রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: রাজ্যে নরেন্দ্র মোদির কর্মসূচি ঘিরে বিজেপির রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মতান্তরের পর স্থগিত হয়ে গেল ব্রিগেডের সভা। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, ‘আপাতত ব্রিগেডের সভা হচ্ছে না। তার বদলে এ রাজ্যে আরও ৩টি সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।’ জানুয়ারির শেষ থেকেই শুরু হবে তাঁর কর্মসূচি। ২৮ জানুয়ারি শিলিগুড়িতে, ৩১ জানুয়ারি ঠাকুরনগরে এবং ৮ ফেব্রুয়ারি আসানসোলে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী। উল্লেখ্য, মতুয়া ভোটের লক্ষ্যে লোকসভার আগে ঠাকুরনগরে মোদিকে দিয়ে সভা করানোর ভাবনা ছিল বঙ্গ বিজেপির। সেইমতো ঠাকুরনগরে সভা হচ্ছে।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে নরেন্দ্র মোদির জনসভা করার কথা ছিল। তবে তার আগে ২৮ ও ৩১ জানুয়ারি উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গে আরও দুটি সভার পরিকল্পনাও ছিল। বঙ্গ বিজেপি চাইছিল, ৮ ফেব্রুয়ারির ব্রিগেড সভার প্রস্তুতি ভালভাবে হোক। তৃণমূলের ১৯ জানুয়ারির ব্রিগেড সমাবেশকে টেক্কা দেওয়াই তাদের লক্ষ্য। তাই ২৮ এবং ৩১-এর কর্মসূচি নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ বিজেপির রাজ্যের নেতারা। উলটোদিকে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের লক্ষ্য ছিল – বাংলায় সংগঠনকে চাঙ্গা করতে পাঁচটি জোনে পৃথক সভা করুন নরেন্দ্র মোদি। রবিবার রাত পর্যন্ত মোদির সভা নিয়ে বৈঠক চলে রাজ্য বিজেপি দপ্তরে। দুই নেতৃত্বের মধ্যে মতান্তরও হয়। শেষে হাল ছেড়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয় সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে।
[বিরোধী জোটের নেতৃত্ব দিতে পারে কংগ্রেসই, ব্রিগেডের পরদিন ঘোষণা তেজস্বীর]
সোমবার সকালে অমিত শাহ তাঁর সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন রাজ্য বিজেপিকে। ঠিক হয়েছে, আপাতত ব্রিগেড সভা বাতিল। বদলে রাজ্যে ৩টি সভা করবেন নরেন্দ্র মোদি। ২৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে কর্মসূচি। ওইদিন শিলিগুড়িতে সভা। ৩১ তারিখ মোদির সভা উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে। ৮ তারিখ আসানসোলে সভা। মার্চের শেষে রাজ্যে পরীক্ষাপর্ব মিটলে, তারপর ব্রিগেডের সভা নিয়ে নতুন করে ভাবা হতে পারে। সাংবাদিকদের একথা জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ, এ রাজ্যের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়।
বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব বারবার জোর দিচ্ছিলেন ব্রিগেডের সভায়। সেটা রাজ্য বিজেপির কাছে এক প্রেস্টিজ ফাইটের মতোই ছিল। সদ্যই ব্রিগেড ভরিয়ে জনসভা করেছে তৃণমূল। সঙ্গে ছিলেন বিজেপি বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা। ৩ ফেব্রুয়ারি সিপিএমের জনসভা ব্রিগেডে। এই পরিস্থিতিতে একই জায়গায় প্রধানমন্ত্রীর সভাতেও জনতার ঢল নামানোকেই পাখির চোখ করেছিলেন রাজ্যের নেতা, কর্মীরা। তাই ৮ তারিখের সভা আপাতত স্থগিত হওয়ায় তাঁদের মনোবল কিছুটা ধাক্কা খাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মতে, মুষড়ে পড়ার কিছু নেই। মোদি বাংলায় ৩টি সভা করবেন। আর তাতে আরও চাঙ্গা হবে দলের সংগঠন। এমনিতেই এ রাজ্যে বিজেপির সংগঠনের হাল বেশি ভাল নয়। তাই নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহকে এনে তা কিছুটা শক্তিশালী করতে বদ্ধপরিকর বিজেপি নেতৃত্ব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.