Advertisement
Advertisement

বায়োপসি না করেই ‘ক্যানসার’ নির্ণয়, ফের ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু

কাঠগড়ায় শহরের নামী বেসরকারি হাসপাতাল৷

Negligence kills patient in Kolkata
Published by: Sayani Sen
  • Posted:January 28, 2019 12:17 pm
  • Updated:January 28, 2019 12:43 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: না হয়েছে সঠিক পরীক্ষা, না হয়েছে বিশ্লেষণ। শুধুমাত্র সন্দেহের বশেই  রোগীর ‘ক্যানসার’ নির্ধারণ করে ফেললেন চিকিৎসকরা। সেইমতো চিকিৎসাও শুরু করা হল। ফল – রোগীর মৃত্যু। এমন এক বড়সড় ‘ভুল’এর অভিযোগে ফের কাঠগড়ায় শহরের নামী এক বেসরকারি হাসপাতাল। যদিও বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভুল চিকিৎসার অভিযোগ মানতে নারাজ৷

গত বছরের জুলাই মাসে আচমকাই পড়ে যান নিউটাউনের বাসিন্দা বছর একষট্টির অশোক দিওয়ান৷ পায়ে চোট পান তিনি৷ বাইপাস সংলগ্ন শহরের এক নামী বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে৷ সেখানেই চিকিৎসা শুরু হয় ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধের৷ তাঁর ছেলে অশ্বিনী দিওয়ান জানান, চিকিৎসকের পরামর্শে ওই হাসপাতালে তাঁর বাবার এমআরআই হয়। তিনি বলেন,‘‘রিপোর্ট দেখে হাসপাতালের নিউরোসার্জেন জানান, মস্তিষ্কে ক্যানসার হয়েছে বাবার৷ ক্যানসারের শেষ পর্যায়ে রয়েছেন তিনি। অবিলম্বে ‘স্টিরিওট্যাকটিক বায়োপসি’ করাতে হবে।’’ পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তড়িঘড়ি ওই হাসপাতালে ভরতি হন অশোকবাবু৷ বৃদ্ধের পরিজনের অভিযোগ, ভরতির পর তিনদিন কেটে গেলেও বায়োপসি করা হয়নি৷ চিকিৎসকরা নাকি জানান, বায়োপসি করিয়েও কোনও লাভ নেই। শারীরিক অসুস্থতার লক্ষ্ণণ দেখেই মস্তিষ্কের ক্যানসারের বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই তাঁদের। 

Advertisement

                                [লটারির পুরস্কারের টোপে ফাঁকা অ্যাকাউন্ট! কলকাতায় সক্রিয় পাক প্রতারণা চক্র]

এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে ওই বৃদ্ধের কেমোথেরাপি এবং রেডিয়োথেরাপিও শুরু হয়। একমাস ধরে চলে কেমোথেরাপি এবং রেডিওথেরাপি৷ কিন্তু তাতে অসুস্থতা বাড়তে থাকে ওই বৃদ্ধের৷ ২৬ আগস্ট ফুসফুসে সংক্রমণ হয় তাঁর৷ আবারও ভরতি করা হয় ওই বেসরকারি হাসপাতালে৷ চারমাস ধরে আইসিইউ-তে ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি। ভরতি থাকাকালীন চিকিৎসকরা জানান, কিডনিও বিকল হয়ে গিয়েছে অশোকবাবুর। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় চেন্নাইয়ে৷  গত ২৬ ডিসেম্বর সেখানকার এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় অশোকবাবুর। তাতেই ক্ষোভ আরও বাড়তে থাকে পরিজনদের।

তাঁদের দাবি, গত অক্টোবরে শহরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে বৃদ্ধের ফের এমআরআই করা হয়৷ তখনই ধরা পড়ে জুলাই থেকে ‘ভুল’ চিকিৎসা হয়েছে তাঁর৷ অশ্বিনীর দাবি, ‘ভুল’ চিকিৎসার কথা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে ওই নামী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷ গা বাঁচাতে চিকিৎসার জন্য আর টাকা দিতে হবে না বলেও জানান চিকিৎসকরা।’’ এতেই তাঁর মনে সন্দেহ দানা বাঁধে। নিজের বাবার শারীরিক পরীক্ষার যাবতীয় রিপোর্ট শহর এবং দেশ-বিদেশের কয়েকজন চিকিৎসককে দেখানো হয়৷ বায়োপসি ছাড়া কেন ক্যানসারের চিকিৎসা হল, সেই প্রশ্ন উঠতে থাকে সব মহলে৷ যার কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি অশ্বিনীও। তাই বাবার মৃত্যুর জন্য বাইপাসের ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলে স্বাস্থ্য কমিশন, রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। যদিও ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ‘ভুল’ চিকিৎসার অভিযোগ মানতে নারাজ৷ তবে স্বাস্থ্য কমিশন তদন্ত শুরু করলে, প্রকৃত সত্য সামনে আসবেই – এই আশায় রয়েছেন অশ্বিনী দিওয়ান।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement