Advertisement
Advertisement
R G Kar Case

খুনের পর ধর্ষণ? ‘অভয়া’র দেহে আঘাতের চিহ্ন ঘিরে বাড়ছে রহস্য

সন্দীপ ঘনিষ্ঠ ডাক্তারের মোবাইলে লুকিয়ে বহু তথ্য। ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠাচ্ছে CBI।

New facts emerges in R G Kar Case, CBI continues grilling
Published by: Paramita Paul
  • Posted:September 29, 2024 9:26 am
  • Updated:September 29, 2024 9:47 am  

নিরুফা খাতুন: আর জি কর কাণ্ডে নির্যাতিতার ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ‘অ‌্যান্টিমর্টেম’ শব্দটি ঘিরেই এখন রহস‌্য বাড়ছে। তরুণী চিকিৎসকের দেহে যে আঘাতগুলির কথা উল্লেখ করা হয়েছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সেগুলি মৃত্যুর আগে নাকি পরে? ধর্ষণ কি খুনের আগেই করা হয়েছিল না পরে? এইসব প্রশ্নের উত্তর পেতেই এখন মরিয়া সিবিআই। রহস্যের জট খুলতে ময়নাতদন্তের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের পাশাপাশি মর্গের ডোমদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করছেন সিবিআই আধিকারিকরা। ময়না তদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ থাকা দেহের আঘাতের বর্ণনার সঙ্গে তাঁদের বয়ান মিলিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

আর জি করের তরুণী চিকিৎসকের দেহে একাধিক আঘাত ছিল। এই আঘাতগুলি মৃত্যুর আগে (অ‌্যান্টিমর্টেম) বলেই ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অর্থাৎ খুনি সঞ্জয় রায় প্রথমে তরুণীকে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে। কিন্তু তরুণী তখন সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। সঞ্জয় ভেবেছিল মারা গিয়েছে। তখন তাঁকে ধর্ষণ করে। তরুণীর মৃত্যু নিশ্চিত করতে পাশবিক অত‌্যাচারের পর তাঁর মাথায়ও আঘাত করে খুনি। ময়নাতদন্তের এই রিপোর্ট নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন। বিশেষ করে দেহের আঘাতগুলি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। আর জি করে ঘটনাস্থলে একাধিকবার ঘুরে আসার পর ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখার পর তদন্তকারীরা মনে করছেন, হতে পারে খুন অন‌্য কেউ করে থাকতে পারে। সঞ্জয় মৃতার উপর পাশবিক অত‌্যাচার করেছে। দেহের আঘাত ও যৌন নির্যাতন খুনের আগে না পরে করা হয়েছিল এই তথ‌্যই তদন্তের নয়া মোড় এনে দিতে পারে। তাই আর জি করে নিহত তরুণীর ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক অপূর্ব বিশ্বাসকে একাধিকবার সিজিওতে ডেকে জেরা করা হয়েছে। পাশাপাশি মর্গের ডোম-সহ অন‌্য কর্মীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে খবর। সূত্রের খবর, দেহটি যখন মর্গে নিয়ে যাওয়া হয় সেই সময় দেহের আঘাতগুলি ঠিক কেমন দেখেছিলেন ডোম ও বাকি কর্মীরা তা জানার চেষ্টা করছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা। কোনও রকম অস্বাভাকির আঘাত তাঁরা লক্ষ‌্য করেছিল কী না তা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়।

Advertisement

এদিকে বাজেয়াপ্ত করা আরও দুটি মোবাইলকে ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠাচ্ছে সিবিআই। ওই দুই মোবাইল আর জি করের প্রাক্তন অধ‌্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ-ঘনিষ্ঠ প্রভাশালী চিকিৎসকের বলে বিশেষ সূত্রে খবর। ওই দুই মোবাইল থেকে অনেক মেসেজ, ছবি ও কল রেকর্ডিং ডিলিট করা হয়েছে বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন। প্রমাণ লোপাট ও ষড়যন্ত্রের অনেক তথ‌্য ওই মোবাইল দুটিতে থাকতে পারে বলে তদন্তকারীরা মনে করছেন। সেগুলি উদ্ধার করতে মোবাইল দুটি ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠাচ্ছে সিবিআই। আর জি কর কাণ্ডে ধৃত সন্দীপ ঘোষ ঘটনার প্রমাণ লোপাট ও ষড়যন্ত্র করেছিলেন তার বহু তথ‌্য সিবিআইয়ের হাতে এসেছে। সেগুলি আদালতে পেশ করেছে সিবিআই। সিবিআইয়ের আনা সেই অভিযোগগুলি প্রমাণিত হলে প্রমাণ লোপাট ও ষড়ষন্ত্র মামলায় সন্দীপের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে। নির্দেশনামায় বিচারক লিখেছেন, অভিযোগের মাত্রা গুরুতর। এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে, তাহলে ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট (মৃত্যুদণ্ড) হতে পারে, বিরলের মধ্যে বিরলতম মামলায় যে শাস্তি হয়। তাই এই অভিযোগে জামিন দেওয়া অন্যায় হবে। সিবিআই সূত্রে খবর, মোবাইলের তথ‌্যগুলি উদ্ধার করা গেলে এই মামলার তদন্তের কাজ আরও সহজ হবে। সন্দীপের বিরুদ্ধে যেসব গুরুত্বর অভিযোগ এখনও পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে তা আদালতে প্রমাণ করতে মোবাইলে ডিলিট করা তথ‌্যগুলি উদ্ধার করা খুব জরুরি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement