ছবি: প্রতীকী
অর্ণব আইচ: ধৃত ‘জঙ্গি’র ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এক বছরে সন্দেহজনক অ্যাকাউন্ট থেকে জমা পড়ে ৮০ হাজার টাকা। কলকাতার উপকণ্ঠ থেকেই আল কায়েদার ‘টেরর ফান্ডিং’ হয়েছে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। এদিকে, আল কায়েদার সন্দেহভাজন জঙ্গিদের সঙ্গে নিষিদ্ধ সংগঠন পপুলার ফ্রন্টের কতটা যোগাযোগ রয়েছে, তা-ও জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।
মডিউল ও স্লিপার সেল তৈরির জন্য বিদেশ থেকে ভারতীয় আল কায়েদা তথা আনসারউল বাংলা টিম (এবিটি)-র নেতাদের হাতে টাকা আসত বলে খবর গোয়েন্দাদের কাছে। গত কয়েক মাস ধরেই আল কায়েদার সদস্য ফয়জল, হাসনতদের গ্রেপ্তার করে এই ব্যাপারে কিছু তথ্য পান কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের আধিকারিকরা। এই ব্যাপারে তদন্ত করেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের বাসিন্দা শিক্ষক আজিজুল হকের নাম আসে এসটিএফের হাতে। সম্প্রতি আজিজুল হক ও তার ছাত্র মনউদ্দিন ওরফে মনিরুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে এই ‘টেরর ফান্ডিং’ সংক্রান্ত তদন্ত শুরু করেন গোয়েন্দারা। এসটিএফের আধিকারিকরা জানতে পারেন যে, শিক্ষক আজিজুল হকের একটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে মথুরাপুর এলাকায় তার বাড়ির থেকে কিছুটা দূরের গ্রামে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে।
ওই ব্যাংকে গত কয়েক বছরে মাত্র কয়েক হাজার টাকা করে জমা পড়েছে। কখনও পাঁচশো, আবার কখনও বা হাজার টাকা তুলেছে আজিজুল। কিন্তু গত এক বছরে আজিজুলের অ্যাকাউন্টের চারটি লেনদেন চোখ আটকে দেয় গোয়েন্দাদের। কয়েক মাস অন্তর মোট চার বার কুড়ি হাজার টাকা করে জমা পড়েছে ওই অ্যাকাউন্টে। গোয়েন্দাদের মতে, একাধিক ‘সন্দেহজনক’ অ্যাকাউন্ট থেকে আজিজুলের অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে ওই টাকা। সেই টাকার বড় একটি অংশ আজিজুল তুলেও নিয়েছে। গোয়েন্দাদের কাছে খবর, এই ধরনের আরও কয়েকটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল ‘টেরর ফান্ডিং’-এর জন্য। জঙ্গি সন্দেহে আজিজুলের ধৃত ছাত্র মনিরুদ্দিনের মোবাইল নম্বর, পরিচয়পত্র ও নথি ব্যবহার করেই আরও কিছু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয় বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। তাঁদের মতে, মধ্য প্রাচ্য, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ হয়ে মূলত হাওলার মাধ্যমে ওই টাকা ভারতীয় এজেন্টদের কাছে আসে। এর পর তাদের অ্যাকাউন্ট থেকেই ওই টাকা পৌঁছে যায় আজিজুলদের অ্যাকাউন্টে।
গত কয়েক মাস আগে পূর্ব কলকাতায় পপুলার ফ্রন্টের অফিসে তল্লাশি চালিয়েও প্রায় ৩৫ হাজার টাকা একটি খাম থেকে উদ্ধার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। এবার ভারতীয় আল কায়েদা বা আকিস জঙ্গি সংগঠন বিদেশ থেকে আসা টাকা কীভাবে কাজে লাগাচ্ছে, তা নিয়ে চলছে তদন্ত। এই ‘টেরর ফান্ডিং’-এর টাকা অন্য কারও কাছে পৌঁছেছে কি না, সেই তথ্য জানতে আজিজুল ও মনিরুলকেও টানা জেরা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.