অভিরূপ দাস: সামান্য জ্বর সর্দি কাশি রয়েছে। তবে তা ঋতুপরিবর্তনের কারণে। ফি বছরের মতো। অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত একজন শিশুও নেই। শহরঘুরে সমীক্ষা চালিয়ে মঙ্গলবার তথ্য দিল কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ।
ফেব্রুয়ারির শুরুতেই কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডে সমীক্ষা শুরু করেছিল কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা। ৭০০ আশাকর্মী রয়েছেন কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডে। এছাড়াও রয়েছেন নার্স, ১০০ দিনের স্বাস্থ্যকর্মীরা। প্রত্যেক বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে শিশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। পুরসভার অনলাইন পরিকাঠামোর মাধ্যমে ওয়ার্ডের সমীক্ষা এখন মূল ভবনে বসেই দেখতে পারেন মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) সহ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।
মঙ্গলবার ডেপুটি মেয়র তথা মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, “এই মুহূর্তে অ্যাডিনো নিয়ে অনেক অভিভাবক আতঙ্কিত। কিন্তু আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, কলকাতার একজন শিশুও অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত নয়। কারণ আমরা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়িতে বাড়িতে পরিদর্শনে গিয়েছে। তথ্য সংগ্রহ করেছে শিশুদের স্বাস্থ্য নিয়ে। দিয়েছে উপযুক্ত পরামর্শ। দেখা গিয়েছে কিছু শিশুর সর্দি, কাশি রয়েছে। তাদের প্রাইমারি হেলথ সেন্টারে নিয়ে এসে বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া হয়েছে।”
ডেপুটি মেয়রের কথায়, শিশুদের সামান্য জ্বর সর্দি কাশি থাকলেও একজন শিশুও আক্রান্ত হয়নি অ্যাডিনো ভাইরাসে। একাধিক শিশু হাসপাতালে যারা ফুসফুসের সংক্রমণে তারা সিংহভাগই ভিনরাজ্যের বলে জানিয়েছেন, কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য)। ডেপুটি মেয়রের কথায়, ভিনরাজ্য থেকে ঘুরে এসে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। কিন্তু কলকাতায় অ্যাডিনো ভাইরাসের একজন রোগীও পাওয়া যায়নি।
অ্যাডিনো ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক কমেনি অভিভাবকদের। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অনেক অভিভাবক জ্বর হলেও বাচ্চাকে চিকিৎসকের চেম্বারে নিয়ে আসতে ভয় পাচ্ছেন। ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের ডা. জয়দেব রায়ের কথায়, আমাকে একাধিক অভিভাবক ফোন করে জিজ্ঞেস করছে, ‘‘আপনার ওখানে অ্যাডিনো ভাইরাসের রোগী নেই তো?’’ শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আলোর থেকেও দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে আতঙ্ক। কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের এই পরিসংখ্যান সেই আতঙ্কে বেড়ি পড়াবে বলেই আশা করছেন চিকিৎসকরা।
ইতিমধ্যেই জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা ‘ইকো ইন্ডিয়া’ নামক এক সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে কলকাতা পুরসভা। তাদের মাধ্যমে দেশের তাবড় স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে পুরসভার চিকিৎসকদের। ডেপুটি মেয়র জানিয়েছেন, পুরসভার অনেক মেডিক্যাল অফিসার শুধু এমবিবিএস করেই কাজে যোগ দিয়েছেন। ফলে তাদের অনেক বিষয়ে এখনও যথেষ্ট জ্ঞান নেই। সেক্ষেত্রে দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসদের মাধ্যমে তাদের ট্রেনিং চলছে। ডায়বেটিসের সেকেলে চিকিৎসা পদ্ধতি এখন অতীত। আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির কৌশল শেখানো হচ্ছে পুরসভার চিকিৎসকদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.