বাংলার কোচ লক্ষ্ণীরতন শুক্লা (ফাইল ছবি)।
কৃষ্ণকুমার দাস: রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা (Laxmiratan Shukla) । ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর পদ-সহ তৃণমূলের অন্যান্য পদ থেকেও অব্যাহতি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইস্তফাপত্র পাঠালেন তিনি। লক্ষ্মীরতন জানিয়েছেন যে তিনি রাজনীতি ছেড়ে আপাতত ক্রিকেটে মন দিতে চান। তাই মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে চাইছেন না। তবে তৃণমূল বিধায়ক হিসেবে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন। লক্ষ্মীরতনের চিঠির বয়ান দেখে তাঁর ইস্তফাপত্র গৃহীত হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। পাশাপাশি, তাঁকে ঘিরে তৈরি হওয়া দলবদলের জল্পনা উড়িয়ে লক্ষ্মীরতন এই বিষয়টিও স্পষ্ট করে দেন যে অন্য কোনও দলে তিনি যেতে চান না।
২০১৬ সালে রাজ্যের ক্ষমতায় দ্বিতীয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার আসার পর ক্রীড়াদপ্তরের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান হাওড়া উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্লা। দক্ষতার সঙ্গেই সেই কাজ চালাচ্ছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার। পুজোর আগে সংগঠনে রদবদলের সময়ে তাঁকে হাওড়ার জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বিধানসভা ভোটের আগে যখন ঘাসফুল শিবিরে ভাঙন ক্রমশই বাড়ছে, শুভেন্দু অধিকারীর মতো হেভিওয়েট ‘মন্ত্রী’ সমস্ত পদ ছেড়ে পদ্মশিবিরে পা রেখেছেন, দলবদল করেছেন আরও বেশ কয়েকজন বিধায়ক, সেই আবহেই লক্ষ্মীরতনের ইস্তফাপত্র যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী।
নবান্ন সূত্রে খবর, ইস্তফাপত্রে লক্ষ্মীরতন শুক্লা জানিয়েছেন যে তিনি রাজনীতির দায়িত্ব থেকে ধীরে ধীরে অব্যাহতি নিয়ে খেলার জগতে ফিরে যেতে চান। তাই সংগঠনের দায়িত্ব অর্থাৎ হাওড়া টাউন তৃণমূলের সভাপতির পদ থেকেও সরে দাঁড়াতে চান লক্ষ্মীরতন। যদিও শুভেন্দুর পথে হেঁটে তিনিও বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন, এই জল্পনা তৈরি হচ্ছিল ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীকে ঘিরে। সেসব জল্পনা উড়িয়েছেন লক্ষ্মীরতন নিজেই। হাওড়া টাউনের তৃণমূল চেয়ারম্যান অরূপ রায় অবশ্য বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা জারি রাখলেন। তাঁর কাছে নাকি লক্ষ্মীরতনের ইস্তফা নিয়ে কোনও খবরই নেই বলে জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যমে। তবে ভোটের আগে তিনি সরে যাওয়ায় হাওড়ার সংগঠনে খানিকটা প্রভাব পড়বে বলেও মনে করেন অরূপ রায়।
লক্ষ্মীরতন শুক্লার পদত্যাগ নিয়ে যথারীতি সরগরম বঙ্গের রাজনৈতিক মহল। এ নিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ”ওদের দলে তো ভাঙন শুরুই হয়েছে। আমাদের উপর হামলা করতে গিয়ে নিজেদের লোকজনকেই হারাচ্ছে।” বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, ”মুখ্যমন্ত্রীর এবার বোঝা উচিত যে ওঁর সহকর্মীরাই ওঁর উপর আর ভরসা রাখছেন না।” প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী অবশ্য তাঁকে কংগ্রেসে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ”যাঁরা তৃণমূলে কাজ করতে পারছেন না, আবার বিজেপিতেও যেতে চাইছেন না, তাঁদের বলি, কংগ্রেসের দরজা সারাদিন, সারারাত খোলা। আসুন, যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে গ্রহণ করা হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.