গৌতম ভট্টাচার্য: রাজনীতির ময়দানে একে অপরের যুযুধান। প্রচারের মঞ্চ থেকে একে অপরের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। কিন্তু ব্যক্তিগত স্তরে দুজনের সখ্যতা চোখে পড়ার মতো। কথা হচ্ছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে (Babul Supriyo) নিয়ে। কখনও দুজনকে একসঙ্গে ঝালমুড়ি খেতে দেখা গিয়েছে তো কখনও মন্ত্রিত্ব হারানোর পর বাবুলের ‘সমব্যথী’ হয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার ‘সংবাদ প্রতিদিন’-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারেও তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা তুলে ধরেছেন আসানসোলের সাংসদ। তবে তাঁর সাফ কথা, “অন্য দলে যাচ্ছি না।” আবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভও উগড়ে দিয়েছেন। সাংসদের দাবি, “অরাজনৈতিক সাংসদ হিসেবে মানুষের কাজ করতে চাই। আসানসোলের উন্নয়ন করতে চাই। এভাবেও কাজ করা যায়, তা প্রমাণ করে দেব।”
শেষবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বাবুলের দেখা হয়েছিল গত ২৩ জানুয়ারি। নেতাজির জন্মজয়ন্তিতে কেন্দ্রের তরফে ভিক্টোরিয়ায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন দুজনেই। সেখানে দুজনকে পাশাপাশি বসে গান শুনতে দেখা গিয়েছিল তাঁদের। এমনকী, একান্তে কথাও বলেছিলেন তাঁরা। সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখতে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি ওঠে। তা নিয়ে তীব্র রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। এই ঘটনার পরও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বাবুলকে কথা বলতে দেখা গিয়েছিল। এদিন সেই ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সেদিন দুজনের মধ্যে কী কথা হয়েছিল তাও তুলে ধরেন তিনি।
বাবুলের কথায়, “উনি পাশে বসে কোন শিল্পী কী বাদ্যযন্ত্র বাজাচ্ছিলেন জানতে চাইছিলেন। একটি বিশেষ বাদ্যযন্ত্র তাঁর পছন্দ হয়েছিল, কিনতে চেয়েছিলেন উনি। আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন সেই বাদ্যযন্ত্রটি কোথায় পাওয়া যায়। আমি ঠিকানা দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, আমি কিনে দিলে তো আবার আপনি নেবেন না।” স্বাভাবিকভাবেই দুজনের সখ্যতায় রাজনৈতিক জল্পনা বেড়েছে। এদিন অবশ্য তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “এখন আর রাজ্যের ট্রাফিক সিগন্যালে আমার গাওয়া গান বাজে না। তৃণমূলের অনুষ্ঠানে ভুল করে আমার গান বাজে। অনুষ্ঠান করতে গেলে বুকিং বাতিল করে দেওয়া হয়।” ক্ষোভ উগড়ে দেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের বিরুদ্ধেও। তাঁর কথায়. “ভোট গণনাকেন্দ্রে অভব্যতা হয়েছিল। ভোট লুঠ হয়নি। তবে পরিস্থিতি আমরা সামলাতে পারিনি। ওইদিন বাচ্চা-বাচ্চা ছেলেরা গালাগালি করেছে। তার পরই ভেবেছিলাম রাজনীতি থেকে সরে যাব।” বাবুলের আরও অভিযোগ, “কে কোথায় কাজ করবে বাংলা তা রাজনীতি দিয়ে ঠিক হয়।”
আসানসোলের সাংসদের রাজনৈতিক সন্ন্যাসের পরই তাঁর অন্য দলে যোগ নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে তাঁর সখ্যতার জেরে জল্পনা তৈরি হয়েছে। এদিন অবশ্য সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে বাবুলের দাবি, “আমি ওয়ান টিম ম্যান। সুদূর ভবিষ্যতেও অন্য কোনও দলে আমি যাচ্ছি না। এটা লিখে নিন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.