রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: ‘‘একটু-আধটু ক্ষোভ হতেই পারে। অন্যদল থেকে এলে একটু মানতে অসুবিধা হয়। তবে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত সকলকেই মানতে হবে।’’ প্রার্থী বাছাই ঘিরে দলের বিক্ষুব্ধ কর্মী, সমর্থক ও নেতাদের ক্ষোভ প্রশমনে এমনই বার্তা দিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ৷ স্পষ্ট ভাষায় জানালেন, ‘‘শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত৷ বিজেপিতে তা মান্য করেই চলতে হবে৷ নাহলে বিজেপিতে লোকের অভাব নেই৷’’
[দোলেই কলকাতার পারসি সম্প্রদায় মাতল নববর্ষ উদযাপনে ]
প্রার্থী ঘোষণার পর জোরকদমে প্রচার শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ এরাজ্যের মূল প্রতিপক্ষের চেয়ে অনেকটা পিছিয়ে থেকে বৃহস্পতিবার প্রথম প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করেছে বিজেপি৷ এবং এরপর থেকেই গোষ্ঠী কোন্দলে কার্যত নাজেহাল অবস্থা গেরুয়া শিবিরের৷ দলের রাজ্য দপ্তর থেকে যার আঁচ পৌঁছে গিয়েছে একাধিক জেলায়৷ বৃহস্পতিবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরেই ঝামেলা শুরু হয় কোচবিহারে৷ সেখানে জেলা কার্যালয়ে ভাঙচুর করেন কর্মীরা৷ কারণ ওই কেন্দ্রে বিজেপির তরফে প্রার্থী করা হয়েছে তৃণমূল ছেড়ে সদ্য গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়া নিশীথ প্রামাণিককে৷ কিন্তু তাঁকে প্রার্থী মানতে নারাজ জেলা বিজেপির কর্মীরা৷ তাঁদের দাবি, কোচবিহার কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করতে হবে জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক দীপক বর্মনকে৷ দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন জেলা বিজেপির কর্মীরা৷ ইতিমধ্যে গণইস্তফারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা৷ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, দীপক বর্মনও প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দেবেন৷
[বিজেপির হাওড়া জেলা সভাপতিকে ফের খুনের হুমকি]
একইভাবে বৃহস্পতিবার রাতেই দলের রাজ্য সহ-সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন রাজকমল পাঠক৷ প্রার্থী বাছাইয়ের পদ্ধতি নিয়ে ক্ষোভের জেরেই ইস্তফা বলে জানান তিনি৷ সূত্রের খবর, শ্রীরামপুর অথবা হুগলিতে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন রাজকমল পাঠক৷ কিন্তু হুগলি থেকে লোকসভার টিকিট পেয়েছেন রাজ্য বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়৷ এবং শ্রীরামপুর থেকে প্রার্থী হয়েছেন বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি দেবজিৎ সরকার৷
[শহরে অপ্রীতিকর ঘটনা রুখে দোলে চ্যাম্পিয়ন কলকাতা পুলিশ]
সূত্রের খবর, তমলুক ও কৃষ্ণনগরের প্রার্থী নিয়েও দলের মধ্যে চরমে পৌঁছেছে অসন্তোষ। তমলুকে কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে সিদ্ধার্থ নস্করকে। কিন্তু সেখানকার নেতাদের জানান, সিদ্ধার্থবাবুকে তাঁরা কেউ চেনেন না। দলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি প্রদীপকুমার দাসের বক্তব্য, ‘‘প্রার্থীর নাম পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করব। তমলুকে দলের নেতা, কর্মীরা বহিরাগত প্রার্থীকে মেনে নিতে পারছে না’’। একই অবস্থা কৃষ্ণনগরেও৷ সেখানে বিজেপির তরফে প্রার্থী করা হয়েছে প্রাক্তন ফুটবলার কল্যাণ চৌবেকে৷ যা সেখানে দলের বড় অংশই নাকি মেনে নিতে পারছে না। তাঁদের দাবি, প্রার্থী করতে হবে ভূমিপুত্র সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়কে৷ কেন তাঁকে প্রার্থী করা হল না, সেই প্রশ্ন তুলেছে নদিয়া জেলা বিজেপির একটা বড় অংশই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.