অর্ণব আইচ: ধর্মতলার অভিজাত হোটেল পিয়ারলেস ইনে ম্যানেজমেন্ট ছাত্রের রহস্যমৃত্যুর কারণ নিয়ে এখনও জারি ধোঁয়াশা৷ আত্মহত্যা নাকি খুন করা হয়েছে তাঁকে, তা নিয়ে ধন্দে তদন্তকারীরা৷ প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, আত্মহত্যাই করেছেন হর্ষ৷ তবে জামশেদপুর থেকে কলকাতায় এসে হোটেলে কেন আত্মঘাতী হলেন ওই কলেজছাত্র, উঠছে সেই প্রশ্ন৷ নিহত হর্ষের পরিজন ও তাঁর হস্টেলের বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্তকারীরা৷
গুজরাটের রাজকোটের বাসিন্দা হর্ষ বালানি৷ জামশেদপুরের একটি বেসরকারি কলেজের ম্যানেজমেন্টের ছাত্র ছিলেন তিনি৷ অনেক খোঁজাখুঁজির পর বৃহস্পতিবার দুপুরে পিয়ারলেস ইনের পাঁচতলার ১৪০৭ নম্বর ঘর ভাড়া নেন হর্ষ৷ হোটেলের ওই ঘরে ঢুকে যাওয়ার পর আর বেরতে দেখা যায়নি তাঁকে৷ সন্দেহ হওয়ায় শুক্রবার রাতে হোটেলের ওই ঘরের দরজার চাবি খুলে ভিতরে ঢোকেন কর্মীরা৷ ওই ঘরে হর্ষকে পাননি তাঁরা৷ শৌচালয়ের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল৷ নকল চাবি দিয়ে ওই দরজা খোলেন হোটেল কর্মীরা৷ জল ভরতি বাথটব থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় হর্ষকে৷ এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে জানান৷
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ ওই ঘর থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করে৷ হর্ষের গলাতেও ছিল গভীর ক্ষতচিহ্ন৷ তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, হোটেলের বিলাসবহুল ঘর ভাড়া নেওয়ার পরেও তিনি কোনও আসবাবপত্রই ব্যবহার করেননি৷ এমনকী, বিছানাও ব্যবহার করেননি কলেজছাত্র৷ ঘরে ঢুকেই তিনি সোজা শৌচালয়ে চলে যান বলেই অনুমান পুলিশের৷ প্লেনে করেই কলকাতায় এসেছিলেন হর্ষ৷ সেক্ষেত্রে পুলিশের ধারণা কলকাতায় পৌঁছনোর পরই ছুরি কেনেন তিনি৷ পুলিশ সূত্রে খবর, বেশ কয়েকদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন হর্ষ৷ ইদানীং সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছিলেন তিনি৷ মানসিক অবসাদের জেরেই হর্ষ আত্মহননের সিদ্ধান্ত নেন বলেই অনুমান পুলিশের৷ তবে জামশেদপুর থেকে কলকাতায় কেন এসেছিলেন হর্ষ, সে বিষয়ে কোনও সুস্পষ্ট তথ্য নেই পুলিশের কাছে৷ সেই তথ্যের খোঁজে হর্ষের বন্ধুবান্ধব ও তাঁর পরিজনদের সঙ্গে কথা বলছেন পুলিশ আধিকারিকরা৷ এখনও পর্যন্ত হর্ষের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তদন্তকারীদের হাতে এসে পৌঁছায়নি৷ রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছেন আধিকারিকরা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.