গোবিন্দ রায়: হস্টেলের পাঁচতলা থেকে পড়ে ছাত্রীর রহস্যমৃত্যুতে CID তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। পুলিশি তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল জানালেন, প্রয়োজন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে সিআইডি।
২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর মালদহের কালিয়াচক আবাসিক মিশনের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী নাজিমা খাতুনের রহস্যমৃত্যু হয়। হস্টেলের পাঁচতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে ছাত্রী, এমনই দাবি করে কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার কথা স্কুলেরই এক অভিভাবকের মারফত জানতে পারেন ছাত্রীর বাবা। খবর পাওয়ার পরেই মালদহের চাঁচোল থেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছয় ছাত্রীর পরিবার। ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে ছাত্রীর। পরিবারের অভিযোগ ছিল তাঁদের মেয়েকে পরিকল্পনা করে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। ঘটনার জল গড়ায় আদালত পর্যন্ত।
এই মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার রাজ্য সরকারের পক্ষের আইনজীবী শাশ্বত গোপাল মুখোপাধ্যায় আদালতে জানান, নাবালিকা ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। তাই কোনও নিরপেক্ষ অথবা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের প্রয়োজন নেই। আইনজীবীর দাবি, ছাত্রী মানসিক অবসাদের জন্যই আত্মহত্যা করেছিল। পাশাপাশি তিনি আরও দাবি করেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই ছাত্রীর অভিভাবককে স্কুলে ডেকে পাঠানোর পরেই সে আত্মহত্যা করে।
সরকারি আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল প্রশ্ন করেন, কী কারণে অভিভাবককে স্কুলে ডাকা হয়েছিল? তার তথ্য কোথায়? বিচারপতি সরকারি আইনজীবীকে আরও জিজ্ঞেস করেন, প্রথম চার্জশিট জমা করার সময় যে সমস্ত ব্যক্তিদের সাক্ষী নেওয়ার দরকার ছিল কেন তা নেওয়া হয়নি? সেই প্রশ্নের উত্তর এদিন আদালতে দিতে পারেননি সরকারপক্ষের আইনজীবী। মামলাকারী নাজিমুল হকের পক্ষের আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরী আদালতে জানান, সরকারপক্ষের আইনজীবী তদন্তের কথা আদালতে জানাচ্ছেন তবে সেই তদন্তে সাক্ষীদের নাম প্রথম চার্জশিটে নেই কেন? নাবালিকা ছাত্রীর বাবা নির্দিষ্ট করে খুনের অভিযোগ করলেও সেই অভিযোগ এফআইআর হিসেবে রুজু করেনি পুলিশ, এমনই অভিযোগ। পাশাপাশি ওই ছাত্রী পাঁচ তলা থেকে নিচে পড়ে যাওয়ার পর হাসপাতালে প্রথম যে চিকিৎসক তার চিকিৎসা করেছিলেন তার কোনও কেন সাক্ষী নেওয়া হয়নি। দুপক্ষের বক্তব্য শোনার পর সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.