গৌতম ব্রহ্ম: মাকড়সাও গিরগিটির মতো রং বদলায়! শিকার ধরার সময় এক রকম, ভয় পেলে আরেক রকম। আবার উদরপূর্তির সময় আলাদা রূপ। একই অঙ্গে হরেক রং। এমনই বহুরূপী আয়না মাকড়সা বা ‘মিরর স্পাইডার’ লেন্সবন্দি হল সোনারপুরের একটি জঙ্গলে। টানা ন’মাসের চেষ্টায় এই অসাধ্যসাধন করেছেন যিনি, তিনি কোনও পেশাদার পতঙ্গবিদ নন, প্রযুক্তিবিদ। নাম ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায়। জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরে বিরল মাকড়সা লেন্সবন্দি করাই ইন্দ্রনীলের নেশা।
[ ছেলেধরা সন্দেহে শহরে জোড়া গণপিটুনি, উদ্বিগ্ন প্রশাসন]
বিশ্বের প্রথম দশ বিস্ময় মাকড়সার তালিকাভুক্ত এই মিরর স্পাইডার। কিন্তু সিঙ্গাপুর ছাড়া অন্য কোথাও একে লেন্সবন্দি করা যায়নি। এবার বাংলা তথা ভারতে লেন্সবন্দি হল। সামনে-পিছনে-পাশে, সব দিক থেকেই এই আটপেয়ের ছবি তুলেছেন ইন্দ্রনীল। কিছুদিনের মধ্যেই একটি ভুবনবিখ্যাত ওয়াইল্ড লাইফ ম্যাগাজিনে ইন্দ্রনীলের তোলা আটটি ছবি প্রকাশিত হতে চলেছে। গত এপ্রিলে প্রথম এই মিরর মাকড়সার দেখা পান ইন্দ্রনীল। এরপর টানা ন’মাস ধরে চলেছে লুকোচুরি। ঝড়-জল-বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মাকড়সার পিছনে পড়ে ছিলেন তিনি। তোলেন কয়েকশো ছবি। ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, ‘অক্টোবর পর্যন্ত মিরর মাকড়সার সঙ্গে আমার অভিসার চলেছে। আমি এমন কিছু রং পেয়েছি যা আজ পর্যন্ত লেন্সবন্দি হয়নি। এটাই সবচেয়ে বড় সাফল্য।’
এর আগে বারুইপুরের একটি লিচু বাগান থেকে ‘লুকাস দ্য স্পাইডার’-কে লেন্সবন্দি করেন ইন্দ্রনীল। সেবারও রেকর্ড করেছিলেন তিনি। রেকর্ড হল এবারও। ইন্দ্রনীল জানালেন, এর আগে সিঙ্গাপুর থেকে মিরর মাকড়সাকে লেন্সবন্দি করতে সক্ষম হন এক ন্যাচারালিস্ট। কিন্তু রং-রূপের বৈচিত্রে ইন্দ্রনীলের ছবি সবাইকে টেক্কা দিয়েছে। খালি চোখে দেখলে এই মাকড়সাকে শিশির বিন্দু বা জলকণা বলে মনে হবে। ম্যাগনিফায়িং গ্লাসে ধরা পড়ে আসল চেহারা। মনে হবে, হরেক রঙের টুকরো কাচে তৈরি করা হয়েছে এই আটপেয়েকে। আসলে গুয়ানাইন নামে এক ধরনের রাসায়নিক নিঃসরণ করে এই মাকড়সা। যা রুপোর মতো এক আস্তরণ তৈরি করে। যা স্বচ্ছ কাচের মতো দেখতে। সোনারপুরের নরেন্দ্রপুরের একটি জঙ্গলে কচুপাতার নিচে প্রথম এর দেখা পান ইন্দ্রনীল। খসখসে পাতাই প্রথম পছন্দ এদের।
[ জইশ জঙ্গিদের সমর্থনে ভারত-বিরোধী পোস্ট, অভিযোগ দায়ের লালবাজারে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.