Advertisement
Advertisement

লকডাউনে কাজ হারিয়ে চূড়ান্ত অভাবে পরিবার, বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা মা ও দুই ছেলের

তিনজনই আপাতত ভরতি বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে।

Mother with two sons attempted to suicide by cosuming poison ar Reganet Park

ছবি:‌ প্রতীকী

Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:June 26, 2020 1:29 pm
  • Updated:June 26, 2020 1:33 pm  

অর্ণব আইচ: লকডাউনে (Lockdown) কাজ হারিয়েছিলেন। পরে আর সেভাবে কাজের সুযোগ পাননি। দিনদিন অভাব প্রকট হচ্ছিল সংসারে। বকেয়া হয়ে পড়েছিল বাড়িভাড়া। মানসিক ভারসাম্যহীন ছোট ভাইয়ের চিকিৎসাও দুরূহ হয়ে উঠেছিল। সবমিলিয়ে আর্থিক অনটন আর হতাশা পৌঁছেছিল চরমে। পরিকল্পনা করেই রিজেন্ট পার্ক এলাকার বাসিন্দা মা এবং দুই ছেলে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন। যদিও পুলিশের তৎপরতায় সকলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আপাতত তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।

রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকায় ১৭০, সোনালি পার্ক। এই ঠিকানার একটি তিনতলা আবাসনে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন বছর পঁয়ষট্টির বৃদ্ধা, সঙ্গে দুই ছেলে। ছোট ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন। বড় ছেলে হাই কোর্টের ক্লার্কের কাজ করতেন। সেখান থেকেই যৎসামান্য রোজগার করতেন। ভাইয়ের চিকিৎসা, বাড়িভাড়া – সব মিলিয়ে খরচ কম ছিল না। ফলে বাবার সঞ্চয়েও হাত পড়েছিল। মাসে মাত্র ৫ হাজার টাকা রোজগার আর বাবার রেখে যাওয়া টাকার উপর ভর করে টেনেটুনেই তিনজনের সংসার।

Advertisement

[আরও পড়ুন: খুনের অস্ত্র কিনতে মুঙ্গের গিয়েছিল অমিত, ফুলবাগান কাণ্ডে প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য]

কিন্তু করোনা আতঙ্কে দেশজুড়ে লকডাউনে বন্ধ হয়ে যায় আদালত। ফলে ক্লার্কের কাজটিও করার সুযোগ হারান পরিবারের বড় ছেলে। আনলক ওয়ানের পরও সেই কাজ ফিরে পাননি। দিনেদিনে অভাব প্রকট হতে থাকে সংসারে। তিনজনেই স্থির করেন, জীবন থেকে পালাবেন, আত্মহত্যা করবেন। পুলিশ সূত্রে খবর, সেইমতো শুক্রবার সকালে তিনজনই উইপোকা মারার বিষ খেয়ে ফেলেছিলেন। বৃদ্ধা মা এবং ছোট ছেলে তাতে অচৈতন্য হয়ে পড়লেও, জ্ঞান ছিল বড় ছেলের। তিনি নিজেই এক আত্মীয়কে ফোন করে বলেন, তাঁরা অসুস্থ, হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

[আরও পড়ুন: ২৮ দিন ধরে মর্গে পচছে লাশ, কর্তব্যে গাফিলতির জেরে বদলি বাঘাযতীন হাসপাতালের সুপার]

আচমকা একথা শুনে আত্মীয় জানতে চান ব্যাপারটা কী। তাতেই প্রকাশ্যে আসে তাঁদের যৌথ আত্মহত্যার পরিকল্পনার কথা। বড় ছেলে জানান যে তাঁরা সকলে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। এরপর ওই আত্মীয়ের মাধ্যমেই খবর পৌঁছয় রিজেন্ট পার্ক থানায়। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনজনকে উদ্ধার করে বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বৃদ্ধা ও তাঁর ছোট ছেলের চিকিৎসা চলছে। আপাতত সংকটনজনক নন কেউই। আত্মীয়দের বক্তব্য, জীবন শেষ করে দিতে চেয়েও জীবনের প্রতি টানেই হয়ত শেষ মুহূর্তে আত্মীয়কে ফোন করে বাঁচানোর কথা বলেছিলেন কাজ হারানো ছেলে। তাই বেঁচে গিয়েছেন সকলে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement