Advertisement
Advertisement
sauce

সিল করা সসের বোতলে গিজগিজ করছে জীবাণু, কলকাতা পুলিশের হাতে এল চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট

জানেন এধরনের সস কী প্রভাব ফেলে শরীরে?

Microbes found in sauce bottle in Kolkata, factory manager arrested | Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:June 22, 2022 2:20 pm
  • Updated:June 22, 2022 6:47 pm  

অর্ণব আইচ: টম্যাটো সস ছাড়া কাটলেট মানে নীরস ব্যাপার। চাউমিনটাও যেন জমতে চায় না চিলি সস ছাড়া। আর সোয়া সস ছাড়া যে মোমো একটু পানসে লাগে, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু সিল করা বোতলের সসেই ঘনাচ্ছে বিপদ। তাতে গিজগিজ করছে জীবাণু। চিলি সস, সোয়া সস থেকে শুরু করে টম্যাটো সসে ভরতি ব্যাকটেরিয়া। কোথাও তিনগুণ আবার কোথাও বা আটগুণ বেশি। সম্প্রতি ল্যাবরেটরি থেকে কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) হাতে আসা রিপোর্টে মিলেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, পূর্ব কলকাতার একটি সসের কারখানায় মিলেছে এই জীবাণু। বাকি কারখানাগুলিতেও এই অবস্থা হতে পারে, এমনই শঙ্কা পুলিশের।

পুলিশ জানিয়েছে, সূত্রের খবর মেনে পূর্ব কলকাতার ট্যাংরার পুলিন খটিক রোডে একটি সসের কারখানায় হানা দেয় কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট শাখা। প্রথমেই গোয়েন্দারা দেখতে পান যে, অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সস। সেগুলি ভরতি করা হচ্ছে ড্রামে। অভিযোগ, এমনিতেই বহু সসের (Sauce) কারখানা টম্যাটো সস বা চিলি সস কুমড়ো দিয়ে তৈরি করে। সেগুলি ‘ভেজাল’ হলেও অনেক সময় অস্বাস্থ্যকর হয় না। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি না মেনে কারখানায় তৈরি হওয়া ওই সস দেখে গোয়েন্দাদের সন্দেহ হয়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: SSC নিয়োগ দুর্নীতি: নির্দেশ সত্ত্বেও মেলেনি রিপোর্ট, এবার এসএসসি চেয়ারম্যানকে তলব হাই কোর্টের]

একেকটি জারে ২৫ কিলো করে ১৪ জার টম্যাটো সস, ১০ জার রেড চিলি সস, ১২ জার গ্রিন চিলি সস, চার জার টম্যাটো চিলি সস, চার জার সোয়া সস, দু’জার মোমো সস, চার জার কাসুন্দি উদ্ধার করেন গোয়েন্দারা। ওই সসের নমুনাগুলি পাঠানো হয় সরকারি পরীক্ষাগারে। ওই নমুনাগুলির ‘অ্যারোবিক প্লেট কাউন্ট’ করা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনও খাদ্যের নমুনায় কতটা জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়া রয়েছে, তা জানার জন্য উৎকৃষ্ট পদ্ধতি এটি। সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের ইবি’র হাতে এসে পৌঁছয় সেই রিপোর্ট। ওই রিপোর্টে নমুনাগুলিকে ‘হাই অ্যারোবিক প্লেট কাউন্ট’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সাধারণত সসে হাজার ইউনিট পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। কিন্তু এর থেকে বেশি জীবাণু থাকা শরীরের পক্ষে খারাপ। পরীক্ষাগারের রিপোর্ট অনুযায়ী, হাজারের জায়গায় টম্যাটো সসে রয়েছে আট হাজার ইউনিট ব্যাকটেরিয়া। এ ছাড়াও গ্রিন চিলি সসে চার হাজার ইউনিট, রেড চিলি সসে তিন হাজার ইউনিট, সোয়া সসে ২ হাজার ৩০০ ইউনিট ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। কাসুন্দিতেও পাঁচ হাজার ইউনিট ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। এর সঙ্গে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই সস মানুষের খাওয়ার অযোগ্য ও ক্ষতিকর।

[আরও পড়ুন: ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল আফগানিস্তান, মৃত্যু অন্তত ২৫৫ জনের]

এই রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর ইবি’র গোয়েন্দারা ট্যাংরার ওই কারখানায় তল্লাশি চালান। কারখানা থেকে দোকানে পৌঁছনোর আগেই প্রায় ২৩০ কার্টন বিভিন্ন ধরনের ‘জীবাণুযুক্ত’ সস ফের উদ্ধার হয়। ওই কারখানার ম্যানেজারকেও গ্রেপ্তার করেন গোয়েন্দারা। প্রাথমিকভাবে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, সস তৈরির পদ্ধতি অস্বাস্থ্যকর। যে পাত্রগুলি ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলি অত্যন্ত অপরিষ্কার। সেগুলিতে জমে রয়েছে পুরনো সস। তাতে বাসা বাঁধছে জীবাণু। নতুন সসের সঙ্গে গিয়ে সেই জীবাণু মিশছে। এর পর বোতলজাত হয়ে সেই জীবাণুযুক্ত সস পোরা হচ্ছে কার্টনে। তা পৌঁছে যাচ্ছে কলকাতা ও অন্যান্য জেলার দোকানে। বিভিন্ন রেস্তোরাঁ ও খাবার স্টলে খাবার সঙ্গে মেশানো হয় ওই সস।

বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে, অনেক সময়ই পেট খারাপ হলে খাবারের মানের উপর আঙুল ওঠে। কিন্তু সসের জন্য যে পেট খারাপ হচ্ছে, তা বুঝতে পারেন না অনেকেই। কলকাতার আশপাশের জেলায় এই ধরনের সসের একাধিক কারখানা রয়েছে। এবার কলকাতায় অন্যান্য সসের কারখানাগুলি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সসে জীবাণুর পরিমাণ বেশি থাকলে কী হয়? সেই প্রশ্নের উত্তরে ভাইরোলজিস্ট ডা. সিদ্ধার্থ জোয়ারদার জানান, “সসে অতিরিক্ত পরিমাণে এই ধরনের ব্যাকটিরিয়া নিউরোলজিকাল সিস্টেম অথবা ভাসকুলার সিস্টেম কিংবা কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমে প্রভাব ফেলে। ব্যাকটিরিয়া অন্ত্রের কোষে আঘাত করলে ডায়েরিয়া অবশ্যম্ভাবী।” পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. অনির্বাণ দলুই জানাচ্ছেন, “পাকা টোম্যাটো দিয়ে তৈরি হওয়া সসে লাইকোপেন থাকবেই। সসে অ্যাসিডিটি কনটেন্ট কতটা রয়েছে সেটাও দেখে নিতে হবে। অ্যাসিডিটি কনটেন্ট কম থাকলে মাইক্রোবস তৈরি হবে সসে। তা থেকে পেট খারাপ হবে।”

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement