গোবিন্দ রায়: তিন মাস ধরে নিখোঁজ দশম শ্রেণির ছাত্রী। অভিযোগ, তাকে অপহরণ করে বিয়ে করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, নাবালিকাকে বিয়ের আগে জোর করে ধর্মান্তকরণ করা হয় বলেও অভিযোগ। এখানেই শেষ নয়, ওই নাবালিকাকে সাবালিকা প্রমাণ করতে জন্ম শংসাপত্র থেকে শুরু করে যাবতীয় নথি জালিয়াতির মতো অভিযোগে একটি মামলা উঠেছে কলকাতা হাই কোর্টে। ঘটনার সমস্ত অভিযোগ পাওয়া সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় আদালতের কোপে পিংলা থানার পুলিশ।
এক সপ্তাহের মধ্যে ওই নিখোঁজ নাবালিকাকে উদ্ধার করে সিডব্লিউসির হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী ৬ অক্টোবর মামলার পরবর্তী শুনানি। আদালতের আরও নির্দেশ, নাবালিকার পরিবারকে সম্পূর্ণ পুলিশি নিরাপত্তা দিতে হবে। নাবালিকা ও তার পরিবারের যদি কোনও ক্ষতি হয়, তার জন্য দায়ী থাকবে পিংলা থানার পুলিশ।
মামলাকারীর আইনজীবী তন্ময় বসুর অভিযোগ, পিংলার অঞ্চল সভাপতির ভাগ্নে অশিউর রহমানের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। তিনি জানান, পিংলা থানা এলাকার বাসিন্দা বছর পনেরোর নাবালিকা যখন রোজ স্কুলে যেত তখন প্রায়শই তাকে উতক্ত করত অশিউর। বেশ কয়েকবার তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। স্থানীয় অঞ্চল সভাপতির ভাগ্নের হাত থেকে মেয়েকে বাঁচাতে বাধ্য হয়েই তাকে পিংলা থেকে সিকিমে তার মামার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় পরিবার। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি।
অভিযোগ, সিকিম থেকেই ওই নাবালিকাকে অপহরণ করা হয়। গত ১৮ জুন অপহরণের অভিযোগ আনা হয় পরিবারের তরফে। কিন্তু তিন মাসেও অপহৃত মেয়েকে উদ্ধার করতে না পেরে বাধ্য হয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন নাবালিকার বাবা। মামলাতেই হাই কোর্টের কোপে পড়তে হয় পিংলা থানার পুলিশকে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, “পুলিশ কি কাউকে আড়াল করছে ! নাকি কাউকে বাঁচাতে চুপ রয়েছে ! না হলে, তিন মাস কোনও তদন্ত হয়নি কেন!” আদালতে পুলিশের নতুন তথ্য জমা পড়তেই চাঞ্চল্য ছড়ায়। দেখা যায়, পনেরো বছরের নাবালিকাকে সাবালিকা করতে তার জন্মশংসাপত্র থেকে শুরু করে যাবতীয় নথি জালিয়াতি করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.