অর্ণব আইচ: পঞ্চসায়রের হোম থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার যুবতীর মায়ের মৃত্যু হল হোমের ভিতরেই। হোম সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটার পর, তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় রক্তবমি করতে থাকেন। তারপরই শ্বাস বন্ধ হয়ে নিথর হয়ে যান তিনি। খবর পাঠানো হয় পরিবারের সদস্যদের। বৃদ্ধার বড় মেয়ে হোমে গিয়ে মায়ের মৃত অবস্থায় দেখেন। তিনি গোটা বিষয়টি জানিয়েছেন পঞ্চসায়র থানায়। তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
দিন দুই আগে পঞ্চসায়রের এই হোম থেকে যুবতীকে তুলে ট্যাক্সিতে তুলে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয় বলে তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে পুলিশ। এমনকী দ্বিতীয় একটি ট্যাক্সিতে তুলেও ৪০মিনিট ধরে চলে গণধর্ষণ। এই ঘটনার জন্য পরিবারের সদস্যরা দায়ী করেন হোম কর্তৃপক্ষকেই। পঞ্চসায়র থানাতেও তাঁরা অভিযোগ জানিয়েছেন, হোম কর্তৃপক্ষ আরও সতর্ক হলে তাঁদের মেয়ের এই সর্বনাশ হত না। প্রশ্ন উঠে যায় হোমের নিরাপত্তা নিয়ে। কীভাবে নিরাপত্তারক্ষীদের নজর এড়িয়ে মেয়েটি হোম থেকে অত রাতে বেরিয়ে পড়লেন কিংবা কেউ তাঁকে বের করে নিয়ে গেল, এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর নেই কর্তৃপক্ষের কাছেও। পাশাপাশি তদন্তে পুলিশ আরও জানতে পারে যে রাতে হোমের দায়িত্বে থাকা মহিলা ঘুমিয়ে পড়ার তত্ব দিয়ে একাধিক মিথ্যে বক্তব্য পেশ করেছেন।
নির্যাতিতা মহিলাকে চিকিৎসার পর দক্ষিণ কলকাতার অন্য একটি হোমে রাখা হয়েছে। সেখানকার নিরাপত্তাও খতিয়ে দেখেছে পুলিশ। তবে মেয়ের সঙ্গে ঘটা এমন এক ঘটনার খবর পেয়ে ভেঙে পড়েছিলেন পঞ্চসায়রের হোমে থাকা বৃ্দ্ধা মা। তিনি বারবার মেয়ের খোঁজ করেছিলেন। মেয়ের জন্য দুশ্চিন্তাতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। মেয়ে ভাল আছে, নিরাপদে আছে, একথা শুনেও নিশ্চিন্ত হতে পারেননি মা। যার জেরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে হতে বৃহস্পতিবার রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।
এদিন তাঁর মৃত্যুর খবর পৌঁছয় জাতীয় মহিলা কমিশনের কাছে। খবর পেয়ে তৎপর হয়ে ওঠেন সদস্যরা। জাতীয় মহিলা কমিশনের এক প্রতিনিধিদল চলে যায় পঞ্চসায়রের হোমটিতে। সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন তাঁরা। এদিকে, মায়ের মৃত্যুর পর দক্ষিণ কলকাতার হোম থেকে নির্যাতিতা যুবতীকে আনা হয়েছে এই হোমে। সেখানে তাঁর সঙ্গেও কথা বলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যরা। ঘটনার পর ৭২ঘণ্টারও বেশি কেটে গিয়েছে, কিন্তু এখনও ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। তাতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মহিলা কমিশনের কর্মীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.