শুভঙ্কর বসু: নন্দীগ্রাম মামলা অন্যত্র সরানো হবে কি না, তা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta HC) শুনানি শেষে আজ রায়দান স্থগিত রইল। বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চ থেকে মামলা অন্যত্র সরানোর আরজির শুনানি হয় বৃহস্পতিবার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দায়ের করা মামলায় সওয়াল করেন রাজ্যসভার সাংসদ তথা আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। তবে কোনও নিষ্পত্তি হয়নি। এদিনের মতো রায়দান স্থগিত রাখলেন বিচারপতি। নন্দীগ্রামে ভোটে পুনর্গণনা নিয়ে নয়, এদিন শুধুই মামলা স্থানান্তর নিয়েই শুনানি হয়েছে বলে খবর।
নিয়ম অনুযায়ী, নির্বাচন সংক্রান্ত মামলায় মামলাকারীকে হাজির থাকতে হয়। তাই বৃহস্পতিবারের শুনানিতে ভারচুয়ালি এজলাসে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে মুখ্যমন্ত্রীর হয়ে সওয়াল করেন রাজ্যসভার সাংসদ তথা আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। সূত্রের খবর, তিনি শুরুতেই বিচারপতির কাছে মামলা স্থানান্তরের আবেদনের পক্ষে কথা বলেন। তাঁর বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর তরফে একাধিকবার আবেদন করা সত্ত্বেও কেন মামলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন না বিচারপতি কৌশিক চন্দ। তাতে বিচারপতি জানান, এই মামলা শুনতে তাঁর কোনও আপত্তি নেই।
একুশের নির্বাচনে নন্দীগ্রাম (Nandigram) থেকে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর কাছে ১৯০০ ভোটে পরাজিত হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, গণনায় কারচুপি হয়েছে। তাই তা বাতিল করে পুনর্গণনার আবেদন জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন প্রার্থী নিজেই। বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে মামলাটি ওঠে শুনানির জন্য। যদিও এই বিচারপতির সঙ্গে বিজেপি যোগের একাধিক প্রমাণ দাখিল করে তৃণমূলের (TMC) তরফে মামলা অন্য বেঞ্চে স্থানান্তরের আবেদন জানানো হয়। কিন্তু তা মঞ্জুর হয়নি। জানানো হয়, ওই বিচারপতির সিঙ্গল বেঞ্চেই মামলার শুনানি হবে। এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার রাতে স্বয়ং বিচারপতির কাছেই ‘ইন্টারলোকেটরি অ্যাপ্লিকেশন’ করেন, যাতে তিনি নিজেই মামলা থেকে সরে যান।
কিন্তু তারপরও বৃহস্পতিবার সকালে দেখা যায়, বিচারপতি কৌশিক চন্দই শুনানির জন্য এজলাসে হাজির হয়েছেন। সূত্রের খবর, তাতেই মমতার আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি প্রশ্ন তোলেন। কেন তাঁর বিচারের নিরপেক্ষতা নিয়ে তৃণমূলের ‘অনাস্থা’, সেই কারণও ব্যাখ্যা করেন অভিষেক মনু সিংভি। অর্থাৎ তাঁর সঙ্গে বিজেপি যোগের তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরা হয়। তাতে বিচারপতি কৌশিক চন্দ জানান, ১৬ তারিখ প্রধান বিচারপতির এজলাসে তৃণমূলের তরফে আবেদন করা হয়েছিল যাতে মামলার এজলাস বদল হয়। কিন্তু ১৮ তারিখ প্রধান বিচারপতি সেই আবেদন খারিজ করেন। এরপর ২৩ তারিখ রাতে ফের ইন্টারলোকেটরি আবেদন জমা পড়ে। মাঝের কয়েকদিনে কেন আবেদন করা হয়নি? এই প্রশ্ন করেন বিচারপতি। এছাড়া তাঁর নন্দীগ্রাম মামলা শুনতে আপত্তি নেই। তাই অন্যত্র মামলা সরানো নিয়ে তিনি কিছুই বলতে রাজি নন। এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি শেষে বিচারপতি রায়দান স্থগিত রেখেছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.