অর্ণব আইচ: কোনওমতে নিজের নাম লিখতে পারে। কিন্তু মোবাইলে সার্চ ইঞ্জিন খুলে সহজে বের করত চাইল্ড পর্নোগ্রাফির ভিডিও। যা ছড়ানো বা ডাউনলোড করা রীতিমতো অপরাধ। অনায়াসে এই অপরাধ করত জোড়াবাগানে নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন করে খুনে অভিযুক্ত বহুতলের কেয়ারটেকার রামকুমার। এই তথ্য অবাক করছে তদন্তকারীদের।
রামকুমারের দাবি, তার বাড়ি ঝাড়খণ্ডের গিরিডিতে। অথচ তার আসল পরিচয় নিয়ে ধন্দে রয়েছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। ঝাড়খণ্ড বা অন্য কোথাও কোনও অপরাধ ঘটিয়ে কলকাতায় পালিয়ে এসেছিল কি না, তা নিয়েও পুলিশ সংশয়ে। ফলে সে ‘দাগি’ অপরাধী, এমন সম্ভাবনা গোয়েন্দা পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না। সেই কারণে এবার গিরিডির পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চলেছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দাদের সূত্র জানিয়েছে, কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে ঝাড়খণ্ডের পুলিশকে অনুরোধ করা হবে, তার সম্পর্কে তথ্য জানাতে। জেরার সময় রামকুমার সহজে ভাঙতে চায়নি। পুলিশের কাছে অপরাধ স্বীকার করার পরও আদালতে দাঁড়িয়ে বলেছে, সে কিছু করেনি। পুলিশ তাকে অকারণে ধরে নিয়ে এসেছে। লালবাজারে জেরা করার সময় রামকুমারের বক্তব্যে বেশ কিছু অসঙ্গতি পাচ্ছেন গোয়েন্দারা। নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন করে খুনের মতো অপরাধ করার পরও তার কোনও অনুতাপ নেই। তাই মনে করা হচ্ছে, আগেও কোনও অপরাধ করেছে। বছর দশেক ধরে কলকাতায় থাকলেও এর আগে সে কী কাজ করত, কোথায় থাকত, তা নিয়ে পুলিশ ধন্দে রয়েছে। সেই কারণেই ঝাড়খণ্ড পুলিশের মাধ্যমে তার বাড়ির লোকেদের সঙ্গে কথা বলতে চান গোয়েন্দারা।
এক আধিকারিকের কথায়, রামকুমার জানিয়েছে, তার স্ত্রী বেশ কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছেন। বাড়িতে ১৫ বছর বয়সের নাবালক পুত্র রয়েছে। তাকে টাকা পাঠাত সে। জোড়াবাগানের বহুতলটিতে কেয়ারটেকারের কাজ করা ছাড়াও সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের উপর একটি বেসরকারি সংস্থায় পিওনের কাজ করত রামকুমার। রোজগারের টাকার একটি অংশ খরচ করত মদ্যপান ও যৌনপল্লির পিছনে। রামকুমারের মোবাইল থেকেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। দেখা গিয়েছে, সে মোবাইলে চাইল্ড পর্নোগ্রাফি ডাউনলোড করত না। সার্চ ইঞ্জিনে খুঁজত। অথচ সে পড়াশোনাও জানে না। জেরার মুখে রামকুমার জানিয়েছে, তারই এক বন্ধু তাকে শিখিয়েছিল, কোন কোন ‘বাটন’ টিপলে এই পর্নোগ্রাফিগুলি দেখা যাবে। প্রয়োজনে সেই বন্ধুকেও জেরা করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.