Advertisement
Advertisement

Breaking News

Haridevpur

দু’মাস পর হরিদেবপুরে গয়না চুরির রহস্যভেদ! লুটের পর দোকানে বিক্রির ঘটনায় ধৃত পরিচারিকা-সহ ২

সোনার ওইসব গয়না গলিয়ে ফেলা হয়েছিল।

Mystery of jewelry theft in Haridevpur solved after two months
Published by: Suhrid Das
  • Posted:April 29, 2025 11:46 am
  • Updated:April 29, 2025 2:40 pm  

অর্ণব আইচ: গৃহকর্তার বাড়ি থেকে সোনার গয়না চুরি করে গা ঢাকা দিয়েছিল এক পরিচারিকা। প্রায় দু’মাস গা ঢাকা দিয়েও শেষরক্ষা হল না। দক্ষিণ কলকাতার এক ভাড়াবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হল তাকে। ধৃতের নাম দুর্গা কর্মকার। চুরি করা অলঙ্কার এক সোনার দোকানের ব্যবসায়ীকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ সেই ব্যবসায়ীকেও গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনার পরতে পরতে আছে রহস্য। কারণ, ধৃত মহিলা নিজের আসল পরিচয় গোপন করে অন্য নাম, পদবী ব্যবহার করছিলেন। সেই কারণে পুলিশের নাগালের সামনে এসেও পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি। তবে শেষপর্যন্ত এক কেবল অপারেটরের কথার সূত্র ধরে ওই মহিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জানা গিয়েছে, দুর্গা কর্মকার নামে ওই মহিলা দক্ষিণ কলকাতার হরিদেবপুর এলাকায় একটি বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে ওই বাড়ি থেকে সোনার গয়না চুরি গিয়েছিল। তারপর থেকে ওই মহিলাও উধাও হয়ে যান। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে হরিদেবপুর থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পুলিশের কাছে খবর আসে ওই মহিলা কলকাতা ও শহরতলির একাধিক জায়গায় গা ঢাকা দিয়ে থাকছে। সম্প্রতি গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ রিজেন্ট পার্ক এলাকার একটি বাড়িতে হানা দেয়। সেখান থেকেই দুর্গা কর্মকারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেরায় ওই মহিলা স্বীকার করেন, চুরির পর তিনি দমদম, ইছাপুর-সহ একাধিক জায়গায় আত্মগোপন করেছিলেন। চুরি যাওয়া গয়না তিনি ইছাপুরের এক সোনার দোকানে বিক্রি করে দিয়েছেন।

Advertisement

অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ আধিকারিক জয়দেব বৈরাগী ও জামিরউদ্দীন শেখ তদন্ত শুরু করেছিলেন। ওই মহিলার আধার কার্ডের সূত্র ধরে দমদমে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন আধিকারিকরা। সেখান থেকেই জানা যায়, ওই মহিলার নামে আগে থেকেই হাত সাফাইয়ের অভিযোগ আছে। বাড়ির লোকের সঙ্গেও তেমন কোনও সম্পর্ক নেই। রিজেন্ট পার্জ এলাকায় তাঁর ছেলের সঙ্গে ওই মহিলা থাকেন বলে খবর পাওয়া যায়। রিজেন্ট পার্কে ওই মহিলার ছবি নিয়ে তদন্তে গিয়েছিলেন আধিকারিকরা। সেখানে মা ও ছেলেকে রাস্তায় দেখতেও পাওয়া যায়। কিন্তু সে সময় পুলিশকে বলা হয়, ওই মহিলার নাম দুর্গা কর্মকার নয়। তাঁর নাম জয়া বোস। তাঁর বছর ২৫-এর যুবক ছেলে নিজের পরিচয়পত্র হিসেবে সৌরভ বসু নাম দেখিয়েছিলেন। বসু পদবী দেখে থমকে যান পুলিশ আধিকারিকরা। মা ও ছেলে পুলিশের নাগাল থেকে কার্যত পালিয়ে যান। পরবর্তীকালে পুলিশের কাছে রিজেন্ট পার্ক এলাকার এক কেবল অপারেটর তথ্য দেয়। তিনিই জানান, ওই মহিলার নাম দুর্গা কর্মকার। কেবল অপারেটরের কাছে ওই মহিলার দুর্গা কর্মকার নামে আধার কার্ডের ফোটোকপিও আছে। আর কালবিলম্ব না করে পুলিশ রিজেন্ট পার্ক এলাকার ওই বাড়ি থেকে মহিলাকে গ্রেপ্তার করে।

তারপরই তদন্তকারীরা সেই গয়নার দোকানের মালিকের খোঁজে অভিযান চালান। উত্তর ২৪ পরগনার ইছাপুর থেকে ওই ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেরায় ওই ব্যবসায়ী স্বীকার করেছেন, তিনি চুরির ওই গয়না গলিয়ে ফেলেছেন। তদন্তকারীরা চুরি যাওয়া গয়নার প্রায় ১৭.৬১৫ গ্রাম ওজনের গলিত সোনা ওই ব্যবসায়ীর থেকে বাজেয়াপ্ত করেছেন। আজ মঙ্গলবার ওই গয়না ব্যবসায়ীকে আদালতে তোলা হবে। এর আগে ওই পরিচারিকাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক ২ মে পর্যন্ত তাঁকে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement