ছবি: প্রতীকী
কৃষ্ণকুমার দাস: কোভিডে (COVID-19) কলকাতায় মৃত্যুর হার যে এক ধাক্কায় বেশ কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে তা এবার প্রকাশ্যেই স্বীকার করে নিল কলকাতা পুরসভা। এখানে শেষ নয়, ধাপা-নিমতলায় চুল্লির সংখ্যা কম থাকায় দীর্ঘক্ষণ ধরে কোভিডের দেহ শেষকৃত্যের জন্য পড়ে থাকছে, পরিজনরা সময়ে ডেথ সার্টিফিকেট হাতে পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ। বস্তুত এই কারণে এবার ধাপার পাশাপাশি উত্তর কলকাতার নিমতলা শ্মশানে আরও চারটি বৈদ্যুতিক চুল্লি চালু করছে পুরসভা। এতদিন নিমতলায় মাত্র একটি চুল্লিতেই কোভিডের দাহ চলছিল।
শুক্রবার কলকাতা পুরসভায় পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) উপস্থিতিতে এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ধাপায় চারটি, নিমতলায় চারটি এবং বিরজুনালার চুল্লিতেই আগের মতো কোভিডের দেহ দাহ করবে পুরসভা। পুরমন্ত্রীর কথায়,“এখন যেহেতু কোভিডেই বেশি মানুষ মারা যাচ্ছেন তাই চুল্লির সংখ্যা বাড়ানো হল। মৃতদেহ থেকে যেহেতু করোনা সংক্রমিত হয় না, তাই ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ৮০০ থেকে ১১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় দেহ পোড়ানো হয়, তার পর কোনও জীবাণু বেঁচে থাকতে পারে না।” এছাড়াও স্থানীয় ভিত্তিতে হাওড়া ছাড়াও খড়দহ, বারুইপুর, ক্যানিং, রাজপুরেও কোভিড দেহ দাহ পরিচালনা করবে সংশ্লিষ্ট জেলাপ্রশাসন। তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য হল, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৯৬ জন কোভিডে মারা গিয়েছেন। এর মধ্যে শুধুমাত্র কলকাতাতেই ২৮ এবং উত্তর ২৪ পরগনায় ২০ জন করোনায় (CoronaVirus) মৃত। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সাত ও হুগলিতেও ১৪ জন কোভিডের ছোবলে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গিয়েছেন। কলকাতায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯২৪ জন। স্বভাবতই উদ্বিগ্ন পুরসভা ও প্রশাসন।
কোভিডের দেহ ধাপায় দাহ করার সুবিধা দেওয়ার নাম করে স্বজনহারাদের কাছ থেকে পুরকর্মীদের একাংশ ঘুষ নিয়ে কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ছিল। অভিযোগের সুরহা করতে মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগেই সরকারি হাসপাতাল ও বাড়িতে করোনায় মৃতের নিখরচায় শেষকৃত্যের কথা ঘোষণা করেছে কলকাতা পুরসভা। এদিন পুরভবনে বৈঠক শেষে কোভিডে মৃতের ডেথ সার্টিফিকেট পাওয়া নিয়েও জটিলতা দূর করার ঘোষণা করেন পুরমন্ত্রী। ফিরহাদ বলেন,“অনেক কোভিড মৃতের দাহর সময় নিকটাত্মীয়রা নানা কারণে শ্মশানে যেতে পারছেন না। এবার শ্মশানেই হাতে হাতে ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হবে, নয়তো যোগাযোগ করলে পুরসভাই বাড়িতে ডেথ সার্টিফিকেট পৌঁছে দেবে।” কলকাতা পুরসভার তরফে কোভিডের মৃতদেহ প্লাস্টিকের পরিবর্তে কাপড়ে মুড়ে দাহর জন্য পাঠাতে রাজ্য সরকারের কাছে সুপারিশ করছে। কোভিড দেহ দাহ প্যাকিং করা নিয়ে পুরমন্ত্রীর পরামর্শ, “যেহেতু প্লাস্টিক পুড়লে যেমন বায়ুদূষণ বাড়ছে তেমনই দাহর পর তৈলাক্ত পদার্থ চুল্লিতে জমা হচ্ছে। চুল্লির পাশাপাশি পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। তাই যদিও সামান্য দাম বেশি পড়বে তবে প্লাস্টিকের পরিবর্তে কাপড়ের কোভিড দেহ মুড়ে পাঠালে খুব ভাল হয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.