সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আবাহনের প্রস্তুতি সারা। বোধনের ঢাকে কাঠি পড়ল বলে। ঠিক এই সময়েই বিতর্কে মহম্মদ আলি পার্কের পুজো। বোধনের আগেই কি বিসর্জনের বোল উঠতে পারে এই কমিটিতে? পুজোমহলে ইতিউতি ঘুরছে এ প্রশ্নই। আসলে জনপ্রিয় এই পুজো কমিটিকে বিপাকে ফেলল অসুরই। যে অশুভ বিনাশের জন্য এই অকালবোধন, সেই অশুভ অসুরই যেন কাঁটা হয়ে বিঁধতে চলেছে উদ্যোক্তাদের গলায়।
ব্যাপারটা কী?
মহম্মদ আলি পার্কের পুজো মানেই বাঁধা ভিড়। যে পুজো যতই থিমের বাহারে সেজে উঠুক না কেন, উত্তরে ঠাকুর দেখা মানেই এই পুজোয় ঢুঁ মারা। লম্বা লাইন। চেনা দৃশ্য। এবারও দর্শনার্থীদের সেই অনুভব ফিরিয়ে দিতে তৈরি উদ্যোক্তারা। তবে পুজোর ভাবনায় মিশিয়ে দিয়েছিলেন সমসায়িকতাও। তাতেই বিপত্তি। এবার এই পুজোয় অসুর হিসেবে দেখানো হয়েছে চিকিৎসকদের। সে খবর চাউর হতেই ব্যাপক খেপেছে রাজ্যের চিকিৎসকমহল। মাস কয়েক আগেই রাজ্যের চিকিৎসকমহলকে মানবিক হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বেসরকারি হাসাপাতালগুলোর ভুল ধরার জন্য গঠন করা হয় কমিশন। কাকতালীয় হলেও তারপর থেকে ডাক্তারদের উপর আক্রমণের ঘটনা যেন বেড়ে গিয়েছে। এরই মধ্যে পুজোয় চিকিৎসকদের অসুর হিসেবে দেখানোয় আগুনে ঘৃতাহুতি হয়েছে।
[ দুর্গাশ্লোক, চণ্ডীপাঠ শিখতে টোলে দৌড়চ্ছেন পেশাদার পুরোহিতরা ]
বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডাঃ বিনায়ক চন্দ জানান, “মহম্মদ আলি পার্কের পুজো বন্ধ করার কোনও ইচ্ছে আমাদের নেই। তবে যদি শনিবারের মধ্যে মূর্তি সরিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা না চাওয়া হয়, তবে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব।” ফোরামের সম্পাদক অর্জুন দাশগুপ্ত ও ভাইস প্রেসিডেন্ট ডাঃ কৌশিক লাহিড়ী পুরো ঘটনার নিন্দা করেন। তাঁদের কথারও সার বক্তব্য এটাই। কোনওভাবেই রাজ্যের চিকিৎসকদের খাটো করা যাবে না, এই দাবিতে অটল তাঁরা।
এদিকে বিপত্তির সূত্রপাত মাত্র প্রায় সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন পুজো কমিটির সদস্যরা। কমিটির সদস্য সঞ্জীব শর্মা জানালেন, “গোরক্ষপুরে যে শিশুমৃত্যু কাণ্ড হয়েছিল তাতে ডাক্তারদের গাফিলতি ছিল। আমরা ওই ঘটনাকে মাথায় রেখেই ডাক্তারের লোভকে অসুর হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছিলাম।” এই থিম রূপায়ণের ভাবনা শিল্পী কুশ বেরার।পরে পুজো কমিটির সাধারণ সম্পাদক নরেশ জৈনের বক্তব্য মেলে। ঘনিষ্ঠমহলে নরেশবাবু জানিয়েছেন, কাউকে আঘাত করা তাঁদের উদ্দেশ্য নয়। যদি চিকিৎসকমহল ব্যথিত হয়, তাহলে শনিবার সকালের মধ্যেই তাঁরা ডাক্তাররূপী অসুরকে সরিয়ে দেবেন। যদিও ডাক্তাররা বিষয়টিকে একেবারেই হালকাভাবে নিচ্ছেন না। শনিবারের মধ্যে ক্ষমা চেয়ে মূর্তি সরানো না হলে আদালতের দ্বারস্থ হবেন চিকিৎসকরা। ফলে বোধনের আগে মধ্য কলকাতার এই পুজো ভবিষ্যৎ যে ঠিক কী, তা বোধহয় মা দুগ্গাই জানেন।
[ ‘বাহুবলী’ থিম চুরির অভিযোগ, এবার পুজোয় বাড়তি উত্তাপ ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.