কৃষ্ণকুমার দাস: আত্মশক্তি জাগরণে রবিবার রাতে বাড়ির বৈদ্যুতিন আলো নিভিয়ে প্রদীপ জ্বালানোর ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দেশজুড়ে সকলে একই সময় বাড়ির আলো নিভিয়ে দিলে, বিপর্যয় ঘটতে পারে। এমন আশঙ্কা করছিলেন পাওয়ার গ্রিড কর্তারা। বাড়ছিল আতঙ্কও। এমন পরিস্থিতিতে শনিবার পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে ফোন করে আস্বস্ত করলেন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী আর কে সিং। আশ্বস্ত করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী আলো নেভানোর আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু বাকি বৈদ্যুতিন যন্ত্র চলবে। ফলে বিদ্যুতের চাহিদা এমনকিছু কমবে না। আর তাই বিপর্যয়ের কোনও সম্ভাবনাও নেই। তবে গ্রিড কর্তারা আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দিতে পারছেন না। তাঁদের কথায়, লকডাউনের জেরে এমনিতেই শিল্পক্ষেত্রে বিদ্যুতের চাহিদা তলানিতে ঠেকেছে। উপরন্তু গেরস্থালি ক্ষেত্রে এক ধাক্কায় বিদ্যুতের চাহিদা অনেকটা কমে গেলে বিপর্যয়ের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
সলকডাউনে দেশবাসীর মনোবল বৃদ্ধিতে নয়া দাওয়াই দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। আগামী রবিবার রাত ৯টায় ঘরের সমস্ত আলো নিভিয়ে নিজের বাড়ির বারান্দায় এসে প্রদীপ, মোমবাতি বা টর্চের আলো জ্বালাতে ও একযোগে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। কিন্তু মোদির এই ঘোষণায় প্রমাদ গুনছেন দেশের পাওয়ার গ্রিডগুলির কর্তারা। তাঁদের আশঙ্কা, হঠাৎ দেশজুড়ে সবাই বাড়ির আলো নেভালে আচমকা জোরাল ধাক্কা খেতে পারে পাওয়ার গ্রিড। আবার ৯ মিনিট পর সবাই একসাথে আলো জ্বালিয়ে দেবেন, সেক্ষেত্রে আবার আগের মতোই বিদ্যুতের স্রোত প্রয়োজন হবে। চাহিদার এই টানাপড়েনে ঘটতে পারে বড়সড় বিপর্যয়। এই ঘটনার ফলে দেশে ব্ল্যাক আউট হয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন গ্রিড কর্তারা। তেমন কিছু ঘটবে না বলেই আশ্বাস দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আর কে সিং।
ফোনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আর কে সিং বলেন, “রবিবার রাত ন’টায় সমস্ত আলো নিভে গেলে মাত্র ১০ শতাংশ কম বিদ্যুৎ খরচ হবে। ওই সময়, টিভি, ফ্রিজ, এসি থেকে শুরু করে বাকি সমস্ত যন্ত্র চলবে। তাই বিদ্যুৎ পরিকাঠামো ভেঙে পড়ার কোনও কারণ নেই।” এদিন তিনি শোভনদেব ছাড়াও রাজ্যের বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্রের প্রধান আধিকারিকের সঙ্গেও কথা বলেন।
তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর আশ্বাসে আতঙ্ক যে একেবারে কেটে যাচ্ছে তা কিন্তু নয়। গ্রিড রক্ষণাবেক্ষণের চিফ ইঞ্জিনিয়ার অর্ণব ভট্টাচার্য বলছেন, “লকডাউনের জেরে শিল্প উৎপাদন বন্ধ। ফলে বিদ্যুতের চাহিদা এমনিতেই কম। গ্রিড সঠিকভাবে কার্যকর রাখতে গেলে ৪৯.৫ হার্জ থেকে ৫০.৫ হার্জ বিদ্যুৎ সরবরাহ রাখতে হবে। কিন্তু সমস্ত আলো নিভিয়ে দিলে এই মাপকাঠি বজায় রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। ফলে গ্রিড বসে গিয়ে বড়সড় বিপর্যয় দেখা দিতেই পারে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.