এফআইআরে নাম থাকা ১৩ জনের সঙ্গে কথা বলার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নারদ-কাণ্ডে এফআইআর করা ১৩ জন ছাড়াও আরও ১৭ জনকে নিজেদের স্ক্যানারে নিয়ে এল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই৷ সোমবার দায়ের করা এফআইআরে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী-সাংসদ-বিধায়ক ছাড়াও এক আইপিএস অফিসার আছেন৷ মঙ্গলবার বেলায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা অভিযুক্ত ১৩ জনের সঙ্গে কথা বলার প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে৷ অন্য যে ১৭ জনকে স্ক্যানারে নিয়ে আসা হয়েছে তাঁরা কোনও না কোনওভাবে নারদ মামলার সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা৷ সিবিআইয়ের বক্তব্য, এঁদের মধ্যে কয়েকজন আবার প্রভাবশালী৷ সিবিআইয়ের এই পদক্ষেপকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে ইতিমধ্যে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ নেতামন্ত্রীদের বিরুদ্ধে এফআইআরের খবর আসার প্রতিক্রিয়ায় তিনি সোমবার নবান্নে বলেন, “এফআইআর করলেই দোষী প্রমাণিত হয় না৷ চিন্তা করার কোনও কারণ নেই৷ এটা রাজনৈতিক খেলা৷ রাজনৈতিকভাবেই এর মোকাবিলা করব৷”
মঙ্গলবার বেলায় সিবিআই আধিকারিকরা নারদ তদন্ত নিয়ে বৈঠকে বসেন৷ অভিযুক্তদের বয়ান রেকর্ড করা হবে কি না তা নিয়ে আলোচনা হয়৷ প্রাথমিক তদন্ত শেষ করতে একমাস সময় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট৷ তৃণমূলের ১২ নেতা-মন্ত্রী-সাংসদ-বিধায়ক ও এক আইপিএস অফিসারের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে সিবিআই৷ ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের আগে নারদ স্টিং ফুটেজ প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে যায়৷ এই ঘটনায় জাতীয় রাজনীতিও তোলপাড় হয়৷ ফুটেজের ছবি তুলে ধরে প্রচার করে বিরোধীরা৷ কিন্তু সেই প্রচার যে কাজে আসেনি তার প্রমাণ, যে সমস্ত মন্ত্রী ও বিধায়কদের বিরুদ্ধে ফুটেজ দেখিয়ে প্রচার হয়েছিল তাঁরা সকলেই বিপুল ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন৷ বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয় পায় তৃণমূল কংগ্রেস৷ বিরোধীদের প্রচার যে সাধারণ রাজ্যবাসীর মনে দাগ কাটেনি সেটা বিধানসভা ভোটের ফলেই স্পষ্ট হয়ে যায়৷ এফআইআর দায়েরের পর সিবিআইয়ের তরফে দাবি করা হয়, এফআইআরে যাঁদের নাম রয়েছে তাঁরা ছাড়াও আরও কিছু ব্যক্তি নারদ মামলায় কোনও না কোনওভাবে জড়িত৷
এফআইআরে নাম রয়েছে সাংসদ মুকুল রায়, সৌগত রায়, কাকলি ঘোষদস্তিদার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, সুলতান আহমেদ, অপরূপা পোদ্দারের৷ এছাড়াও রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শোভন চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী, ফিরহাদ হাকিম, প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র, বিধায়ক ইকবাল আহমেদ ও আইপিএস অফিসার এসএমএইচ মির্জার নাম আছে৷ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনের ৭ নম্বর ধারা (জনপ্রতিনিধি হিসাবে ঘুষ নেওয়া) ও ১৩ নম্বর ধারা (জনপ্রতিনিধি থাকাকালীন অপরাধমূলক আচরণ) প্রয়োগ করা হয়েছে৷ এছাড়াও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০বি ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে৷ গত ১৮ মার্চ এই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট৷ সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে আলাদা আলাদাভাবে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেস৷ শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ হাই কোর্টের নির্দেশই বহাল রাখে৷ এর পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট তদন্তের সময়সীমা ৭২ ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে এক মাস করে দেয়৷ বিরোধীরাও ইতিমধ্যে সিবিআইয়ের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.