকে ‘মাইক্রো প্ল্যানিং’ বলেই উল্লেখ করতে বলেন। রাজ্যে অত্যাবশকীয় পণ্য মজুতের পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়া কোনও দূরপাল্লার ট্রেন না চালানোর আবেদন করেন তিনি। তবে সংক্রমণ রুখতে মুখ্যমন্ত্রী বারংবার পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সঙ্গে মানবিক হওয়ার অনুরোধ করেন। লকডাউনে জনসাধারণের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে বলেন। রাজ্যের মানুষের খাবারের ধরণের কথা মাথায় রেখে বেকারি খোলার ও অনুমতি দিয়েছেন। তবে নিয়ম না মানলে যে তিনি কড়া হাতে হাল ধরবেন সেই হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।
লকডাউনে বাংলার মানুষকে সুবিধা দিতে সকাল ১০টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত বাজার খোলা রাখার অনুমতি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে গুজবে কান না দিয়ে জনসাধারণকে আশ্বাস দেন প্রতিটি বাজার খোলা থাকবে। কোথাও কোনও বাজার বন্ধ করা হবে না। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সামগ্রী ডেলিভারি করাতেও ছাড় দিয়েছেন তিনি। লকডাউনের পরিস্থিতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাতাসে তাপমাত্রার পারদের বৃদ্ধি পাওয়ায় ১০ জুন পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরই মধ্যে স্কুল-কলেজগুলি স্যানিটাইজ করা হবে। পরে আলোচনা করে শিক্ষাপ্রতিষ্টাগুলি খোলার দিন ঘোষণা করা হবে। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় আতঙ্কিত হয়ে নয় সকলকে বাড়িতে থেকেই লড়াই চালানোর পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.