অর্ণব আইচ: চোরাপথে হামলা চালাতে পারে জঙ্গি বা শত্রুদেশ। তাই পুলওয়ামার ঘটনা ও সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর এবার অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার চাদরে মুড়ছে নৌসেনার বিমানঘাঁটিগুলি। অত্যাধুনিক ক্যামেরা ও সেন্সরের সাহায্যে রোখা হবে নাশকতা। একই সঙ্গে যুদ্ধের জন্য তৈরি হতে আরও হালকা হচ্ছে নৌসেনার যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার। আর এই আধুনিক যুদ্ধবিমানের যন্ত্রাংশ তৈরি করছে কলকাতার একাধিক সংস্থা।
ইতিমধ্যেই নৌসেনার বিমান ও বিভিন্ন জলযান তৈরির সঙ্গে যুক্ত কলকাতার বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থা। শুক্রবার বণিকসভায় কলকাতার বেশ কিছু ব্যবসায়িক সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে নৌসেনা। বারাকপুরে ‘নাভাল লিয়াজঁ সেল’-এর পক্ষে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এদিন একটি প্রশ্নের উত্তরে দিল্লির নৌসেনার সহ প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল ভি এম দস জানান, প্রত্যেকটি দেশই নিজের মতো নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছে। দেশের আটটি নৌসেনার বিমানঘাঁটির নিরাপত্তা আরও আধুনিক করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। নৌসেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, নৌসেনার বিমানঘাঁটিতে স্থলপথে এসে জঙ্গি বা শত্রুরা হামলা চালাতে পারে, এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। তাদের লক্ষ্য হতে পারে যুদ্ধবিমান। তাই ঘাঁটিগুলিতে বসানো হবে বিশেষ সেন্সর। সেন্সরের সাহায্যে অনেক দূরে কোনও ব্যক্তি লুকিয়ে থাকলেও তাকে শনাক্ত করা যাবে। আবার যে আধুনিক সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে, তা জানিয়ে দেবে, যে ব্যক্তিটি ঘাঁটিতে আসছে তার কাছে আগ্নেয়াস্ত্র আছে কি না। আবার দূর থেকেও আক্রমণ রোধের ব্যবস্থাও আরও জোরালো হচ্ছে।
নৌসেনা জানিয়েছে, আধুনিক বিমান ও হেলিকপ্টারের যন্ত্রাংশ তৈরির জন্য এই রাজ্য তথা কলকাতার বেসরকারি সংস্থাগুলিকে আরও বেশি করে আহ্বান জানানো হচ্ছে। বহু সংস্থা এগিয়েও আসছে। কাশ্মীরের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে বিভিন্নভাবে তৈরি হচ্ছে নৌসেনা। মাঝসমুদ্রে কোনও হামলা বা উপকূলের দিকে জঙ্গি বা শত্রুদের জলযান এগিয়ে এলে যুদ্ধজাহাজের সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণ চালায় নৌসেনার যুদ্ধবিমানও। এখনও নৌসেনাদের হাতে যে যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার রয়েছে, সেগুলির ওজন আরও হালকা করার চেষ্টা হচ্ছে। এমনভাবে সেগুলি তৈরি হচ্ছে, যাতে ওজন কম হওয়া সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় বোমা, অস্ত্র ও মিসাইল বহন করতে পারে। এ ছাড়াও বিমান বহনকারী যুদ্ধজাহাজের সুবিধার জন্যও কমানো হচ্ছে বিমানের ওজন। তার ফলে বেশি সংখ্যার বিমানও বহন করতে পারবে যুদ্ধজাহাজগুলি। ইতিমধ্যে আধুনিক পদ্ধতিতে নৌসেনা দশটি ডর্নিয়ার বিমান ও আটটি চেতক হেলিকপ্টার অর্ডারও দিয়েছে বলে নৌসেনার কর্তা জানান। এছাড়াও নতুন যে বিমান ও হেলিকপ্টারের মধ্যে একটি অংশ তৈরি হচ্ছে এই দেশেই। তার ফলে এই দেশের মানুষের কর্মসংস্থান বাড়বে বলে জানিয়েছে নৌসেনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.