সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঘড়িতে তখন দুপুর দু’টো৷ ব্যাঙ্কের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ভদ্রলোককে জিজ্ঞেস করা হল, ক’টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তিনি৷ জানালেন সাড়ে ন’টা থেকে৷ অর্থাৎ টাকা লেনদেনের জন্য রোদের মধ্যে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা অপেক্ষারত তিনি৷ চোখে-মুখে ক্লান্তির ছাপ৷ হাতের ঘড়িটার দিকে বারবার নজর৷ দৈনন্দিন জীবনের অনেক কাজই পড়ে রয়েছে৷ ভাবছেন, কখন এই সমস্যা মিটবে আর হাঁফ থেকে বাঁচবেন৷
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেওয়া একটা সিদ্ধান্তে রাতারাতি দেশ জুড়ে তোলপাড় হয়ে গিয়েছে৷ ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট জমা ও টাকা তোলা নিয়ে চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হয়েছে সাধারণ মানুষ৷ তা সত্ত্বেও মোদির নেওয়া ঐতিহাসিক এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছেন সেই ভদ্রলোক৷ বলছেন, “এতে যদি দেশের ভাল হল, ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হয়, তবে এটুকু নাজেহাল হতে আমরা রাজি৷” তিনি একা নন৷ তাঁর পাশে দাড়িয়ে থাকা বেশ কিছু মানুষের গলাতেও একই সুর৷ তবে শুকিয়ে যাওয়া গলায় একটাই আর্জি, হাতে আর একটু সময় দিলে ভাল হত৷
লম্বা লাইনে অবশ্য মোদির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও সরব হতে দেখা গেল অনেককে৷ দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা এক মহিলা গোটা ঘটনায় বেশ বিরক্ত৷ তিনি কিছুতেই প্রধানমন্ত্রীর এমন হটকারি সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না৷ বলছেন, “মোদির সিদ্ধান্তে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে৷ কালো টাকা আটকানোর আরও অনেক পথ খোলা ছিল৷ বিশেষ করে ব্যাঙ্কের ব্যবহারে অপমানিত তিনি৷ তাঁর অভিযোগ, ব্যাঙ্ক মোটেই সাহায্য করছে না৷ ব্যাঙ্ককর্মীরা অন্তত্য খারাপ ব্যবহার করছেন তাঁদের সঙ্গে৷ অনেকে আবার জানাচ্ছেন, ব্যাঙ্কে এখনও ৫০০ এবং ২০০০ টাকার নোটই এসে পৌঁছয়নি৷ ফলে ব্যাঙ্ক শুধু টাকা জমাই নিচ্ছে৷ প্রতিশ্রুতি মতো একদিনে ১০ হাজার টাকা তোলা যাচ্ছে না৷
বুধবার হাসপাতাল থেকে রেলের টিকিট কাউন্টার, সব জায়গাতেই ভোগান্তি হয়েছে আমআদমির৷ আর এদিন ব্যাঙ্ক এবং ডাকঘরে টাকা লেনদেন করতে গিয়েও দিনভর ভুগতে হচ্ছে দেশবাসীকে৷ সবমিলিয়ে ‘দেশসেবা’র অংশীদার হয়েও সাধারণ মানুষের মন মেজাজ ভাল নেই৷ প্রশ্ন একটাই, কবে এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি মিলবে?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.