সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের স্বাধীনতার জন্য যে তরুণ ও তরুণীরা জীবন বলিদান দিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। মৃত্যুর প্রায় ৮৬ বছর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে তাঁর স্নাতক ডিগ্রির প্রতিলিপি তুলে দেওয়া হয় বাংলাদেশের হাতে। কিন্তু বিভ্রাট থেকে গেল তাঁর পদবিতে।
[ আধার নম্বর নিয়ে তথ্য ফাঁস করে দেখান, চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বিপাকে ট্রাই প্রধান ]
মাস্টারদার সঙ্গে যোগ দিয়ে দেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন প্রীতিলতা। সে সময় মহিলাদের কাছে অস্ত্র লুকনো থাকতে পারে তা প্রায় কেউ ভাবতেই পারতেন না। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে এই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছিলেন মাস্টারদা। পাশে পেয়ে গিয়েছিলেন প্রিয় ছাত্রী প্রীতিলতাকে। ১৯৩২-এ প্রীতিলতা বিষপান করে আত্মহত্যা করেন, তবু পুলিশের হাতে ধরা দেননি। তাঁর বীরত্বের কথা আজও দেশবাসী কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। মৃত্যুর এতগুলো বছর পর তাঁর স্নাতক ডিগ্রি বাংলাদেশ সরকারের হাতে তুলে দিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। তবে পদবিতে লেখা থাকল ‘ওয়াদ্দার’। সাধারণত প্রীতিলতার পদবী ‘ওয়াদ্দেদার’ বলেই সকলে জানেন। তাহলে কেন এই বিভ্রান্তি? বাংলাদেশ সরকার জানাচ্ছে, সে দেশের অফিসিয়াল রেকর্ডে ‘ওয়াদ্দেদার’ শব্দটিই লেখা হয়। স্মৃতিফলকেও তাই আছে। যদিও প্রীতিলতার ম্যাট্রিকুলেশনের সার্টিফিকেটে লেখা আছে ‘ওয়াদ্দার’। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, ‘ওয়াদ্দার’ শব্দটিই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেকর্ডে আছে। তাই সমতা রক্ষা করতে এই শব্দটিই ব্যবহার করা হয়েছে।
[ ‘গোরক্ষার নামে মুসলিম নিধন বন্ধ হোক, নাহলে দেশভাগ আসন্ন’ ]
এর আগে বীরকন্যা প্রীতিলতা ট্রাস্টের পক্ষ থেকে এই শংসাপত্রের প্রতিলিপি চাওয়া হয়েছিল। তবে ভারতের ইচ্ছে ছিল তা সরাসরি বাংলাদেশ সরকারের হাতে তুলে দেওয়া। সেইমতো ২৬ জুলাই এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হাই কমিশনের তরফে মহম্মদ মোফাখ্খারুল ইকবালের হাতে এই প্রতিলিপি তুলে দেওয়া হয়। এই ভুল তাঁরই চোখে পড়ে। যদিও এই মুহূর্তটিকে ঐতিহাসিক বলেই ব্যাখ্যা করেন তিনি।
প্রীতিলতার পদবি নিয়ে এই বিভ্রান্তি নতুন নয়। ঐতিহাসিকরা বলছেন, আসলে তাঁদের পদবী ছিল দাশগুপ্ত। ওয়াদ্দেদার এসেছে ওয়াহিদেদার উপাধি থেকে। বাংলার নবাব প্রীতিলতার পূর্বপুরুষকে এই উপাধি দিয়েছিলেন। তবে বিভিন্ন নথিতে প্রীতিলতাকে ওয়াদ্দার বা ওয়েদ্দার হিসেবে স্বাক্ষর করতে দেখা গিয়েছে। তবে কি পরিচয় গোপন করতেই বিভিন্ন পদবি ব্যবহার করতেন তিনি? এ সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে পদবিতে কী আসে যায়! প্রীতিলতার নাম আজও যে বীরত্বের ইতিহাস মনে করিয়ে দেয়, তাই-ই আগামীর পাথেয় হয়ে উঠতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.